প্রায় দেড়যুগ পর পৈতৃক সম্পত্তির দখল পেয়েছেন সিলেট সিটি কর্পোরেশনের ২৭নং ওয়ার্ডের মোগলাবাজার থানাধিন মজলিসপুর গ্রামের মৃত আব্দুল ওয়াহিদ ওরফে ওয়াহিদ উল্লাহর ছেলে শাহাব উদ্দিন ও তার ভাইবোনেরা। সোমবার (২৫ নভেম্বর) সকালে তাদের সম্পত্তির দখল বুঝিয়ে দেন সিলেট জেলা জজ আদালতের ভারপ্রাপ্ত নাজির মো. খাইরুল ইসলাম। জানা যায়, শাহাব উদ্দিনের পিতা মরহুম ওয়াহিদ উল্লাহর বাড়ির একাাংশের দখল নিয়ে তারই চাচাতো ভাই মনু মিয়ার উত্তরাধিকারী ছালেক আহমদ, রিফা বেগম, রেখা বেগম, লায়েক আহমদ, শাওন আহমদ, ফয়েজ আহমদ ও মনু মিয়ার স্ত্রী সায়রা বেগমের সাথে দীর্ঘদিন থেকে বিরোধ চলছিল।
এই বিরোধের জেরে মনু মিয়ার উত্তরসুরীরা ওয়াহিদ উল্লাহর উত্তরসুরী শাহাব উদ্দিন, আমির উদ্দিন, আজির উদ্দিন, নাছিম উদ্দিন, রুবেল উদ্দিন, লুনা বেগম, হেনা বেগম, বেদেনা বেগম, আয়শা বেগম. ছোটো বিবি ও জলিকা খাতুনকে বিবাদী করে ২০০৫ সালে সহকারি জজ বিশ্বনাথ আদালতে স্বত্ত্ব জারি মামলা দায়ের করেন।দীর্ঘ ১৮ বছর মামলা চলার পর বিচারের বিভিন্ন প্রক্রিয়া শেষে সম্প্রতি আদালত ওয়াহিদ উল্লাহর উত্তরসুরীদের পক্ষে ডিক্রি জারি করেন। এরপর সোমবার সকালে গ্রামবাসী ও পঞ্চায়েতের লোকজনের উপস্থিতিতে সিলেট জেলা জজ আদালতের ভারপ্রাপ্ত নাজির মো. খাইরুল ইসলাম, মোগলাবাজার থানাপুলিশের একটি দলকে নিয়ে মজলিশপুর গ্রামে ওয়াহিদ উল্লাহর বাড়িতে উপস্থিত হন এবং তাদের প্রাপ্য জমি চিহ্নিত করে লাল নিশানা উড়িয়ে দেন। পরে ওয়াহিদ উল্লাহর উত্তরসুরীরা পাকা পিলার দিয়ে নিজেদের অংশের দখল বুঝে নেন। এসময় ভারপ্রাপ্ত নাজির মো. খাইরুল ইসলমা বলেন, আদালতের রায় বাস্তবায়নে ভূমি কমিশনার জায়গা চিহ্নিত করার পর আমি লাল ঝাণ্ডা উড়িয়ে দেই। পরে যাদের পক্ষে রায় হয়েছে তারা দখল বুঝে নিয়েছেন। তিনি বলেন, যেকোনো দখল উচ্ছেদ করতে গেলে কিছুটা সমস্যাতো হয়ই। এখানেও হয়েছিল। তবে তাদের বুঝিয়ে বলার পর তারাও আদালতের নির্দেশ মেনে নিয়েছেন।
এদিকে প্রায় ২০ বছর পর নিজের পৈতৃক সম্পত্তির প্রায় ২৯.৭৫ শতাংশ জমির (মৌজা হবিনন্দি, জেএল নং ১০৭ ও ১৫৮) দখল সমঝে পাওয়ার পর আনন্দে আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন মরহুম ওয়াহিদ উল্লাহর ছেলে শাহাব উদ্দিন। নিজের ভাইবোনদের পক্ষ থেকে তিনি গ্রামবাসীসহ উপস্থিত সবার উদ্দেশ্যে বলেন, আমাদের মৌরসী সম্পত্তি উদ্ধারে আমরা অনেক কষ্ট ও ত্যাগ স্বীকার করেছি। পরিবারের আমিই একমাত্র উপার্জকারী মানুষ হওয়ায় অনেক কষ্ট ঝড়ঝাপ্টা পোহাতে হয়েছে। আমি ন্যায় বিচার পাওয়ায় আদালতের মহামান্য বিচারক, নাজির এবং পুলিশ প্রশাসনকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানাই। তিনি গ্রামবাসীসহ আত্মীয় স্বজন বন্ধু বান্ধব যারা দুঃসময়ে তার পাশে ছিলেন এবং সম্পত্তি উদ্ধারে সার্বিক সহযোগীতা করেছেন তাদের সবার প্রতিও কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন।