প্রথম ম্যাচে ভারতের বিপক্ষেই হোঁচট খেয়ে টুর্নামেন্ট শুরু করেছিল শ্রীলঙ্কা। তবে পরে আবার তারাই বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের বিপক্ষে শ্বাসরুদ্ধকর ম্যাচ জিতে পঞ্চমবারের মতো এশিয়া কাপের ফাইনালে নাম লেখালো। আগের চারবার ফাইনাল খেললেও একবারও শিরোপা ছোঁয়া হয়নি লঙ্কানদের। অন্যদিকে আগের সাত আসরের মধ্যে ছয়বারই শিরোপার জিতেছে হারমানপ্রীতের দল। এমন অসম সমকীরণ সামনে রেখেই শনিবার (১৫ অক্টোবর) অষ্টম আসরের ফাইনালে মাঠে নামছে ভারত ও শ্রীলঙ্কা।
সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে বেলা দেড়টায় দুই দলের শিরোপার লড়াই শুরু হবে। ম্যাচটি সরাসরি সম্প্রচার করবে স্টার স্পোর্টস।
ভারতের বিপক্ষে প্রথম ম্যাচে বিধ্বস্ত হওয়া লঙ্কানরা একটু একটু করে নিজেদের গুছিয়ে নিয়েছেন। ফাইনালের আগে শেষ বল পর্যন্ত লড়াইয়ের মানসিকতাই এগিয়ে রাখছে দলটিকে। মূলত উপভোগের মন্ত্রে দীক্ষিত হয়েই সাফল্য পাচ্ছে তারা। সংবাদ সম্মেলনেও লঙ্কান অধিনায়ক চামারি আতাপাত্তু এমনটাই বলে গেছেন, ‘১৪ বছর পর আমরা ফাইনাল খেলছি। ভারত নিঃসন্দেহে ফেভারিট দল। আমরা ভালো ক্রিকেট খেলতে চাই। আমি সবসময় ইতিবাচক খেলার চেষ্টা করি। এটা আমার গেমপ্ল্যান। আমার দলকেও একই কথা বলি, ইতিবাচক খেলতে। যারা ভালো ক্রিকেট খেলবে, ভুল কম করবে, তারাই জিতবে।’
এদিকে গ্রুপ পর্বে বাংলাদেশ এবং সেমিফাইনালে পাকিস্তানের সাথে দারুণ লড়াই করেছে শ্রীলঙ্কা। লঙ্কানদের এই লড়াই শিক্ষনীয় বলে মন্তব্য করেছেন ভারতীয় অধিনায়ক হারমানপ্রীত কৌর। তার এই কথাতেই বোঝা যায় সপ্তম শিরোপার সন্নিকটে দাঁড়িয়ে থেকে মোটেও লঙ্কানদের হালকা ভাবে নিচ্ছেন না ভারত, ‘আমরা তাদের দলে অনেক ইতিবাচক দিক দেখেছি। বিশেষ করে তারা শেষ বল পর্যন্ত হাল ছাড়ে না। তাদের লড়াই দেখাটাও দারুণ ব্যাপার। যখন যারা ভালো ক্রিকেট খেলে, তাদের কাছ থেকে আপনি অবশ্যই শিখতে চাইবেন। আমরা অবশ্যই আমাদের সেরা ক্রিকেট খেলতে মুখিয়ে আছি।’
শ্রীলঙ্কাকে ভারত যতোই সমীহ করুক না কেন। পরিসংখ্যান বলছে লঙ্কানদের চেয়ে যোজন যোজন এগিয়ে তারা। ২৩ ম্যাচের মধ্যে ১৭ ম্যাচই জিতেছে ভারত। মাত্র চারটি জয় এসেছে শ্রীলঙ্কার পকেটে। ভারতের বিপক্ষে সর্বশেষ ৮ বছর আগে জিতেছিল লঙ্কানরা। পরিসংখ্যান কঠিন হলেও সাম্প্রতিক পারফরম্যান্স ও সাবেক দুই ক্রিকেটার কুমারা সাঙ্গাকারা ও লাসিথ মালিঙ্গার শুভকামনা উজ্জিবিত করছে পুরো দলকেই। চামিরা বলেছেন, ‘সবকিছুই কঠোর পরিশ্রমে হয়। পুরুষ দলের এশিয়া কাপ জেতাটা ক্রিকেট-জাতি হিসেবে আমাদের জন্য দারুণ ছিল। দেশও এই মুহূর্তে সমস্যায় আছে, এই অর্জন আমাদের আনন্দিত করেছে। আমরাও আগামীতে শ্রীলঙ্কানদের মুখে হাসি ফোটাতে চাই।’
চায়ের শহরে নয়নাভিরাম স্টেডিয়ামে বিকাল নাগাদই নিশ্চিত হয়ে যাবে অষ্টম আসরের চ্যাম্পিয়ন কারা হচ্ছে। পুরো টুর্নামেন্টে যেমন ক্রিকেট খেলেছে, তাতে করে চামিরার দলকেও পিছিয়ে রাখারও সুযোগ নেই। হয়তো চা বাগান ঘেরা লাক্কাতুরায় অবস্থিত এই স্টেডিয়ামেই ইতিহাস গড়বে লঙ্কান মেয়েরা। আগের চারবারে যা হয়নি, ১৪ বছর পর ফাইনালে এসে পঞ্চমবারে ভিনদেশে এমন কিছু অর্জনের অপেক্ষায় হয়তো পুরো দল! সেটি না হলে বাংলাদেশের কাছে ২০১৮ এশিয়া কাপের মুকুট হারানো ভারত, মুকুট পুনরুদ্ধার করে ৮ বারে সপ্তম শিরোপা জয়ের আনন্দে মাতবে সিলেটের সবুজ চত্বরে।