লাখাইয়ে যত্রতত্র পশু জবাই ও বিপণন, নষ্ট হচ্ছে পরিবেশ

হবিগঞ্জের লাখাই উপজেলার হাট-বাজারগুলোতে পশুর স্বাস্থ্য পরীক্ষা ব্যতিত অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে পশু জবাই ও বিপণন চলছে। তবে এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ নির্বিকার।

বৃহস্পতিবার (২৩ মার্চ) লাখাইয়ের কালাউক বাজার ও বুল্লাবাজারসহ বিভিন্ন বাজার পরিদর্শনকালে দেখা যায়, মাংস প্রক্রিয়াজাতকরণ কাজে সংশ্লিষ্টরা বাজারের জনাকীর্ণ স্থানে ও সড়কের পাশে পশু জবাই করে মাংস বিক্রি করেছেন। বাজারের পাশে নদী বা খালের পাশে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে পশু জবাই করে যত্রতত্র আবর্জনা ফেলে রেখেছেন। এতে বাজারের পরিবেশে নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে।

এছাড়া মাংস প্রক্রিয়াজাতকারীদের নির্দিষ্ট দোকান বা শেড না থাকায় কেউ সড়কের পাশে খোলা জায়গায় চৌকি বসিয়ে, আবার কেউ মাটি বা পাকা সড়কে চাটাই বিছিয়ে মাংস বিক্রি করেছেন। এতে প্রতিনিয়ত ধূলো-ময়লা পড়ে মাংসের গুণগত মান নষ্ট হচ্ছে।

এদিকে, উপজেলায় মাংসের দামও বেশ চড়া। প্রতি কেজি মাংস ৭৫০- ৮০০ টাকায় বিক্রি করতে দেখা যায়। এছাড়া অভিযোগ উঠেছে, কোনো কোনো মাংস প্রক্রিয়াজাতকারী সুস্থ ও মোটাতাজা পশুর পাশাপাশি অসুস্থ ও বিভিন্ন দুর্ঘটনায় আহত পশুর মাংসও বাজারজাত করে ভোক্তাদের ঠকাচ্ছেন।

উপজেলা প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর সূত্রে প্রাপ্ত তথ্যে জানা যায়, নিরাপদ মাংস প্রাপ্তি ও মাংসের গুণগত মান রক্ষায় ইতোমধ্যে এ দপ্তরের অধীনে মাংস প্রক্রিয়াজাতকারীদের দিনব্যাপী প্রশিক্ষণ ও তাদেরকে প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের নিকট থেকে লাইসেন্স গ্রহণের নির্দেশনা প্রদান করা হয়েছে। কিন্তু অদ্যাবধি কোনো মাংস প্রক্রিয়াজাতকারী লাইসেন্স গ্রহণের প্রক্রিয়ায় আসেননি। এমনকি তারা পশুর স্বাস্থ্য পরীক্ষাপূর্বক সনদ গ্রহণেরও আগ্রহ দেখাননি।

এ বিষয়ে ভারপ্রাপ্ত উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ও ভেটেরিনারি সার্জন ডা. শাহাদাত হোসেন বলেন, আমরা বারবার নোটিশ দেওয়া সত্ত্বেও কেউ লাইসেন্স গ্রহণের জন্য আবেদন করেননি। এমনকি পশুর স্বাস্থ্য পরীক্ষাপূর্বক সনদ নেওয়ার জন্যও আসেননি। তাই আবারও তাদের নোটিশ দেওয়া হচ্ছে।

মাংসের চড়া দামের বিষয়ে তিনি বলেন, আমরা মাংসের দাম নির্ধারণ করে দিতে পারি না। এটা সংশ্লিষ্ট বাজার কমিটি করতে পারে।

তিনি জানান, অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে পশু জবাই ও বিপণন রোধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নাহিদা সুলতানা বলেন, মাংসের দাম জেলা প্রশাসন থেকে বেঁধে দেওয়া হয়। আমাদের জানানো হলে তা কার্যকর করতে চেষ্টা চালিয়ে যাবো। যত্রতত্র ময়লা-আবর্জনা ও অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে বিপণনের বিষয়ে বাজার মনিটরিংকালে ও সুনির্দিষ্ট স্থান উল্লেখ করে অবগত করলে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।