চুনারুঘাটে চা-বাগানে আগুন, মারা যাচ্ছে বন্যপ্রাণী

হবিগঞ্জ জেলার চুনারুঘাট উপজেলায় চা-বাগানের আগুনে পুড়ে মরছে হাজার হাজার বন্যপ্রাণী। উপজেলার সাটিয়াজুরী ইউনিয়নের রশিদপুর বন বিটের আওতাধীন গির্জাঘর এলাকায় হনুমান ও বিরল প্রজাতির কাঠবিড়ালিসহ অসংখ্য বন্যপ্রাণী মারা যাওয়ার ঘটনা ঘটেছে।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, হাতিমারা চা-বাগানের মালিকপক্ষ গত কয়েকদিনে গির্জাঘর এলাকা থেকে অন্তত ১৪০টি গাছ কেটে নিয়েছে। কেটে নেয়া গাছগুলোর মধ্যে রয়েছে আম, জাম, কাঁঠাল, তেঁতুল, বট, আমলকি, বহেরা, তাউরা ইত্যাদি। এছাড়া প্রায় তিন হেক্টর বাগান এলাকাজুড়ে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়।

কেটে নেওয়া গাছগুলো প্রায় অর্ধশত বছরের পুরনো বলে দাবি গির্জা এলাকার বাসিন্দাদের। এ গাছগুলোর ফল প্রাণীদের খাদ্য হিসেবে ব্যবহৃত হতো। তাছাড়া গাছগুলো কেটে ফেলায় অবস্থানরত প্রাণীরা আবাসস্থল হারাচ্ছে এবং দিকবিদিক ছুটোছুটি করছে। এক পর্যায়ে লোকালয়ে ছুটে আসছে।

এ বিষয়ে পরিবেশ প্রকৃতি বিষয়ক সংগঠন মিতা ফাউন্ডেশনের সমন্বয়কারী রবি কান্ত বলেন, হাতিমারা চা-বাগান মায়া হরিণসহ অসংখ্য প্রাণীর নিরাপদ আবাস্থল এবং এই গাছগুলো থেকে বরাবরই প্রাণীগুলো খাবার সংগ্রহ করে। এ প্রজাতির গাছগুলো কেটে ফেলায় খাদ্যসহ আবাসস্থল হারিয়েছে হাজারও প্রাণী। ইতোমধ্যে বেশ কিছু প্রাণী মারা যাওয়ার ঘটনাও ঘটেছে।

নাম প্রকাশ্যে অনিচ্ছুক এক বন কর্মকর্তা জানান, দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম বন রেমা-কালেঙ্গা অঞ্চলের পার্শ্ববর্তী পাহাড়ি অঞ্চল ছিল নানা প্রজাতির প্রাণীর জন্য গুরুত্বপূর্ণ। চা গাছ লাগানোর জন্য পাহাড় কেটে সমতল ভূমিতে পরিণত করায় বন্যপ্রাণীরা মারাত্মকভাবে হুমকির মুখে পড়ছে।

এ বিষয়ে হবিগঞ্জের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা রেজাউল করিম চৌধুরী জানান, বন বিভাগের অনুমতি না নিয়েই এসব গাছ কাটা হচ্ছে। শিগগির আলোচনা করে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

এ ব্যাপারে জানতে চা-বাগানের ব্যবস্থাপক মঈন উদ্দিনের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করলেও তাকে পাওয়া যায় নি।