সিলেটে আগামীকাল বৃহস্পতিবার (২৪ অক্টোবর) থেকে শুরু হচ্ছে হিউম্যান প্যাপিলোমা ভাইরাস (এইচপিভি) টিকাদান ক্যাম্পেইন। মূলত মহিলাদের জরায়ু মুখ ক্যান্সার প্রতিরোধের জন্য এই টিকাদান ক্যাম্পেইনটি অনুষ্ঠিত হবে।
সিলেট জেলায় এ বছর সর্বপ্রথম এইচপিভি টিকার লক্ষ্যমাত্রায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ৫ম থেকে ৯ম শ্রেণির ১ লক্ষ ৬৮ হাজার ৭৮৬ জন, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বহির্ভূত (১০-১৪ বছর বয়সী) ১২ হাজার ৫৪৪ জন কিশোরী, প্রতিবন্ধী ১৬৮ জন কিশোরীসহ প্রায় ১ লক্ষ ৮১ হাজার ৪৯৮ জন কিশোরীকে (১০-১৪ বছর বয়সী) এই টিকার আওতায় আনা হয়েছে।
এছাড়া সিলেট জেলা ২৩৭৯ টি স্কুল টিকাদান কেন্দ্র এবং ২৪১৩ টি টিকাদান কেন্দ্রে এইচপিভি টিকা দেওয়া হবে। টিকাদান কর্মসূচি বাস্তবায়নে ৬১৩ জন টিকাদান কর্মী ও সমসংখ্যক স্বেচ্ছাসেবীর পাশাপাশি ১ম সারির ৩০০ জন সুপারভাইজার কাজ করবেন।
এদিকে, এই ক্যাম্পেইনকে সামনে রেখে দেশের অন্যান্য জেলার মত সিলেট জেলায়ও জেলা পর্যায় থেকে ওয়ার্ড পর্যায়ে পর্যন্ত টিকাদানের সাথে সম্পৃক্ত সকল কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের প্রশিক্ষণ সম্পন্ন হয়েছে। এছাড়াও এইচপিভি টিকাদান কার্যক্রম সমন্বয়ের লক্ষ্যে গঠিত জেলা সমন্বয় কমিটির সদস্যবৃন্দসহ শিক্ষক ধর্মীয় প্রতিনিধি ও অন্যান্য দপ্তরের প্রতিনিধিবৃন্দের সাথে অবহিতকরণ সমন্বয় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
বুধবার (২৩ অক্টোবর) দুপুর ১২টায় সিলেট নগরের এক অভিজাত হোটেলের সম্মেলন কক্ষে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে কর্মসূচির বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরেন স্বাস্থ্য সংশ্লিষ্টরা।
সিলেট সিভিল সার্জনের কার্যালয়ে উদ্যোগে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, বাংলাদেশী নারীদের ক্ষেত্রে ক্যান্সার আক্রান্তের দিক দিয়ে জরায়ু মুখ ক্যান্সার দ্বিতীয় সর্বোচ্চ স্থানে রয়েছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার জরিপ অনুযায়ী, বাংলাদেশের প্রতি এক লক্ষ নারীর ১১ জন জরায়ু মুখ ক্যান্সারে আক্রান্ত হন এবং প্রতিবছর প্রায় ৪ হাজার ৯৭১ জন মহিলা মৃত্যুবরণ করেন। জরায়ু মুখ ক্যান্সার প্রতিরোধে ১০ থেকে ১৪ বছর বয়সী কিশোরীদের জন্য এই টিকাদান কর্মসূচি শুরু হচ্ছে।
দেশব্যাপী ২৪ অক্টোবর থেকে ২২ নভেম্বর পর্যন্ত ২৮ দিনব্যাপী (১৮ কর্মদিবস) এই টিকাদান কার্যক্রম চলবে। টিকাদান ক্যাম্পেইনের উদ্দিষ্ট জনগোষ্ঠী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে অধ্যয়নরত ছাত্রী (পঞ্চম থেকে নবম শ্রেণির ছাত্রী) এবং শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বহির্ভূত কমিউনিটির কিশোরীদের (১০-১৪ বছর বয়সী) টিকাদানের আওতায় আনা হবে।
প্রথম দুই সপ্তাহ/১০ দিন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ও স্থায়ী কেন্দ্রসমূহে টিকাদান কার্যক্রম চলবে। অর্থাৎ ২৪ অক্টোবর থেকে ৬ নভেম্বর পর্যন্ত স্কুল পর্যায়ে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে এবং পরবর্তীতে দুই সপ্তাহ/৮ দিন কমিউনিটিতে (৬ নভেম্বর থেকে ২১ নভেম্বর পর্যন্ত) টিকাদান কার্যক্রম পরিচালিত হবে। স্থায়ী কেন্দ্রে প্রথম ১০ কর্মদিবস শুধুমাত্র শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের বাদ পড়া ছাত্রীদের টিকা প্রদান করা হবে এবং পরবর্তী ০৮ কর্ম দিবস শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের এবং কমিউনিটির বাদ পড়া কিশোরীদের টিকা প্রদান করা হবে। ক্যাম্পেইনের এইচপিভি টিকাদান সেশন শুক্রবার ও সরকারি ছুটির দিন ব্যতীত প্রতিদিন সকাল ৮:০০ থেকে বিকাল ৩:৩০ পর্যন্ত চলবে।
এছাড়াও বিজ্ঞপ্তিতে ক্যাম্পেইনকে সাফল্যমন্ডিত করতে সিলেট জেলার সকল দপ্তরের কর্মকর্তা, কর্মচারী, গণমাধ্যমের প্রতিনিধিবৃন্দসহ সিলেট জেলার সর্বস্তরের জনগণের সর্বাত্মক সহযোগিতা অংশগ্রহণ কামনা করা হয়।