সড়ক নির্মাণে চেয়ারম্যানের ভূমিদান, ৭০ বছরের দুর্ভোগ লাঘব

সুদীর্ঘ ৭০ বছর ধরে যাতায়াতের রাস্তা না থাকায় চরম দুর্ভোগে ছিলেন শান্তিগঞ্জের পশ্চিম পাগলা ইউনিয়নের শত্রুমর্দন হাজিবাড়ির (খারাশাবাড়ি) বাসিন্দারা। ভূমি জটিলতার কারণে সড়ক না থাকায় বর্ষাকালে নৌকাযোগে এবং শুকনো মৌসুমে মেঠোপথেই যাতায়াত করতেন এই এলাকার প্রায় ২০টি পরিবার। তাদের দীর্ঘদিনের দুর্দশা দূর করতে নিজস্ব ৩ শতক ভূমি দান করে ইউনিয়ন পরিষদের বরাদ্দে রাস্তা নির্মাণ করে দিচ্ছেন পশ্চিম পাগলা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জগলুল হায়দার।

মঙ্গলবার (২০ ফেব্রুয়ারি) সকাল ১০ টায় শত্রুমর্দন হাজিবাড়ি এলাকার খারাশাবাড়ির সড়ক নির্মাণ কাজের উদ্বোধন করেন তিনি।

সড়ক নির্মাণে ইউনিয়ন পরিষদ থেকে ৩ লক্ষ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়। এতে প্রায় ৭০ বছরের দুর্ভোগের অবসান ঘটতে যাচ্ছে খারাশাবাড়ির বাসিন্দাদের।

এদিকে সড়ক পেয়ে চেয়ারম্যানের ভূয়সী প্রশংসা করছেন স্থানীয়রা। নিজ ভূমি দান করে সড়ক নির্মাণকাজ শুরু করায় ইউপি চেয়ারম্যান জগলুল হায়দারকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন তারা।

শান্তিগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক গোলাম মোস্তফা বলেন, ‘খারাশাবাড়ির বাসিন্দারা বৃটিশ আমল থেকে রাস্তার জন্য দুর্ভোগে ছিলেন। বর্ষাকালে তারা দ্বীপের মত বিচ্ছিন্ন হয়ে যেতেন। পশ্চিম পাগলা ইউপি চেয়ারম্যান জগলুল হায়দার ভাই তাদের দুর্দশা দুর করতে নিজের ৩ শতক জায়গা দান করেছেন। সেই সাথে ইউনিয়ন পরিষদের বরাদ্দে সড়ক নির্মান করে দিচ্ছেন। আমি তাঁকে অসংখ্য ধন্যবাদ জানাই।’

রাস্তার সুবিধাভোগী ঠিকাদার নূর মিয়া বলেন, ‘যুগ যুগ ধরে রাস্তার অভাবে আমরা কষ্টভোগ করে আসছি। বর্ষাকালে পানিবন্ধি হয়ে যেতাম। চেয়ারম্যান জগলুল হায়দার সাহেব ভূমিদান করে ইউনিয়ন পরিষদ থেকে বরাদ্দ দিয়ে আমাদের দীর্ঘদিনের কষ্ট দুর করে দিচ্ছেন। আমরা এলাকাবাসী তাঁর প্রতি চিরকৃতজ্ঞ।’

পশ্চিম পাগলা ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি আজাদ মিয়া বলেন, চেয়ারম্যান জগলুল হায়দার ভাইয়ের এমন উদ্যোগ প্রশংসার দাবিদার। তাঁর ভূমিদানের ফলে খালিশাবাড়ির কয়েকটি পরিবারের ৭০ বছরের দুর্ভোগের অবসান হতে যাচ্ছে।

এব্যাপারে ইউপি চেয়ারম্যান জগলুল হায়দার বলেন, ‘শত্রুমর্দন গ্রামের খালিশাবাড়ির বাসিন্দারা বৃটিশ আমল থেকে রাস্তার অভাবে চরম দুর্ভোগে ছিলেন। স্থানীয়দের মাঝে জায়গা নিয়ে জটিলতা থাকার কারণে এর আগে কোনো জনপ্রতিনিধি এই রাস্তার কাজ করতে পারেন নি। তাঁদের দীর্ঘদিনের এই দুর্দশা দূর করার চিন্তা থেকে আমি আমার নিজস্ব ৩ শতক ভূমি দান করে দিয়েছি। সেইসাথে ইউনিয়ন পরিষদের সব সদস্যবৃন্দের মতের ভিত্তিতে রাস্তা নির্মানে ৩ লক্ষ টাকা বরাদ্দ দিয়ে রাস্তা নির্মাণের কাজ শুরু করেছি। তবে ইউনিয়ন পরিষদের সীমিত বরাদ্দের কারণে এই রাস্তার কাজ পুরোপুরি সম্পন্ন না-ও হতে পারে। সেজন্য আমি সাবেক পরিকল্পনামন্ত্রী এম. এ মান্নাম এমপি মহোদয়ের সুদৃষ্টি কামনা করছি। তিনি যেন এই রাস্তার বাকি কাজটুকু সংস্কার করে দেন আমি সেই দাবি জানাচ্ছি।’

সড়ক নির্মাণকাজের উদ্বোধনকালে উপস্থিত ছিলেন, উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক গোলাম মোস্তফা, পশ্চিম পাগলা ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য আলী আহমদ, জফরুল হক, ফয়জুল হক, নৃপেশ দে, সাবেক ইউপি সদস্য সিরাজ মিয়া, সমাজকর্মী আব্দুল মিয়া, যুবলীগ নেতা বদরুল ইসলাম টিপু, আজাদ মিয়া, ফারুক মিয়া প্রমুখ।