জ্বালানি তেলের অস্বাভাবিক মূল্য বৃদ্ধি, গণপরিবহণ খাতে ভাড়া বৃদ্ধি, সকল পণ্যের মূল্য বৃদ্ধি, অসহনীয় লোডশেডিং এবং ভোলায় হত্যার প্রতিবাদে বিএনপির কেন্দ্রীয় ঘোষিত কর্মসূচির অংশ হিসেবে সিলেট নগরীতে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে জেলা বিএনপি।
শুক্রবার (১২ আগস্ট) বিকেলে কোর্ট পয়েন্ট থেকে শুরু হওয়া এই বিক্ষোভ মিছিল নগরীর প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে আম্বরখানা পয়েন্টে সমাবেশের মধ্য দিয়ে শেষ হয়।
সিলেট জেলা বিএনপির সভাপতি আব্দুল কাইয়ুম চৌধুরীর সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট এমরান আহমদ চৌধুরীর সঞ্চালনায় সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা খন্দকার আব্দুল মুক্তাদির।
বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ও সিটি মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী এবং কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সহ-ক্ষুদ্র ঋণ ও কুটিরশিল্প বিষয়ক সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুর রাজ্জাক।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা খন্দকার আব্দুল মুক্তাদির বলেন, বিশ্ব বাজারে জ্বালানি তেলের দাম যখন কমছে তখন বাংলাদেশের সরকার প্রায় দ্বিগুণ পরিমাণে জ্বালানি তেলের দাম বাড়িয়েছে। এটি একটি গণবিরোধী সিদ্ধান্ত। এর বিরুদ্ধে ইতোমধ্যেই জনগণ ফুঁসে উঠেছে। সরকার একদিকে অন্যায় সিদ্ধান্ত গ্রহণ করছে, অন্যদিকে প্রতিবাদ করলে জনগণের ওপর গুলি চালিয়ে তাদেরকে হত্যা করছে। ইতোমধ্যে দুটি তাজা প্রাণ আমাদের মাঝ থেকে বিদায় নিয়েছে। এই অত্যাচার আজ ঘরে ঘরে পৌঁছে গেছে এবং মানুষ ধীরে ধীরে প্রতিবাদে ফুঁসে উঠছে। জ্বালানি তেলের মূল্য বৃদ্ধিতে সাধারণ জনগণ ও দেশের অর্থনীতির ওপর ভয়াবহ প্রভাব পড়েছে, দেশ পড়েছে চরম সংকটে। এই সংকট নিরসনে আওয়ামী লীগ সরকারের পদত্যাগ করার কোনো বিকল্প নেই।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী বলেন, আওয়ামী লীগ বার বার তেল, গ্যাস ও নিত্যপণ্যের মূল্য বৃদ্ধি করছে। তারা জনগণের ভোটে নির্বাচিত না হওয়ার কারণে জনগণের প্রতি তাদের কোনো দায়বদ্ধতা নেই। তাই দেশবাসীকে ঐক্যবদ্ধভাবে আওয়ামী লীগকে প্রতিহত করতে হবে।
সভাপতির বক্তব্যে জেলা বিএনপির সভাপতি আব্দুল কাইয়ুম চৌধুরী বলেন, আওয়ামী লীগের দুঃশাসনে দেশের মানুষ আজ অতিষ্ঠ। অযোগ্য সরকারের দেশবিরোধী অপরিকল্পিত অর্থনৈতিক পরিকল্পনার কারণে দেশ আজ গভীর সংকটে। গত ১৩ বছরে লক্ষ লক্ষ কোটি টাকা দুর্নীতি করে বিদেশে পাচারের ফলে দেশ এখন দেউলিয়া হওয়ার পাথে। আওয়ামী লীগ বলছে দেশ সিঙ্গাপুর হয়ে যাচ্ছে, বাস্তবে দেশ শ্রীলঙ্কার পরিস্থিতির দিকে যাচ্ছে। আন্তর্জাতিক গবেষণা সংস্থার রিপোর্ট অনুযায়ী দেশে পর্যাপ্ত পরিমাণে গ্যাস মজুদ আছে। তারপরও গ্যাস ও ডিজেলের সংকট দেখিয়ে দেশের বিদ্যুৎ উৎপাদন কমিয়ে দেয়া হয়েছে। এই ভয়াবহ পরিস্থিতি থেকে দেশকে বাঁচাতে হলে আওয়ামী লীগকে ক্ষমতা থেকে বিতাড়িত করতে হবে। ইনশাআল্লাহ আওয়ামী লীগকে বিদায় না করে আমরা ঘরে ফিরে যাব না।
এ সময় বক্তব্য দেন, সিলেট জেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক শামীম আহমদ। উপস্থিত ছিলেন, বিএনপি নেতা অ্যাডভোকেট আব্দুল গফফার, অ্যাডভোকেট আশিক উদ্দিন, মাহবুবর রব চৌধুরী ফয়সল, শাহাব উদ্দিন, ইসতিয়াক সিদ্দিকী, সিদ্দিকুর রহমান পাপলু, মামুনুর রশিদ মামুন, ফখরুল ইসলাম ফারুক, আব্দুল আহাদ খান জামাল, মাহবুবুল হক চৌধুরী, আবুল কাশেম, জালাল উদ্দিন, শাহাব উদ্দিন আহমদ, এসটিএম ফখর উদ্দিন, আব্দুর রশিদ, নোমান উদ্দিন মুরাদ, মুশফিকুর রহমান মাহি, শফিকুর রহমান, মাহবুব আলম, মাসুক উদ্দিন আহমদ, ওয়াহিদুজ্জামান চৌধুরী সুফি, কোহিনুর আহমদ, লিলু মিয়া, বশির উদ্দিন, আব্দুল্লাহ মিসবাহ, মুজিবুর রহমান, নজরুল ইসলাম, আব্দুল হাফিজ, জসিম উদ্দিন, আলী আকবর, আজিজুর রহমান, তসলিম আহমদ নেহার, আজিজুর রহমান আজিজ, সুরমান আলী, সালেহা কবির শেপী, অধ্যক্ষ নিজাম উদ্দিন তরফদার, তাজরুল ইসলাম তাজুল, মকসুদ আহমদ মকসুদ, আজিজুর রহমান আজিজ, আলতাফ হোসেন সুমন, ফাহিমা কুমকুম, দেলওয়ার হোসেন দিনার, ফজলে আহসান রাব্বী, রায়হান এইচ খান, মাহবুব আলম প্রমুখ।
সিলেট জেলা বিএনপির ১৮টি ইউনিটের এবং সকল অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের কয়েক হাজার নেতাকর্মী মিছিলে অংশ নেন।