৪৮ দিন পর সিলেটের রাজপথে সরব বিএনপি

গত ২৮ অক্টোবর রাজধানীর পল্টনে মহাসমাবেশের পর সিলেটের রাজপথে কোনঠাসা বিএনপি। একের পর এক কঠোর কর্মসূচীর ঘোষণা আসলেও রাজপথে শক্ত অবস্থান জানান দিতে পারেনি তারা।

একের পর এক মামলা, গ্রেপ্তার আর পুলিশের অভিযানের কারণে রাজপথের পাশাপাশি ঘরছাড়া হাজারো বিএনপি নেতাকর্মী। জেলা ও মহানগরের সিনিয়র নেতাদের মধ্যে বেশিরভাগই আত্মগোপনে। এমন পরিস্থিতিতে প্রায় প্রতিদিনই ২/৩ মিনিটের ঝটিকা মিছিল আর গণমাধ্যমে পাঠানো বক্তব্যের মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিলো সিলেটে বিএনপি ও এর অঙ্গসংগঠনের কর্মসূচী।

তবে মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে সিলেটের রাজপথে ফের বিশাল শোডাউন করলো সিলেট জেলা ও মহানগর বিএনপির পাশাপাশি অঙ্গসংগঠনগুলো। দীর্ঘ ৪৮ দিন পর কোনো রকম অপ্রীতিকর পরিস্থিতি ছাড়াই শান্তিপূর্ণ কর্মসূচী পালন করতে পারলো দলটি।

বিজয় দিবসের শুরতে মহান মুক্তিযুদ্ধে শাহাদাত বরণকারী সকল শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে সিলেট কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পন করেছে সিলেট জেলা বিএনপি। এতে নেতৃত্ব দেন সিলেট জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট এমরান আহমদ চৌধুরী ও সিনিয়র সহ-সভাপতি এডভোকেট আশিক উদ্দিন আহমদ।

এরপর সাবেক মেয়র আরিফুল হকের নেতৃত্বে শহিদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পন করেন সিনিয়র নেতারা। শহীদ মিনারে ‘সিলেট বিএনপি’ নামে শ্রদ্ধাঞ্জলী অর্পনে আরিফের সঙ্গে ছিলেন- বিএনপি’র কেন্দ্রীয় সহ-ক্ষুদ্র ঋণ বিষয়ক সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুর রাজ্জাক, জেলা বিএনপি’র উপদেষ্টা আশিক উদ্দিন চৌধুরী, জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি ইকবাল আহমদ তাপাদার, সাবেক জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আলী আহমদ, জেলা বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম সম্পাদক ইশতিয়াক সিদ্দিকী, মহানগর বিএনপির সাবেক যুগ্ম আহবায়ক সুদীপ রঞ্জন সেন বাপ্পু, সাদিকুর রহমান সাদিক, জেলা বিএনপির যুগ্ম সম্পাদক ব্যারিস্টার রিসারত আজিম হক আদনান, শ্রমিক দল মহানগর সাবেক সভাপতি ইউনুস আহমদ প্রমুখ।

বিজয় দিবসে আলাদাভাবে মাঠে নেমেছে সিলেট মহানগর বিএনপি। সিলেট কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারে শ্রদ্ধাঞ্জলী দেয়ার পর এক বর্ণাঢ্য বিজয় র‌্যালি বের করেন তারা। এই র‌্যালিতেও নেতাকর্মীদের উপস্থিতি ছিলো চোখে পড়ার মতো। বিশেষ করে মহানগর শাখার সিনিয়র নেতৃবৃন্দের উপস্থিতি ছিলো বেশ সরব।

এছাড়া একই সময়ে যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল, ছাত্রদলের নেতাকর্মীদের প্রাণবন্ত উপস্থিতি ছিলো।

