মৌলভীবাজারের কুলাউড়ায় প্রাতিষ্ঠানিক কোনো সার্টিফিকেট ছাড়াই ৩৫ বছর ধরে ডাক্তার পরিচয়ে প্রতারণা করে আসছিলেন এম আর ওয়াদুদ নামে এক ব্যক্তি। এসএসসি ফেল প্রতারক ওয়াদুদ চেম্বার খুলে বিগত ৩৫ বছর ধরে রোগী দেখছিলেন নিয়মিত। এমনকি সন্তান প্রসব করানোর কাজও করেন তিনি। নামের সাথে বড় করে ‘ডা.’ লিখে উচ্চতর অভিজ্ঞতা হিসেবে ‘মেডিসিন, বক্ষব্যাধি, চর্ম যৌন মা ও শিশু, সার্জারি এবং ডেলিভারিতে অভিজ্ঞ’ উল্লেখ রয়েছে। অথচ এ বিষয়গুলোর কোনোটির উপর পড়াশোনাই নেই তার!
এমন ধৃষ্টতার পরিচয় দিয়ে উপজেলার রবিরবাজারে টিলাগাঁও রোডে নিয়মিত চেম্বার করে রোগী দেখে আসছিলেন প্রতারক ওয়াদুদ। অবশেষে এই প্রতারককে আটক করেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। তবে শুধুমাত্র ২৫ হাজার টাকা জরিমানা করে চেম্বার বন্ধ করতে সতর্ক করে দিয়েছেন ভ্রাম্যমাণ আদালতের ম্যাজিস্ট্রেট।
বৃহস্পতিবার (১ সেপ্টেম্বর) বিকেলে ভ্রাম্যমাণ আদালত তাকে এ জরিমানা করেন।
জানা যায়, এক সাংবাদিকের শারীরিক সমস্যা দেখা দিলে তাকে তাৎক্ষণিকভাবে পার্শ্ববর্তী ওয়াদুদের চেম্বারে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে ডাক্তার পরিচয় দেওয়া ওয়াদুদের গতিপ্রকৃতি দেখে সাংবাদিকের সন্দেহ হয়। আলাপচারিতার একপর্যায়ে ওয়াদুদ জানান, পড়াশোনা করে নয়, শুধুমাত্র রোগী দেখতে দেখতে ‘ডাক্তার’ হয়েছেন তিনি। বেশ অভিজ্ঞতাও রয়েছে তার।
বিষয়টি উপজেলা প্রশাসনকে জানালে ভ্রাম্যমাণ আদালত যায় ওয়াদুদের চেম্বারে। এসএসসি ফেল হয়ে কোনো প্রাতিষ্ঠানিক স্বীকৃতি ছাড়াই স্বাস্থ্যসেবার মতো গুরুত্বপূর্ণ কাজ প্রতারণার মাধ্যমে চালিয়ে যাওয়ার সত্যতা পান ভ্রাম্যমাণ আদালতের ম্যাজিস্ট্রেট। পরে তাকে ২৫ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।
কুলাউড়া উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্টেট মো. মেহেদি হাসান বলেন, সম্পূর্ণভাবে প্রতারণা করে আসছিলেন ওয়াদুদ। পদবীতে পল্লী চিকিৎসক লেখারও কোনো যোগ্যতা নেই তার। তিনি এসএসসিও পাশ করেননি। তবু বড় বড় ডিগ্রি ব্যবহার করে রোগী দেখার সত্যতা পাই আমরা। এমনকি ভারত থেকে সম্পন্ন করা একটি কোর্সের কথা জানালেও সেটার কোনো সনদ দেখাতে পারেননি তিনি। এজন্য তাকে জরিমানা করা হয়েছে।