দোকানের কর্মচারী থেকে সাততলা বাড়ি ও ছয় ফ্ল্যাটের মালিক জয়নাল

ভুয়া জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) ও জাল দলিল তৈরি করে বিভিন্ন ব্যাংক থেকে বিপুল অঙ্কের টাকা আত্মসাতের অভিযোগে এক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। পুলিশ বলছে, জয়নাল আবেদীন নামের ওই ব্যক্তি প্রতারণার টাকায় ঢাকায় সাততলা বাড়ি করেছেন; কিনেছেন অন্তত ছয়টি ফ্ল্যাট।

রাজধানীতে সিআইডি কার্যালয়ে আজ শনিবার সংবাদ সম্মেলন করে এসব তথ্য জানান সিআইডির প্রধান ও পুলিশের অতিরিক্ত মহাপরিদর্শক মোহাম্মদ আলী মিয়া।

তিনি জানান, রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে গতকাল শুক্রবার জয়নাল আবেদীনসহ আটজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। জয়নালের বিরুদ্ধে মানি লন্ডারিংয়ের অভিযোগে মামলা করা হয়েছে।

মোহাম্মদ আলী মিয়া জানান, জয়নাল আবেদীন আগে মিরপুরের একটি সোনার দোকানের কর্মচারী ছিলেন। প্রতারণার জন্য তিনি ছয়টি ভুয়া এনআইডি তৈরি করেন। এসব এনআইডি ব্যবহার করে বিভিন্ন ব্যাংকে ৫০টি অ্যাকাউন্ট (হিসাব) খোলেন। এরপর জালিয়াতির আশ্রয় নিয়ে ব্যাংক থেকে বিপুল পরিমাণ টাকা হাতিয়ে নেন।

সম্প্রতি সিআইডি জানতে পারে, একটি সংঘবদ্ধ অপরাধী চক্র একাধিক ভুয়া এনআইডি ও কর শনাক্তকরণ নম্বর (টিআইএন) তৈরি করে। জাতীয় পরিচয়পত্র নিবন্ধন অনুবিভাগের কিছু কর্মকর্তা-কর্মচারী এ কাজে তাঁদের সহায়তা করেন। এসব এনআইডি ও টিআইএন ব্যবহার করে চক্রের সদস্যরা ভূমি রেজিস্ট্রি অফিসের অসাধু লোকদের সহায়তায় ফ্ল্যাট ও জমির একাধিক জাল দলিল তৈরি করেন। পরে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের অসাধু কর্মকর্তাদের যোগসাজশে ফ্ল্যাটের বিপরীতে একাধিক ঋণ গ্রহণের মাধ্যমে কোটি কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছে চক্রটি।

সিআইডি প্রধান আরও জানান, জয়নাল আবেদীন এ ধরনের একটি চক্রের প্রধান। তাঁর প্রতিষ্ঠান রুমানা জুয়েলার্স, নীড় এস্টেট প্রোপার্টিজ লিমিটেডসহ ২৫ জন সদস্যের বিরুদ্ধে সম্প্রতি মানি লন্ডারিং (অর্থ পাচার) প্রতিরোধ আইনে মামলা করে সিআইডি। এরপর রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা থেকে তাঁর প্রধান সহযোগী রাকিব হোসেন, ভায়রা কে এম মোস্তাফিজুর রহমান, জাল কাগজপত্র ও এনআইডি প্রস্তুতকারক লিটন মাহমুদ, ভূমি রেজিস্ট্রি অফিসের দলিল প্রস্তুতকারক হাবিবুর রহমান, ব্যাংক কর্মকর্তা হিরু মোল্যা, আবদুস সাত্তার ও সৈয়দ তারেক আলীকে গ্রেপ্তার করে সিআইডি। এর আগে এ মামলায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। এখন পর্যন্ত এ মামলায় গ্রেপ্তার করা হয়েছে ১১ জনকে।