তোফায়েল আহমদ মাছুম, যুক্তরাজ্যের গ্লসটারশায়ারে বসবাস করেন। বাংলাদেশের সুনামগঞ্জ শহরের ষোলঘরে পৈত্রিকনিবাস। গেল বৃহস্পতিবার থেকে উৎকন্ঠায় দিন পার করছেন। বন্যায় তাঁর বাসাও তলিয়ে গেছে। সুনামগঞ্জে বন্যার কারণে বিদ্যুৎ ও মোবাইল নেটওয়ার্ক না থাকায় দেশের স্বজনদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারছেন না তিনি।
তোফায়েল আহমদ মাছুম বলেন, আমাদের বাসায় বন্যার পানি হাটু সমান, মোবাইল নেটওয়ার্ক না থাকায় ইন্টারনেটও নেই। পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারছি না।
শুধু মাছুম না যুক্তরাজ্যে বসবাসকারী হাজার হাজার সিলেট অঞ্চলের মানুষ দুশ্চিন্তায়, উৎকন্ঠায় দিন কাটাচ্ছেন। প্রতি মুহূর্তে ভয়াবহ বন্যায় আক্রান্ত সিলেট, সুনামগঞ্জের স্বজনদের খোঁজ নেয়ার চেষ্ঠা করছেন তাঁরা।
নর্থাম্পটনের বাসিন্ধা সাংবাদিক ফাত্তাহ চৌধুরী ফয়সাল বলেন, চার দিন ধরে উৎকন্ঠায় কাটছে প্রতিটি মুহূর্ত। দেশে আমার বাসাবাড়ি সব বন্যার পানিতে নিমজ্জিত, অনেক চেষ্ঠা করে পরিবারের কারও কোন খবর পাচ্ছি না। দেশের সরকারের কাছে দাবি জানাই, যারা বন্যায় আক্রান্ত তাদের যেন আশ্রয়, খাবারের ব্যবস্থা করেন। মোবাইল নেটওয়ার্কটা সচল করেন, যাতে আমরা দুশ্চিন্তায় থাকা স্বজনরা যোগাযোগ করতে পারি। আমরা প্রবাসীরা বন্যা দুর্গতদের সহায়তার জন্য প্রস্তুত আছি।
ইস্ট লন্ডনের বাসিন্ধা আরিফুর রহমান লিমন বলেন, আমাদের সিলেট শহরের বাসায় বন্যার পানি ঢুকে গেছে । আমার বৃদ্ধ মা আর এক ছোট ভাই পানি বন্ধি অবস্থায় রাত পার করছেন। আর পারি বাড়লে তাদের আশ্রয় কেন্দ্রে যেতে হবে।
এদিকে বন্যায় আক্রান্তদের সহযোগিতারও উদ্যেগ নিচ্ছেন যুক্তরাজ্যে বসবাসকারী প্রবাসীরা।
ঢাকা মেট্রপলিটন পুলিশের সাইবার ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন বিভাগের সাবেক এডিশনাল ডেপুটি কমিশনার এমডি নাজমুল ইসলাম সিলেট বিভাগে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্থদের সহায়তার উদ্যোগ নেয়ার কথা জানিয়ে ফেসবুকে লিখেছেন, যুক্তরাজ্য তথা ইউরোপের আর্থ সামাজিক উন্নয়নে সিলেট অঞ্চলের মানুষের ভূমিকা অনস্বীকার্য। তাছাড়া যুদ্ধের কারণে ইউক্রেনের মানুষের যে দূরাবস্থা তার চেয়ে কোন অংশে কম নয় বন্যা কবলিত এলাকার মানুষের। সমগ্র ইউরোপে বসবাসরত সিলোটি মানুষদের এবং ইউরোপের বিশেষ করে যুক্তরাজ্য সরকারকে এই বন্যা কবলিত ভাগ্য তাড়িত মানুষগুলোর পাশে থাকার আহবান জানাই।
আমরা বারমিংহ্যাম থেকে এ বিষয়ে কাল থেকেই ক্যাম্পেইন শুরু করছি। আশেপাশে যারা আছেন আওয়াজ দিন। বাংলাদেশ, বাংলাদেশের সরকার, বাংলাদেশের জনগণের পাশে থেকে বিদেশ থেকেও আমরা কিছু করতে চাই।