মৌলভীবাজার সদরে রমজানে মাসে খাওয়ার হোটেল খোলা রাখায় একটি হিন্দু হোটেলের কর্মচারী-মালিকদের হুমকি, ধামকির অভিযোগ ওঠেছে এক ওয়ার্ড কাউন্সিলরের বিরুদ্ধে।
আজ মঙ্গলবার (২৮ মার্চ) দুপুর সাড়ে বারোটার দিকে সদর উপজেলার পুরাতন হাসপাতাল রোডে নগর রেস্টুরেন্ট নামক একটি খাবার হোটেলে এ ঘটনা ঘটে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সাড়ে বারোটার দিকে ৫ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ফয়ছল পৌরসভার গাড়ি নিয়ে ওই দোকানের সামনে এসে দোকানিকে ধমকাতে থাকেন। হোটেলটি শুধুমাত্র হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকেদের জন্য খোলা রাখা হয়েছে বলার পরও কাউন্সিলর দোকানের মালিক-কর্মচারীকে দোকান তুলে দেওয়ার হুমকি দেন। তাছাড়া, দোকানের চেয়ারসহ বিভিন্ন জিনিস পৌরসভার গাড়িতে করে নিয়ে যাবেন এমন হুমকিও দেন ওই কাউন্সিলর।
ঘটনার ব্যাপারে জানতে চাইলে দোকান মালিক সুজন দেবের ছোট ভাই বলেন, রমজানে অন্যান্য দোকানের মতো আমাদের দোকানেও পর্দা লাগিয়ে বেচাবিক্রি করি। তাছাড়া আমাদের হোটেলটি একটি হিন্দু হোটেল লেখাও আছে। এসব দেখার পরও তিনি কারণ ছাড়াই আমাদেরকে দোকান বন্ধ করার হুমকি দেন। দোকান তুলে দিতে বলেন।
এসময় রমজান মাসে দোকানদারি করলে ওই কাউন্সিলর দোকান মালিককে দেখে নিবেন বলেও হুমকি দেন।
নাম প্রকাশ করতে অনিচ্ছুক পাশের দোকানের একজন ব্যবসায়ী জানান, কোনো দোষ, কারণ ছাড়াই কাউন্সিলর এসে দোকানে হামলা চালান। রমজানে দোকানদারি করা যাবে না বলে ধামকি দেন। অথচ দোকানটি একটি হিন্দু দোকান। আর তারা পর্দা টানিয়েই দোকানদারি করে আসছিলেন।
দোকান মালিক সুজন দেব বলেন, এখানে অনেকদিন ধরে ব্যবসা করে আসছি। কখনো এরকম হয়নি। তিনি এসে আমার দোকানের চেয়ার কেড়ে নিতে চান, হুমকি দেন। কোনো দোষ ছাড়াই কাউন্সিলর আমার দোকানে হুমকি-ধামকি ছাড়াই। আমি প্রশাসনের কাছে এর সুষ্ঠু বিচারের দাবি জানাই।
ঘটনার ব্যাপারে রাতে ৫ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ফয়ছল আহমদের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, রমজানের পবিত্রতা রক্ষায় এলাকাবাসী মেয়র বরাবরে একটি দরখাস্ত করে। এর প্রেক্ষিতে শুধু পর্দা ও আলাদা ব্যানার লাগিয়ে ব্যবসা পরিচালনার ব্যাপারে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। কোন ধরণের হুমকি-ধ্মকি দেয়া হয়নি।
তবে সরেজমিন দেখা যায়, ওই দোকানে ব্যানার লাগানোই ছিল। তাতে লেখা ছিল, ‘নগর রেস্টুরেন্ট, শুধুমাত্র হিন্দু ধর্মীয়দের জন্য, হোটেল খোলা’।
এদিকে মঙ্গলবার দুপুরের ঘটনাটিকে ঘিরে ওই এলাকায় চাপা ক্ষোভ বিরাজ করছে।