শান্তিগঞ্জে লোডশেডিংয়ে জনদুর্ভোগ, ঈদ বাজারে ভাটা

বৈশাখের শুরুতেই সারাদেশের মতো শান্তিগঞ্জ উপজেলায়ও তীব্র দাবদাহে জনজীবনে দুর্ভোগ নেমে এসেছে। এতে ব্যহত হচ্ছে জনসাধারনের স্বাভাবিক জীবনযাত্রা।

এদিকে তীব্র গরমের পাশাপাশি ‘মড়ার উপর খাড়ার ঘা’ দেখা দিয়েছে অনিয়ন্ত্রিত লোডশেডিং। দিনে-রাতে সমান তালে ঘণ্টার পর ঘণ্টা বিদ্যুৎ না থাকায় অতিষ্ঠ জনজীবন। পাশাপাশি দোকানপাট ব্যবসা প্রতিষ্ঠানসহ অফিস আদালতে কাজের স্বাভাবিক পরিবেশ বিনষ্ট হচ্ছে। লোডশেডিংয়ের মারাত্মক প্রভাব পড়েছে ঈদ বাজারেও। পল্লী বিদ্যুতের এমন লোডশেডিংয়ে অতিষ্ঠ গ্রাহকরা। ঈদকে সামনে রেখে নিরবিচ্ছিন্ন বিদ্যুত সরবরাহের দাবী উপজেলার ব্যবসায়ীসহ জনসাধারণের।

বিদ্যুৎ গ্রাহকরা জানান, একদিকে বিদ্যুৎ নেই, অন্যদিকে অত্যাধিক গরমের কারনে তাদের স্বাভাবিক কাজকর্ম ব্যাহত হচ্ছে। ছাত্রছাত্রীদের লেখাপড়ায়ও বিঘ্ন ঘটছে। পড়াশুনায় মনোযোগী হতে না পারার পাশাপাশি সময়মত স্কুলেও যেতে পারছে না শিক্ষার্থীরা।

অভিভাবকরা বলছেন, অতিরিক্ত লোডশেডিংয়ের ফলে রাতে ঘুম না হওয়ায় দিনের বেলায় কর্মক্ষেত্রে এর প্রভাব পড়ছে। এছাড়া নবজাতক ও রোগীরাও লোডশেডিংয়ের কারণে ভোগান্তিতে পড়েছেন।

ব্যবসায়ী গ্রাহকরা জানান, ঈদকে সামনে রেখে মন্দা কাটিয়ে যখন ব্যবসা জমে উঠছিল তখনই ঘনঘন লোডশেডিংয়ে ঈদ বাজারে ভাটা পড়ছে। তীব্র দাবদাহে ক্রেতারা বাজারে আসতে চাচ্ছেন না। যারা আসেন তারাও লোডশেডিংয়ে অতিষ্ট হয়ে দোকানে বসতে চান না। এতে পণ্য বেচাকেনায় ভাটা পড়েছে।

পাগলা বাজারের অর্পণ ফ্যাশনের সত্ত্বাধিকারী অর্পণ দেবনাথ বলেন, ‘পল্লী বিদ্যুতের লোডশেডিংয়ে আমরা অতিষ্ট। এমনিতেই তীব্র গরমে জান যায় অবস্থা। তার উপর ঘনঘন লোডশেডিং। আমরা এর প্রতিকার চাই। নিরবিচ্ছিন্ন বিদ্যুত চাই।’

মিজান ফার্মেসীর রতন দেবনাথ বলেন, লোডশেডিংয়ে ব্যবসায় দারুণ প্রভাব পড়েছে। ঘনঘন লোডশেডিংয়ে দোকানের ভ্যাকসিনের ক্ষতি হচ্ছে। ফ্রিজিংয়ের অভাবে ভ্যাকসিন বিনষ্ট হওয়ার সম্ভাবনা দেখা দিচ্ছে।

এসএসসি পরীক্ষার্থী হালিমা বলেন, ‘ঈদ পরেই এসএসসি পরীক্ষা শুরু। কিন্তু এখন থেকেই ঘনঘন লোডশেডিং। দিন-রাত সমানতালে লোডশেডিংয়ে পড়ায় ব্যাঘাত ঘটছে। আমরা এর সমাধান চাই।’

আক্তাপাড়া মিনাবাজারের ব্যবসায়ী শামিম আহমদ বলেন, তীব্র গরমে বিদ্যুত সংকটের কারণে ব্যবসা করতে পারছিনা। দোকানে বসে না তো নিজে শান্তি পাচ্ছি না তো ক্রেতারা শান্তি পাচ্ছেন। লোডশেডিংয়ের কারণে ঠান্ডা পানীয়ও বিক্রি করতে পারছি না। এতে বেচাকেনা কমে গেছে। এভাবে চলতে থাকলে ব্যবসার মারাত্মক ক্ষতি হবে।

তবে ঘনঘন লোডশেডিংকে জাতীয় ইস্যু বলছেন শান্তিগঞ্জ উপজেলা পল্লী বিদ্যুতের এজিএম মোহাম্মদ নাদির হোসেন। তিনি বলেন, ‘সারাদেশে বিদ্যুতের সংকট চলছে। আমরা পর্যাপ্ত পরিমান বিদ্যুত সরবরাহ পাচ্ছি না। যতটুকু বিদ্যুত আমাদের সরবরাহ করা হচ্ছে তা দিয়েই গ্রাহককে সেবা দিতে হচ্ছে।’

লোডশেডিং সমস্যার প্রতিকার কবে হবে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এই ব্যাপারে নিশ্চিতভাবে কিছু বলা যাচ্ছে না। পর্যাপ্ত বিদ্যুৎ সরবরাহ পেলেই এই সমস্যার সমাধান হবে।’