ডাচদের বড় ব্যবধানে হারিয়ে পয়েন্ট টেবিলের সাতে ইংল্যান্ড

নেদারল্যান্ডস-ইংল্যান্ড। বিশ্বকাপে দুই ইউরোপিয়ান দেশের লড়াইটা হলো একপেশে। ডাচদের ১৮০ রানের বড় ব্যবধানে হারিয়ে চলতি বিশ্বকাপে নিজেদের জয়খরা কাটিয়েছে বর্তমান চ্যাম্পিয়ন ইংল্যান্ড। টানা হারে টেবিলে সবার নিচে থাকা দলটির সেরা ৮ নিশ্চিত করাটাই ছিল এখনের বড় চ্যালেঞ্জ। সেই চ্যালেঞ্জে বেশ ভালোভাবেই উৎরে গেল জশ বাটলারের দল।

খেলার আগে আলোচনায় ছিল ডাচ রূপকথার কথা। অথচ তা আর দেখা গেলো না। পুনেতে নেদারল্যান্ডসকে ১৮০ রানের বড় ব্যবধানে হারিয়েছে ইংলিশরা। আর এই জয়ের পর সেরা ৮এ থেকে ২০২৫ সালের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে খেলার সম্ভাবনাও জিইয়ে রেখেছে তারা। এই জয়ের পর পয়েন্ট টেবিলেও এসেছে নাটকীয় পরিবর্তন। একলাফে সাতে উঠে এসেছে ইংল্যান্ড। বাংলাদেশ এখন আটে। যার ফলে জমে উঠেছে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে জায়গা নিশ্চিতের লড়াইটাও।

৩৪০ রানের বিশাল লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে ম্যাচের কোন অংশেই ঠিক সুবিধা করতে পারেনি নেদারল্যান্ডস। শুরুটা ছিল একেবারেই ধীরগতির। সেখান থেকে আর সুবিধাও করা হয়নি তাদের। প্রথম ৫ ওভারে রান উঠেছে ২ এর কিছু বেশি। সেই চাপ সামাল দিতে গিয়েই কিনা ক্রিস ওকসের বলে কাটা পড়লেন ম্যাক্স ও ডড। দলীয় ১২ রানে পতন ঘটে প্রথম উইকেটের। পরের ওভারেই ফিরে যান দলের বড় ভরসা কলিন অ্যাকারম্যান। ১৩ রানেই পতন ঘটে ২য় উইকেটের। এবার বোলার ছিলেন ডেভিড উইলি।

এরপর প্রাথমিক ধাক্কা সামাল দেওয়ার কাজ করেছেন ওয়েসলি বারেসি এবং সাইব্র্যান্ড এংগেলব্রাখট। দুজন মিলে যোগ করেছেন ৫৫ রান। এই জুটি যখনই কিছুটা স্বপ্ন দেখাতে শুরু করেছে, ঠিক তখনই ভুল বোঝাবুঝিতে রান আউটের শিকার হন বারেসি। ১০০ রানের আগেই পতন ঘটে ৪র্থ উইকেটের। উইলির দ্বিতীয় শিকার হন সাইব্র্যান্ড। ততক্ষণে অবশ্য পেরিয়ে গিয়েছে ২২ ওভার। ডাচদের জন্য জয়টা তখন দূরের বাতিঘর।

এরপর স্কট এডওয়ার্ডস শুরু করেন নিজের সংগ্রাম। মাঝে বাস ডি লিট ফিরে গিয়েছেন। জুটি গড়েছেন তেজা নিদামানুরুর সঙ্গে। দুজনের জুটি থেকে আসে ৫৯ রান। ওটাই ছিল ডাচদের শেষ আশা ভরসা। ১৬৩ রানে এডওয়ার্ডস আউট হলে ডাচদের হার হয়ে যায় সময়ের ব্যাপার। ১৬ রানেই পতন ঘটে শেষ ৫ উইকেটের। ডাচটা গুটিয়ে যায় ১৭৯ রানে। ইংল্যান্ডের জয় আসে ১৮০ রানের ব্যবধানে।

এর আগে দিনের শুরুতে পুনের মহারাষ্ট্র স্টেডিয়ামে টস জিতে ব্যাট করতে নেমে প্রথম ২০ ওভারে মাত্র এক উইকেট হারিয়ে স্কোরবোর্ডে ১৩২ রান তুলেছিল ইংল্যান্ড। এরপরই খেই হারায় ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়নরা। পরের ২০ ওভারে ৮৩ রান তুলতেই ৫ উইকেট হারিয়ে ফেলে তারা। শেষ ১০ ওভারে স্টোকস ও ওকসের ব্যাটে আবারও লাগাম টানে ইংল্যান্ড।

দলীয় ৪৮ রানে ব্যক্তিগত ১৫ রানে সাজঘরে ফেরেন ওপেনার জনি বেয়ারস্টো। সেট হয়ে ফিরে যান জো রুটও (২৮)। অন্য প্রান্ত দিয়ে ওপেনার ডেভিড মালান ঝড়ো ব্যাটিং করে ৭৪ বলে খেলেন ৮৭ রানের ইনিংস। তার ব্যাট থেকে ১০টি চার ও দুটি ছক্কার শট আসে।

এরপরই ডাচদের উইকেট উৎসবের শুরু। হ্যারি ব্রুক (১১) ও জস বাটলার (৫) ব্যর্থ হয়ে ফিরে যান। আউট হন মঈন আলীও (৪)। ইংল্যান্ড ১৯২ রানে হারায় ষষ্ঠ উইকেট। সেখান থেকে চারে নামা বেন স্টোকস ও আটে নামা ক্রিস ওকস দলকে বড় রান এনে দিয়েছেন।

সপ্তম উইকেট জুটিতে ক্রিস ওকসকে নিয়ে ৮১ বলে ১২৯ রানের অনবদ্য জুটি গড়েন স্টোকস। ৪৫ বলে গুরুত্বপূর্ণ ৫১ রান করেন ওকস। ইনিংসের দুই বল বাকি থাকতে আউট হন স্টোকস। ৮৪ বলে তার ১০৮ রানের মারকুটে ইনিংসে ছিল ৬টি করে চার-ছক্কার মার।

অবসর ভেঙে বিশ্বকাপে ফেরা উনিশে ইংরেজদের বিশ্বজয়ের নায়ক এতদিনে এসে চেনা ছন্দে ফিরলেন। তার সেঞ্চুরিতে ভর করে তিনশ’ পেরোয় ইংল্যান্ডের পুঁজি। স্টোকসকে যোগ্য সঙ্গ দিয়েছেন ফিফটি করা ওকস। নির্ধারিত ওভারে ৯ উইকেট হারিয়ে তাদের সংগ্রহ ছিল ৩৩৯ রান।