শহিদ মিনারে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্য জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট এমরান আহমদ চৌধুরী বলেন, আমরা ৫২ তম বিজয় দিবস পালন করছি। ১৯৭১ সালে এক সাগর রক্তের বিনিময়ে পাকিস্তানের শোষন থেকে মুক্ত হয়েছি ঠিকই তবে আজ ৫২ বছর পরও আমরা সেই মুক্তির স্বাদ পাচ্ছি না। পাকিস্তান কায়দায় আজ বিরোধী দলকে দমন নিপীড়ন করা হচ্ছে। বিএনপির হাজার হাজার নেতাকর্মী মিথ্যা মামলার আসামী হয়ে আজ ঘরছাড়া। ৭১ সালে যেভাবে পাক হানাদারদের ভয়ে মানুষ বাড়িতে থাকতে পারত না, ঠিক সেভাবে সরকারী বাহিনীর ভয়ে মানুষ আজ বাড়িতে থাকতে পারছে না। দেশের মানুষের ভোটের অধিকার কেড়ে নেয়া হয়েছে। আমরা জনগনের মৌলিক দাবী আদায়ের লক্ষ্যে সংগ্রাম চালিয়ে যাচ্ছি। জনগনের দাবী আদায় না হওয়া পর্যন্ত আমরা রাজপথেই থাকব।

আর সিলেট মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ইমদাদ হোসেন চৌধুরী বলেছেন, সরকার আমাদের মুক্তিযুদ্ধের মূলমন্ত্র গণতন্ত্রকে ধ্বংস করে দিয়েছে। তারা দুর্নীতি আর লুটপাটের মাধ্যমে দেশের অর্থনীতিকে পঙ্গু করে দিয়েছে। অবৈধভাবে ক্ষমতার মসনদ ধরে রাখতে প্রহসনের একতরফা নির্বাচনের ষড়যন্ত্র করছে। দেশপ্রেমিক গণতন্ত্রকামী জনতা তাদের এই ষড়যন্ত্র সফল হতে দিবেনা। বিজয়ের দিবসের চেতনায় উদ্ধুদ্ধ হয়ে গণতন্ত্রের বিজয় নিশ্চিত করতে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।

সিলেট জেলা ও মহানগর বিএনপির পৃথক কর্মসূচীতে উপস্থিত ছিলেন- শহিদ আহমদ (চেয়ারম্যান), সামিয়া বেগম চৌধুরী, এড. হাসান আহমদ পাটোয়ারী রিপন, মামুনুর রশিদ মামুন, আনোয়ার হোসেন মানিক, রফিকুল ইসলাম শাহপরান, মুহিবুর রহমান, এড. সাঈদ আহমদ, এড.মুজিবুর রহমান, এড. আল আসলাম মুমিন, নুরুল আমিন দুলু, আম্বিয়া চৌধুরী, এড. বদরুল ইসলাম চৌধুরী, এড. মোস্তাক আহমদ, আল মামুন খান, জয়নাল আহমদ রানু, আজিজুর রহমান, জালাল খান, আহাদ চৌধুরী শামীম, ডাঃ নাজিম উদ্দিন, এড. ওবায়দুর রহমান ফাহমী, সিলেট মহানগর বিএনপির সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক রেজাউল হাসান কয়েস লোদী, সৈয়দ মঈনুদ্দিন সোহেল, সিলেট মহানগর মহিলা দলের সভাপতি নিগার সুলতানা ডেইজি, সাধারণ সম্পাদক ফাতেমা জামান রোজি, বিএনপি নেতা সাদিকুর রহমান সাদিক, মহানগর যুবদল নেতৃবৃন্দের মধ্যে থেকে তোফাজ্জল হোসেন বেলাল, সাহেল রহমান, আরজু, ফিরুজ আহমদ, রিপন চৌধুরী, মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক মামুন ইবনে রাজ্জাক রুমেল ও ভারপ্রাপ্ত সদস্য সচিব আবু আহমেদ আনসারী, মহানগর ছাত্রদলের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ হোসাইন আহমেদ, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সাইফুর রহমান, মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দল নেতা আব্দুল হাসিম জাকারিয়া, জেলা শ্রমিক দলের সদস্য সচিব নুরুল ইসলাম, মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক আব্দুল সামাদ তোহেল, চেয়ারম্যান আহমেদ জিলু, মদন মোহন কলেজ ছাত্রদলের আহ্বায়ক আফজল হোসেন প্রমুখ।