অবশেষে কান্নায় থামলো মরক্কোর রূপকথা। একইসাথে কাতার বিশ্বকাপের ফাইনালে উঠেছে ফ্রান্স। টুর্নামেন্টের দ্বিতীয় সেমিফাইনালে মরক্কোকে ২-০ গোলে হারিয়েছে বিশ্ব চ্যাম্পিয়নরা। এ জয়ে ১৯৯০ সালে আর্জেন্টিনার পর দ্বিতীয় চ্যাম্পিয়ন দল হিসেবে পরের টুর্নামেন্টে ফাইনালে পৌঁছেছে ফ্রান্স।
মরক্কোর বিপক্ষে দুই অর্ধে ফ্রান্সের পক্ষে গোল আসে থিও হার্নান্দেজ ও রান্ডাল কোলো মুয়ানির পা থেকে।
আগামী ১৮ ডিসেম্বর রোববার লুসাইল আইকনিক স্টেডিয়ামে বিশ্বকাপ শিরোপার লড়াইয়ে ফ্রান্স লড়বে লিওনেল মেসির আর্জেন্টিনার বিপক্ষে। বাংলাদেশ সময় রাত ৯টায় খেলাটি শুরু হবে।
তার আগে ১৭ ডিসেম্বর শনিবার মরক্কো ক্রোয়েশিয়ার মুখোমুখি হবে তৃতীয়-চতুর্থ স্থান নির্ধারনী ম্যাচে।
কাতারের আল বাইত স্টেডিয়ামে দর্শকরা অপেক্ষা করছিলেন দুর্দান্ত গতির খেলা উপহার দেবে দুই দল। হতাশ হতে হয়নি তাদের। নড়েচড়ে বসার আগেই এগিয়ে যায় ফ্রান্স।
মরক্কোর বক্সের ডান প্রান্ত থেকে ভেতরে থাকা কিলিয়ান এমবাপেকে খুঁজে নেন আতোয়াঁ গ্রিজমান। এমবাপের শট পরপর দুইবার প্রতিহত হয় মরক্কোর রক্ষণ জটলায়।
তার দ্বিতীয় শট প্রতিহত হয়ে পড়ে থিও হার্নান্দেজের সামনে। প্রায় কাঁধ সমান উচ্চতায় থাকা বলে শট নিয়ে দর্শনীয় গোল করেন তিনি। বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে এটি ছিল ১৯৫৮ সালের পর দ্রুততম গোল। ওই বছর ফ্রান্সের বিপক্ষে দ্বিতীয় মিনিটে গোল করেছিলেন ব্রাজিলের ভাভা।
গোল হজম করে নিজেদের যেন ফিরে পায় মরক্কো। একের পর এক আক্রমণে ব্যতিব্যস্ত করে রাখে ফ্রান্সের রক্ষণকে। ১০ মিনিটের সময় আজেদিন ওউনাহির শট ঠেকিয়ে দেন ফ্রান্সের অধিনায়ক ও গোলকিপার উগো লরিস। ফ্রান্সের সাথে সমানতালে আক্রমণে জমে উঠেছিল দ্বিতীয় সেমিফাইনাল।
একদিকে মরক্কোর আক্রমণ, অন্যপ্রান্তে ফ্রান্সও চালিয়ে যাচ্ছিল লিড দ্বিগুণের প্রচেষ্টা। ১৭ মিনিটে অলিভিয়ে জিরুর শট পোস্টে লেগে প্রতিহত হয়। এর চার মিনিট পরই মরক্কোর অধিনায়ক রোমেইন সাইস চোটের কারণে মাঠ ছেড়ে উঠে যান।
চোট নিয়েই খেলতে নেমেছিলেন তিনি। সেমিফাইনালে পর্তুগালের বিপক্ষে ব্যাথা পেয়ে স্ট্রেচারে করে মাঠ ছাড়তে হয়েছিল তাকে।
অধিনায়কের বিদায়ে আরও উজ্জীবিত হয় মরক্কো। তবে ফ্রান্সও আক্রমণের তোড় কমায়নি। ৩৬ মিনিটে এমবাপের শট বক্সের মধ্যে ঠেকিয়ে মরক্কোকে নির্ভার করেন আশরাফ হাকিমি।
প্রথম ৪৫ মিনিটের সেরা সুযোগ মরক্কো পায় বিরতির ঠিক আগে। প্রথমার্ধের ইনজুরি টাইমে জাওয়াদ এল-ইয়ামিকের ওভারহেড কিক ফ্রান্সের কিপারকে পরাস্ত করলেও পোস্টে লেগে ফিরে আসে। বাকি সময়ে আর গোলের দেখা পায়নি দুই দল। ফলে ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে থেকে বিরতিতে যায় ফ্রান্স।
দ্বিতীয়ার্ধেও অজস্র সুযোগ তৈরি করে মরক্কো। তবে ফরোয়ার্ডদের ভুলে ও প্রতিপক্ষ বক্সে নিষ্ক্রিয়তার কারণে গোলের দেখা পায়নি।
অন্যদিকে, ফ্রান্স প্রথমার্ধের মতো দ্বিতীয়ার্ধেও পাওয়া একমাত্র পরিষ্কার সুযোগ কাজে লাগিয়েছে।
মরক্কোর হয়ে বারবার হাকিম জিয়েশ-ওউনাহিরা ফ্রান্সের বক্সে ঢুকে গেলেও ফিনিশিংয়ে দুর্বলতা কাটাতে পারেননি। ফ্রান্সের হয়ে ৭৯ মিনিটে মাঠে নামেন কোলো মুয়ানি। পরের মিনিটেই গোল করে মরক্কোকে ম্যাচ থেকে ছিটকে দেন তিনি।