প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে চা শ্রমিক লাকীর এক চোখে দৃষ্টি ফিরল

গত ৩ সেপ্টেম্বর প্রধানমন্ত্রীর সাথে ভিডিও কনফারেন্সে চা শ্রমিকদের কথা বলার সময় লাকী নারায়ণ কান্নায় ভেঙে পড়ে চোখের সমস্যার কথা জানিয়েছিলেন। সেদিন প্রধানমন্ত্রী তাকে আশ্বাসও দিয়েছিলেন। প্রধানমন্ত্রীর আশ্বাসের পর ফটিকছড়ির চা বাগান শ্রমিক লাকী নারায়ণ দেবনাথের চোখের দৃষ্টি ফিরেছে।

চোখের ছানি অপসারণ করার পর সুস্থ হয়ে বাগানে ফিরেছেন তিনি। বৃহস্পতিবার ফটিকছড়ির কর্ণফুলী চা বাগানের ১০ নম্বর লাইনের নিজের ঘরে ফেরেন লাকী।

এর আগে গেল ৩ সেপ্টেম্বর চা বাগানের শ্রমিকদের সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সে যুক্ত হয়ে তাদের কথা শোনেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সেদিন লাকী নারায়ণ কান্নায় ভেঙে পড়ে প্রধানমন্ত্রীর কাছে নিজের চোখের সমস্যার কথা জানান।

ওইদিন লাকী প্রধানমন্ত্রীকে বলেছিলেন, “আপনি বলেছেন, আপনার বাবা-মা নেই। আমারও বাবা-মা কেউ নেই। একা। বিয়েশাদিও হয়নি। একটা চোখেও দেখি না। একটা চোখে দেখেই, এখন আপনার সাথে কথা বলছি।”

সেদিন প্রধানমন্ত্রীকে চা বাগানে আমন্ত্রণও জানান লাকী। প্রধানমন্ত্রী তখন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মমিনুর রহমানকে লাকীর চোখের চিকিৎসা করানোর নির্দেশ দেন।

শুক্রবার সন্ধ্যায় মোবাইলে ফোনে লাকী আবেগাপ্লুত হয়ে বলেন, “আমার মা মারা গেছেন। প্রধানমন্ত্রী আমার মা। উনার জন্য আমি চোখ ফিরে পেয়েছি। উনার ঋণ আমি কোনোদিনও শোধ করতে পারব না।”

চট্টগ্রাম নগরীর লায়ন্স চক্ষু হাসপাতালে লাকীর ডান চোখের ছানি অপসারণ হয় বলে জানান ফটিকছড়ির ইউএনও সাব্বির রহমান।

লাকী বলেন, “প্রধানমন্ত্রীর সাথে কথা বলার পাঁচ দিন পরই প্রশাসনের লোকজন আমাকে ওই হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেদিন ও তার পরদিন সেখানে চোখের পরীক্ষা হয়। এরপর ২১ সেপ্টেম্বর আমার চোখে অপারেশন হয়।

“সেখানে ডাক্তার থেকে শুরু করে সবাই আমাকে খুব ভালোভাবে চিকিৎসা করেছেন। আমি এখন দেখতে পাচ্ছি। সব খরচ প্রশাসন দিয়েছে। আমাকে ঘরেও পৌঁছে দিয়েছেন উনারা গাড়িতে করে।”

ইউএনও বলেন, “উনি চোখে এখন স্পষ্ট দেখতে পাচ্ছেন। উনাকে ঘরে পৌঁছে দেওয়া হয়েছে। এর সঙ্গে উনার জন্য এক মাসের খাদ্য সামগ্রী দেওয়া হয়েছে। আগামীকালও আমরা উনাকে দেখতে যাব।”