জগন্নাথপুরে ৯০ শতাংশ প্রাথমিক বিদ্যালয়ে নেই শহিদ মিনার

 সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর উপজেলায় ১৫৮ টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মধ্যে প্রায় ৯০ শতাংশ বিদ্যালয়ে নেই শহীদ মিনার। ফলে বিভিন্ন জাতীয় দিবসগুলোতে কলাগাছ, কাঠ ও মাটি দিয়ে তৈরি অস্থায়ী শহীদ মিনার কিংবা অন্য প্রতিষ্ঠানের শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা নিবেদন করতে হয় এসব বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীকে।উপজেলায় ২২ হাজার শিক্ষার্থীদের পাঠদানে ৭৭৮০ জন শিক্ষক রয়েছেন। 

শিক্ষাবিদরা বলছেন, সরকার প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বিভিন্ন খাতে প্রতি বছর অনুদান দিচ্ছে। যার একটি অংশ লুটপাট হয়ে যায়। অনেক বিদ্যালয়ে এসব খাতের টাকা ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি আর প্রধান শিক্ষকরা ভাগাভাগি করে নেন বলে অভিযোগ রয়েছে। যদিও কোনো কোনো বিদ্যালয়ে বরাদ্দের পুরো অর্থ ব্যয় হচ্ছে।

গোটা বিশ্বে ভাষার জন্য জীবনদানের নজির একমাত্র বাংলাদেশের। শহীদ মিনার হলো ভাষাশহীদদের আত্মত্যাগের স্মৃতিচিহ্ন। ভাষা আন্দোলনের রক্তেরাঙা পথ ধরে আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধ সংঘটিত হয়। মাত্র নয় মাসের মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে যে স্বাধীনতা অর্জিত হয় তার অনুপ্রেরণা ছিল ভাষা আন্দোলন। সেই ভাষা আন্দোলনের প্রতীক শহীদ মিনার স্বাধীনতার ৫৩ বছরেও সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে নির্মাণ না হওয়া দুঃখজনক বলেও মনে করেন কয়েকজন শিক্ষাবিদ।

উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা গেছে, সুনামগঞ্জ জগন্নাথপুর উপজেলায় ১৫৮ টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থাকলেও শহীদ মিনার নেই। । আছে মাত্র ২২টিতে।  জগন্নাথপুর ১৫৮টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মধ্যে শহীদ মিনার রয়েছে মাত্র ২২ টিতে। বাকি ১৩৬ টিতে নেই। ছাএ-ছাএীদের দাবী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে স্থানীয়ভাবে অনুদান সংগ্রহ করে শহীদ মিনার নির্মাণ করার পরামর্শ দেয়া হয়। এজন্য আলাদা কোনো বরাদ্দ নেই।

এদিকে শিক্ষকরা বলছেন, স্থানীয়ভাবে অনুদান সংগ্রহ করা কঠিন ব্যাপার। তাছাড়া একটি শহীদ মিনার নির্মাণে লাখ টাকা দরকার যা স্থানীয়ভাবে জোগাড় সম্ভব নয়।

এ প্রসঙ্গে উপজেলা প্রাথমিক সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা রাপ্ররু মারমা বলেন, ‘প্রতিটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শহীদ মিনার থাকা জরুরি। কিন্তু সরকারিভাবে বরাদ্দ না থাকায় তা হচ্ছে না। যেগুলোয় আছে সেগুলো স্থানীয়ভাবে করা হয়েছে। শহীদ মিনারের জন্য সরকারিভাবে বরাদ্দ থাকলে ভালো হয়।’

জগন্নাথপুর প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) মাসুম বিল্লাহ বলেন, ‘শহীদ মিনার নির্মাণে সরকারিভাবে বরাদ্দ না থাকায় অনেক স্কুলে তা নেই। তার পরও সব স্কুল কর্তৃপক্ষকে স্থানীয়ভাবে অর্থ জোগাড় করে শহীদ মিনার নির্মাণে উদ্বুদ্ধ করা হবে।’