সিলেটের সীমান্তবর্তী কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার প্রশাসনের কোয়ার্টার থেকে সরকারি একটি মোটরসাইকেলসহ এক রাতে তিনটি মোটরসাইকেল চুরির হয়েছে। উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় মোটরসাইকেল চুরির পাশাপাশি নানা ধরণের চুরি বেড়ে যাওয়ায় জনমনে আতঙ্ক দেখা দিয়েছে।
উপজেলা প্রশাসনের সরকারি কোয়ার্টার থেকে মোটরসাইকেল চুরির ঘটনায় উপজেলা প্রকল্প কর্মকর্তা শাহ আলম অজ্ঞাতনামা আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগের প্রেক্ষিতে বৃহস্পতিবার (০২ ফ্রেরুয়ারি) একটি মামলা রেকর্ড করেছে (মামলা নং-২) কোম্পানীগঞ্জ থানা পুলিশ।
এর আগে গত বুধবার রাতে উপজেলার ইসলামপুর পশ্চিম ইউনিয়নের প্রশাসনিক এলাকা থানাসদর বাজার থেকে উপজেলা প্রকল্প কর্মকর্তা শাহ আলমের সরকারি অর্থায়নের একটি মোটরসাইকেল, ভূমি অফিসের চেইনম্যান এনায়েত উল্লাহ’র একটি মোটরসাইকেল ও বুড়দেও গ্রামের আরিফ আহমদের একটি মোটরসাইকেলসহ একই রাতে তিন মোটরসাইকেল চুরির ঘটনা ঘটে।
মোটরসাইকেল চুরির ব্যাপারে গাড়ির তিন মালিকেরা লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, কোম্পানীগঞ্জের ইসলামপুর পশ্চিম ইউনিয়নের থানাসদর বাজার এলাকা থেকে পাকা ঘরের মধ্যে সুরক্ষিত অবস্থায় রাখা মোটরসাইকেলগুলো গ্রিল ও তালা ভেঙে দুঃসাহসিকভাবে চুরি করেছে একটি চক্র। তিন মোটরসাইকেলের মধ্যে শাহ আলম ও এনায়েত উল্লাহ’র মোটরসাইকেলগুলো ছিল একেবারেই নতুন। গত ১৯ জানুয়ারি এনায়েত উল্লাহ হিরো কোম্পানির গ্ল্যামার মোটরসাইকেলটি ক্রয় করেন।
এছাড়া উপজেলা প্রকল্প কর্মকর্তা শাহ আলমের টিভিএস কোম্পানির ১২৫ সিসি মোটরসাইকেলটি সরকারের অর্থায়নে ক্রয় করে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় থেকে গেল নভেম্বর মাসের মাঝামাঝি সময়ে কোম্পানীগঞ্জ অফিসে এসেছে। যার নম্বর ঢাকা মেট্রো হ-৭২-০৫০১।
ভুক্তভোগী আরিফ আহমদ জানান, রাতের বেলা তিনি মোটরসাইকেলটি প্রতিদিনের মতো পাকা ঘরের বারান্দায় রেখে ঘুমিয়ে যান। সকালে উঠে দেখেন বারান্দার গ্রিল ভেঙে মোটরসাইকেল চুরি হয়েছে।
ভুক্তভোগী উপজেলা প্রকল্প কর্মকর্তা শাহ আলম বলেন, ‘পল্লী জীবিকায়ন প্রকল্প দপ্তরের অর্থায়নে মাঠ পর্যায়ে কাজ করার জন্য মোটরসাইকেলটি নভেম্বর মাসেই কোম্পানীগঞ্জ অফিসে এসেছে। ঘটনার রাতে গাড়ীটি আমি সরকারি কোয়ার্টারে তালাবদ্ধভাবে রেখে ঘুমিয়ে যাই। সকালে উঠে দেখি মোটরসাইকেল নেই। অনেক খোঁজাখুঁজি করে বুঝতে পারি গাড়ী চুরি হয়েছে। এ রাতে আমার মোটরসাইকেলটিসহ আশপাশের তিনটি গাড়ী চুরি হয়েছে।’
ইসলামপুর পশ্চিম ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য শাহ্ মোহাম্মদ জামাল উদ্দিন বলেন, ‘গত কয়েক বছর আগেও কোম্পানীগঞ্জে এতো মোটরসাইকেল চুরির ঘটনা দেখি নাই। গত কয়েক মাস ধরে কোম্পানীগঞ্জ মোটরসাইকেল চুরিসহ বিভিন্ন অপরাধ বৃদ্ধি পেয়েছে। এতে করে মোটরসাইকেলের মালিকসহ সাধারণ মানুষ আতঙ্কে আছে। আশা করি কোম্পানীগঞ্জ থানার নতুন ওসি সাহেব আইনশৃঙ্খলার উন্নতির জন্য কাজ করবেন।’
কোম্পানীগঞ্জ থানার নবাগত ওসি হিল্লোল রায় ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, ‘মোটরসাইকেল চুরির সংবাদ পাওয়া মাত্রই আমি ও আমার থানা পুলিশ মোটরসাইকেল চোরদের আটক ও মালামাল উদ্ধারের জন্য সর্বোচ্চ কাজ করছি। আমি কোম্পানীগঞ্জ থানায় নতুন যোগদান করলেও থানা এলাকার আইনশৃঙ্খলা স্বাভাবিক রাখতে কাজ করছি।’
তিনি উপজেলার সকল ধরনের অপরাধ বন্ধ করতে থানা এলাকার সকল জনসাধারণের সার্বিক সহযোগিতা কামনা করেন।