টানা বৃষ্টিপাত ও উজানের পাহাড়ি ঢলে সুনামগঞ্জে হাওর ও নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে নিম্নাঞ্চলে ঢুকছে। ঢলের পানিতে জেলার গুরুত্বপূর্ণ ও সীমান্তবর্তী এলাকার বিভিন্ন নিচু সড়ক ডুবে জনভোগান্তি বেড়েছে। অপরদিকে মাছচাষীরা তাদের পুকুরের মাছ ঢলের পানিতে ভেসে যাওয়ার আতঙ্কে ভুগছেন।
এদিকে পর্যটন এলাকা তাহিরপুর উপজেলার আনোয়াপুর সড়ক ও পার্শ্ববর্তী বিশ্বম্ভরপুরের শক্তিয়ারখলা এলাকার সাবমারসিবল সড়ক পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় জেলা সদরের সঙ্গে যান চলাচল বন্ধ হয়ে পড়েছে। এতে করে বিপাকে পড়েছেন তাহিরপুরের টাঙ্গুয়ার হাওরসহ বিভিন্ন ভ্রমণস্পটে ঘুরতে আসা পর্যটকেরা। অনেকে নৌকা দিয়ে ঝুঁকি নিয়েই সড়ক পারাপার হচ্ছেন।
বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র জানিয়েছে, দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের সব নদ-নদীর পানি সমতল বৃদ্ধি পাচ্ছে। এতে আরো বলা হয়েছে, আগামী ৪৮ ঘণ্টায় দেশের উত্তর পূর্বাঞ্চল এবং তৎসংলগ্ন উজানে ভারি থেকে অতিভারি বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। এতে জেলার সুরমা, কুশিয়ারা, যাদুকাটা, সারিগোয়াইন, সোমেশ্বরি পানি দ্রুত বৃদ্ধি পেয়ে সিলেট, সুনামগঞ্জ, নেত্রকোনা জেলার কিছু নিম্নাঞ্চলে স্বল্পমেয়াদী বন্যার আশঙ্কা করা হচ্ছে।
সুনামগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা যায়, গত তিন দিনে সুনামগঞ্জে ৪১২ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। অপরদিকে ভারতের চেরাপুঞ্জিতে তিন দিনে বৃষ্টি হয়েছে ৫২৩ মিলিমিটার। এছাড়া জেলার ছাতক পয়েন্টে বিপৎসীমার ০.৬৯ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে সুরমার পানি। সুনামগঞ্জ পয়েন্টে সুরমার পানি বিপদসীমার শূন্য দশমিক ০.২৫ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। অপরদিকে সীমান্তবর্তী নদী যাদুকাটার পানি বিশ্বম্ভরপুর উপজেলার শক্তিয়ারখলা পয়েন্টে বিপৎসীমার ১ দশমিক ৫২ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ড সুনামগঞ্জের নির্বাহী প্রকৌশলী মামুন হাওলাদার জানান, ভারতের চেরাপুঞ্জি এবং সুনামগঞ্জে বৃষ্টিপাতের কারণে হাওর ও নদীর পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে। যা আগামী ৪৮ ঘণ্টার ভেতরে বিপদসীমা অতিক্রম করতে স্বল্পমেয়াদী বন্যা দেখা দিতে পারে।∎
সিলেট ভয়েস/এএইচএম