সংস্কারের ৩ মাসেই বেহাল বাদাঘাট-গড়কাটি সড়ক

সংস্কারের তিন মাস পার না হতেই দেড় কিলোমিটার রাস্তার একটি অংশ ধসে পড়েছে। নিম্নমানের বিটুমিন ব্যবহার করায় সড়কের বিভিন্ন অংশে কার্পেটিং উঠে গিয়ে খানাখন্দ তৈরি হয়েছে। ৫৭ লাখ টাকা খরচ করে সংস্কারের এই বেহাল অবস্থা তাহিরপুর উপজেলার বাদাঘাট-গড়কাটি সড়কের। জনগুরুত্বপূর্ণ এ সড়কটি যাদুকাটা নদী তীরবর্তী ১০টি গ্রামের মানুষের যাতায়াতের অন্যতম মাধ্যম।

উপজেলা প্রকৌশল অফিস বলছে, অতিবৃষ্টির কারনে হয়তো রাস্তার এক অংশ ধসে পড়েছে। এদিকে সড়কটি সংস্কারের তিন মাস পরেই ভেঙে গেছে এ কথা শুনে ‘আমি এখন ব্যস্ত আছি’ বলে ফোন কেটে দেন ঠিকাদার নায়েব আলী।

স্থানীয়দের অভিযোগ, সংস্কার কাজে নিম্নমানের পাথর ও ইঠের খোয়া ব্যবহার, ঠিকমতো বালু না দেওয়া ও ঠিকাদার উপস্থিত না থেকে স্থানীয়দের দিয়ে কাজ করানোর কারনে সড়কটির এই বেহাল অবস্থা হয়েছে। তাছাড়া নিম্নমানের বিটুমিন ব্যবহার করায় সড়কের বিভিন্ন অংশ থেকে কার্পেটিং উঠে গিয়ে খানাখন্দ ও গর্ত তৈরি হয়েছে।

উপজেলার প্রসিদ্ধ ব্যবসা কেন্দ্র বাদাঘাট বাজার হয়ে তাহিরপুর উপজেলা সদর ও বাদাঘাট ইউনিয়ন পরিষদে যেতে এ সড়কটি ব্যবহার করতে হয়। তাছাড়া বাদাঘাট সরকারি কলেজ, বাদাঘাট পাবলিক উচ্চ বিদ্যালয়, মোল্লাপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় , গড়কাটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও জৈতাপুর কমিউনিটি ক্লিনিকে চলাচলের সড়কও এটি।

সরেজিমেন গিয়ে দেখা যায়, সড়কটির এক অংশে একটি কালভার্ট রয়েছে। কালভার্ট লাগোয়া রাস্তার ওই অংশটি ভেঙে গিয়ে যান চলাচল ব্যহত হচ্ছে। তাছাড়া সড়কের বিভিন্ন অংশে বিটুমিন উঠে গিয়ে খানাখন্দ সৃষ্টি হয়েছে। সড়কটি ভেঙে গিয়ে ঝুকিপূর্ণ হওয়ায় ভাঙা অংশে স্থানীয়রা লাঠি পুঁতে রেখেছেন।

তাহিরপুর এলজিইডি সূত্রে জানা গেছে, ২০২২ সালের মার্চে ৫৭ লাখ টাকা ব্যয়ে বাদাঘাট-গড়কাটি সড়কের এক দশমিক তিন কিলোমিটার সংস্কারের কাজ পায় সুনামগঞ্জের ঠিকাদারি প্রতিষ্টান সাবিনা এন্টারপ্রাইজ। চলতি বছরের এপ্রিলে এর সংস্কার কাজ শেষ হয়।

গড়কাটি গ্রামের বাসিন্দা ও মুক্তিযোদ্ধা সন্তান সেতারা মিয়া মিয়া বলেন, সড়কটির সংস্কার কাজে অনেক দুর্নীতি হয়েছে। ঈদের আগেরদিন রাতে বৃষ্টি হয়েছিল। এই সামন্য বৃষ্টিতেই রাস্তাটি ভেঙে গেছে। নিম্নমানের উপকরন দিয়ে কাজ করার সময় ঠিকাদারকে আমরা বাধা দিলেও কাজ হয়নি।

বাদাঘাট ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. নিজাম উদ্দিন বলেন, জনগুরুত্বপূর্ণ এই সড়কটির অত্যন্ত নিম্নমানের উপকরণ দিয়ে সংস্কার কাজ হয়েছে। যে কারনে সংস্কারের কিছু দিন পরেই সড়কটির এই বেহাল অবস্থা হয়েছে যা খুবই দুঃখজনক। সড়কটি দ্রুত মেরামত না করা হলে জনদুর্ভোগ বাড়বে।

তাহিরপুর উপজেলা প্রকৌশলী আরিফ উল্লাহ খান বলেন, সড়কটির খোঁজ নিতে লোক পাঠানো হবে। ঠিকাদারের জামানত জমা রয়েছে। ভাঙা অংশ ঠিক করে দিতে ঠিকাদারকে চিটি দেওয়া হবে। এবং কোনো অনিয়ম হলে ঠিকাদারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সিলেট ভয়েস/এএইচএম