কোম্পানীগঞ্জে ব্যবসায়ীর রহস্যজনক মৃত্যু, ৪ দিনেও মামলা নেয়নি পুলিশ

সিলেটের কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার পাথর ও বালু ব্যবসায়ী বাবুল ইসলামের রহস্যজনক মৃত্যুর চারদিন পরও মামলা নেয়নি পুলিশ। এ ঘটনায় উপজেলাজুড়ে চলছে তীব্র সমালোচনা।

গত ১১ এপ্রিল রাতে ব্যবসায়িক কাজে ঘর থেকে বের হওয়ার পর থেকে নিখোঁজ ছিলেন উপজেলার ইসলামপুর গ্রামের মৃত তাজুল ইসলামের ছেলে বাবুল ইসলাম (৪৮)।

পরদিন (১২ এপ্রিল) ভোর ৬টার দিকে উপজেলার কাঁঠালবাড়ি রাস্তার পাশের একটি খাল থেকে তার লাশ উদ্ধার করে ফায়ার সার্ভিস। এসময় ঘটনাস্থল থেকেই উদ্ধার হয় তার ব্যবহৃত মোটরসাইকেল।

এ ঘটনায় ১২ এপ্রিল রাতে কোম্পানীগঞ্জ থানা বাদী হয়ে অভিযোগ দায়ের করেন বাবুল ইসলামের স্ত্রী আসমা খাতুন।

অভিযোগে তিনি উল্লেখ করেন যে, ১১ এপ্রিল দিবাগত রাত সোয়া একটার সময় বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে মাথায় ছুরিকাঘাত করে ও দুই পা ভেঙ্গে বাবুল ইসলামকে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা।

হত্যার পর আলামত নষ্ট করার জন্য হত্যাকারীরা ঘটনাটিকে দুর্ঘটনা বলে ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করেছেন বলেও অভিযোগে উল্লেখ করেন তিনি।

বাবুল ইসলামের লাশ উদ্ধারের পর থেকেই উপজেলাজুড়ে ব্যাপক আলোচনা চলছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে লেখার পাশাপাশি বিভিন্ন সংগঠন মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সভা পালন করছে।

মামলা গ্রহণ না করায় কোম্পানীগঞ্জ থানা পুলিশের প্রতি ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন এলাকাবাসী। তাদের দাবি মামলা নথিভুক্ত করে দ্রুত সময়ের মধ্যে মৃত্যুর রহস্য উদঘাটন করে অপরাধীদের আইনের আওতায় আনার।

নিহতের স্ত্রী আছমা খাতুন বলেন, ‘আমার স্বামী রাতে ঘর থেকে যাওয়ার সময় আমি জিজ্ঞেস করেছিলাম কোথায় যাচ্ছেন? তিনি বলেন কাঁঠালবাড়ি গুচ্ছগ্রামে বালুর সাইটে ঝামেলা হয়েছে, সেখানে যাচ্ছি। এরপর আর তিনি ফিরে আসেন নি? আমি আমার স্বামীর মৃত্যুরহস্য জানতে চাই।‘

নিহতের মামা অ্যাডভোকেট কামাল হোসেন বলেন, ‘পরিকল্পিতভাবে আমার ভাগ্নেকে বাড়ি থেকে ফোনকল করে ডেকে নিয়ে হত্যা করা হয়েছে। ঘটনার পরদিন কোম্পানীগঞ্জ থানায় অভিযোগ দায়ের করলেও থানা পুলিশ বিভিন্ন টালবাহানা করছে, কিন্তু মামলা গ্রহণ করছে না।‘

সঠিক তদন্তের মাধ্যমে বাবুল হত্যার রহস্য উদঘাটন করে প্রকৃত আসামীদের আইনের আওতায় আনার দাবি জানান তিনি।

বাবুল ইসলামের মরদেহ উদ্ধারের পর গত শনিবার (১৩ এপ্রিল) সকাল ১১টায় টুকেরবাজার পয়েন্টে মানববন্ধন শেষে বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে থানা ঘেরাও করেন বিক্ষুব্ধ স্থানীয়রা। পরে ডিআইজি ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করা হয়।

কোম্পানীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) গোলাম দস্তগীর আহমদ জানান, ‘মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্ত করা হয়েছে। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পেলেই মৃত্যুরহস্য উদঘাটিত হবে।‘

মামলা গ্রহন না করা প্রসঙ্গে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সাথে পরামর্শ করে দ্রুততম সময়ের মধ্যে মামলা রেকর্ড করা হবে।‘