সিলেটে এলজিইডি’র টেন্ডারে অংশ নেবেন না ঠিকাদাররা

রেট শিডিউল সংশোধন না করলে আগামী অক্টোবর পর্যন্ত সিলেট বিভাগে এলজিইডি’র টেন্ডারে অংশ নেবেন না ঠিকাদাররা। বুধবার (১৪ সেপ্টেম্বর) এলজিইডি সিলেট অঞ্চলের ঠিকাদারদের এক যৌথ সভায় এ কথা জানানো হয়েছে।

এলজিইডি কন্ট্রাক্টর ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন সিলেট জেলা শাখার উদ্যোগে বুধবার দুপুরে নগরীর একটি অভিজাত হোটেলে এ সভার আয়োজন করা হয়। এতে সিলেট জেলা ছাড়াও সুনামগঞ্জ, হবিগঞ্জ ও মৌলভীবাজারের ঠিকাদাররা উপস্থিত ছিলেন।

সভায় ঠিকাদার নেতৃবৃন্দ বলেন, করোনা মহামারীকাল থেকে ঠিকাদাররা এক ক্রান্তিকাল অতিক্রম করছেন। করোনার সময়ও ঠিকাদাররা সরকারের পক্ষ থেকে কোনো প্রণোদনা পাননি। বৈশ্বিক অর্থনৈতিক সংকটের অজুহাতে বর্তমানে চলমান উন্নয়ন প্রকল্পের কাজের বিল প্রদানে বিলম্ব করা হচ্ছে। পরপর দুইবারের ভয়াবহ বন্যায় চলমান উন্নয়ন প্রকল্পের অনেক ক্ষতি হয়েছে। নির্মাণাধীন অনেক রাস্তা বন্যার ঢলে ভেসে গেছে ও নষ্ট হয়েছে। নির্মাণ ও মেরামত প্রকল্পের আওতায় ক্ষতিগ্রস্ত রাস্তাগুলোর পুনঃপ্রাক্কলনের জন্য আবেদন করা হলেও কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে সাড়া মিলেনি। এতে চলমান অনেক প্রকল্প সমাপ্ত করতে ঠিকাদাররা লোকসানে পড়ে পুঁজিও খুইয়েছেন।

সভায় তারা আরও বলেন, ২০২২-২০২৩ অর্থবছরের শুরুতে এলজিইডি’র নতুন রেট শিডিউলে আমরা আশাহত হয়েছি। কারণ সরকার কর্তৃক ঘোষিত রেট শিডিউল বাস্তবতার সঙ্গে অসঙ্গতি ও অসামঞ্জস্যপূর্ণ। রেট শিডিউলে কাজ করলে ঠিকাদারদের রডের দাম কেজি প্রতি ২৩ টাকা, সিমেন্টে দাম প্রতি ব্যাগে ১৪৫ টাকা, ইটের দাম প্রতিটিতে ৪ টাকা, বিটুমিনের প্রতি কেজিতে ১৫ টাকা ও ডিজেল প্রতি লিটারে ২৯ টাকা নিজ পকেট থেকে ভুর্তকি দিতে হবে। এতে টেন্ডারে অংশ নিলে লোকসান হবে। এ কারণে এলজিইডি’র সিলেট জেলার ঠিকাদাররা গত ২৫ আগস্ট সভা করে সিদ্ধান্ত নিয়ে ৩০ আগস্ট থেকে সিলেটে সকল ধরনের টেন্ডারে অংশগ্রহণ থেকে বিরত থাকছেন। পাশাপাশি সিলেট বিভাগের সুনামগঞ্জ, হবিগঞ্জ ও মৌলভীবাজারের ঠিকাদার ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিশেনের নেতৃবৃন্দও সিদ্ধান্ত নিয়ে অনুরূপভাবে টেন্ডারে অংশ নিচ্ছেন না।

সভায় ঘোষণা দেওয়া হয়, নতুন রেট শিডিউল সংশোধন না করলে আগামী ৩০ অক্টোবর পর্যন্ত সিলেট বিভাগের ঠিকাদাররা এলজিইডি’র সকল টেন্ডারে অংশ নেওয়া থেকে বিরত থাকবেন।

সভায় সভাপতিত্ব করেন সিলেট জেলা কন্ট্রাক্টর ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি রাখাল দে। সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক শামীম আহমদের পরিচালনায় বক্তব্য দেন, সুনামগঞ্জ জেলা কন্ট্রাক্টর ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি নুরুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক শংকর কুমার দেব, হবিগঞ্জ জেলা কন্ট্রাক্টর ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের সিনিয়র যুগ্ম-আহ্বায়ক নুরুজ্জামান চৌধুরী, সদস্য সচিব গোলাম ফারুক, মৌলভীবাজার জেলা কন্ট্রাক্টর ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের প্রতিনিধি মহিউদ্দিন ফহিম চৌধুরী, তাজুল নোমান, সিলেট জেলা কন্ট্রাক্টর ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের সাংগঠনিক সম্পাদক এনায়েত আহমদ মনি, প্রধান উপদেষ্টা শিবব্রত ভৌমিক চন্দন, উপদেষ্টা গোলাম কিবরিয়া প্রমুখ।