চুরি হওয়া শতাধিক মোবাইল ফোন উদ্ধারের পর তা পুলিশের কাছে জমা না দিয়ে নিজেদের জিম্মায় রেখে দিয়েছিলো বগুড়ার মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর। এর পাঁচ দিন পর সান্তাহারে এই অধিদপ্তরের কার্যালয় থেকে ১০৭টি মোবাইল ফোন উদ্ধার করে নওগাঁ জেলা পুলিশ।
শুক্রবার মধ্যেরাতে বগুড়ার আদমদিঘী উপজেলার সান্তাহার মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর থেকে এসব মোবাইল ফোন উদ্ধারের পর পুরো ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু হয়েছে বলে জানিয়েছেন নওগাঁ সদর থানার ওসি নজরুল ইসলাম জুয়েল।
ওসি নজরুল ইসলাম আরও জানান, ১০৭টি স্মার্ট ফোন উদ্ধারের পর পাঁচদিনেও সান্তাহার মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের কর্তকর্তারা থানায় জমা না দিয়ে কি ব্যবস্থা নিয়েছে এবং কি উদ্দ্যেশে রেখে দিয়েছিলেন সেই বিষয়টিও ক্ষতিয়ে দেখা হচ্ছে।
অধিদপ্তরের কর্তকর্তারা কেউ অসৎ উদ্দ্যেশে কেউ এই কর্মকান্ডের সাথে জড়িত থাকলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
এদিকে, মোট অর্ধকোটি টাকা মূল্যের মোবাইল ফোনগুলো উদ্ধার করলেও জড়িত কাউকে আটক না করে ঘটনাটি ধামাচাপা দেওয়ার জোর প্রচেষ্টা চালাচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে নওগাঁ পুলিশের বিরুদ্ধে।
জানা যায়, নওগাঁ পুরাতন বাস স্টান্ড এলাকায় স্যামসাং ও ভিবো মোবাইল ফোনের শোরুম থেকে গত ২৫ জুন (শনিবার) বৃহস্পতিবার রাতে প্রায় কোটি টাকা মূল্যের ১৪০টি স্মার্ট মোবাইল ফোন চুরি হয়ে যায়। ঘটনায় পরদিন নওগাঁ সদর মডেল থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়। চুরি যাওয়া মোবাইল উদ্ধারে তদন্তে মাঠে নামে পুলিশ। পরদিন ২৬ জুন (রবিবার) দুপূরে সান্তাহার মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ কার্যালয়ের একটি দল সান্তাহারের পোওতা রেলগেট এলাকায় মাদকদ্রব্য উদ্ধারের জন্যে বিভিন্ন যানবাহনে তল্লাশি শুরু করে। এ সময় একটি যাত্রীবাহী বাস থেকে প্রায় ৬০ লাখ টাকা মূল্যের ১০৭টি মোবাইল ফোন উদ্ধার করে সান্তাহার মাদকদ্রব্য অধিদপ্তরের নিয়ে যায়।
এরপর আইনগত কোন ব্যবস্থা না নিয়ে উদ্ধারকৃত মোবাইল মাদকদ্রব্য অফিসে রেখে দেয়া হয়। এদিকে ঘটনাটি জানাজানি হলে নওগাঁ জেলার সদর সার্কেল ও সদর থানা ওসি নেতৃত্বে ১ জুলাই (শুক্রবার) মধ্যে রাতে সান্তাহার মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরে অভিযান পরিচালনা করা হয়। এ সময় সান্তাহার মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের সার্কেল লুৎফর রহমানের অফিস থেকে স্মার্ট ফোনগুলো উদ্ধার করে নওগাঁ পুলিশ।
চুরি হওয়া ফোনগুলোর শোরুমের মালিক মেহেদী হাসান বলেন, শোরুমের গেটের তালা কেটে মোবাইল ফোন চুরি করে নিয়ে যাওয়ার ঘটনায় মামলা দায়ের করা হলে গত শুক্রবার রাতে নওগাঁ পুলিশ আদমদীঘির সান্তাহার থেকে উদ্ধার করেন। তবে বিস্তারিত কিছু জানানো হয়নি ।
এ ব্যাপারে সান্তাহার মাদকদ্রব্য অধিদপ্তরের সার্কেল লুৎফর রহমানের সাথে ফোনে কথা বলতে চাইলে গণমাধ্যমকর্মীর পরিচয় পাওয়ার সাথে সাথে সংযোগ বিছিন্ন করে দেন। পরে একাধিবার যোগাযোগ করা হলেও সেল ফোন রির্সিভ করেননি তিনি। বগুড়া মাদকদ্রব্য অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক রাজিউর রহমানের সেল ফোনে একাধিবার যোগাযোগ করা হলেও সেল ফোন রির্সিভ করেননি।
নওগাঁ সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোহাম্মদ রকিবুল হাসান ইবনে রহমানকে প্রশ্ন করতেই সেলফোনের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেন। এরপর একাধিকবার তার সাথে যোগাযোগ করা হলো তিনি ফোন রির্সিভ না করায় কোন বক্তব্য পাওয়া যায়নি।