মৌলভীবাজারে হাকালুকি হাওর ঘেষা কুলাউড়া, জুড়ী ও বড়লেখা উপজেলা। বন্যার পানি কমছে ধীর গতিতে কমায় হাওর তীরবর্তী বন্যা উপদ্রুত অঞ্চলের কুলাউড়া-জুড়ী-বড়লেখা আঞ্চলিক মহাসড়কের ৪২ কিলোমিটার বেশীর বন্যার পানিতে তলিয়ে আছে। ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে বাস-ট্রাকসহ বিভিন্ন যানবাহন। এতে রাস্তার ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে। এমনকি ত্রাণ সহায়তায়ও কষ্ট পোহাতে হচ্ছে।
জানা যায়, গত ১৬ জুন থেকে হাকালুকি হাওরে দ্রুতগতিতে পানি বাড়তে থাকে। এতে তিন দিনের মধ্যে কুলাউড়া-বড়লেখা সড়কে ভুঁয়াই, জুড়ী বাজার পয়েন্ট, রামপাশা, পুশাইনগর, উত্তর কুলাউড়া উচ্চ বিদ্যালয়সহ বিভিন্ন স্থান জলমগ্ন হয়ে পড়ে। এরপর হাওরের পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় কয়েক ঘন্টার ব্যবধানে এ রাস্তার ৪২ কিলোমিটারের বেশীর ভাগ নিমজ্জিত হয়ে পড়ে। এতে ছোট ও বড় অংশ মিলিয়ে সড়কের অন্তত ৫০ স্থানে পানি ওঠেছে।
পানিতে নিমজ্জিত রাস্তা দিয়ে ভারী যানবাহন চলাচল করায় মারাত্মক ক্ষয়ক্ষতি হচ্ছে। বিশেষ করে কুলাউড়া-বড়লেখা সড়কের অনেক স্থানে হাঁটু ও উরুসম পানি থাকায় সাধারণ মানুষ অবরুদ্ধ হয়ে পড়েছেন।
জুড়ীর ভোগতেরা গ্রামের অধিবাসী জাহিদ হাসান রাজু জানান, ‘বানের পানিতে ভাসার সাথে সাথে জুড়ীতে ৫দিন বিদ্যুৎহীন ছিলাম। গত দুই দিনে দুই আড়াই ইঞ্চি পানি কমেছে। কিন্তু হাকালুকিপাড়ের জুড়ীর বেলাগাঁও, শাহাপুর, নয়াগ্রাম জাঙ্গীরাই, নিশ্চিন্তপুর, জায়ফুরনগর, ভুঁয়াই অন্তত ২০টি গ্রামের মানুষ পানিবন্দি অবস্থায় আছেন।’
এছাড়া ডুবে যাওয়া মৌলভীবাজার-কুলাউড়া, জুড়ী ভায়া বড়লেখা সড়ক থেকে পানি খুব ধীর গতিতে নামছে। এতে সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রার স্বাভাবিক গতি থমকে গেছে। ঘরবন্দি হয়ে পড়েছেন এলাকাবাসী। সরকারি ও ব্যক্তি এবং বিভিন্ন সংগঠনের ত্রাণ তৎপরতায় সুফল ভোগ করে বেঁচে আছেন বানবাসী মানুষ।
জুড়ীর কামরুল হাসান মিজু জানান, বড়লেখা ও জুড়ী উপজেলাবাসীর জেলা সদর তথা দেশের যে কোন স্থানের সাথে যাতায়াতের প্রধান সড়ক মৌলভীবাজার-বড়লেখা সড়ক। এ সড়কের বিভিন্ন স্থানে হাঁটু থেকে কোমড়সম পানি থাকায় যানবাহন কম চলাচল করছে। এতে অনেক দুর্ভোগ লাঘব করে এ এলাকার সাধারণ মানুষকে দৈনিন্দন জীবনের গুরুত্বপূর্ণ কাজ সাড়তে হচ্ছে।
সড়ক ও জনপথ এর (সওজ) নির্বাহী প্রকৌশলী জিয়া উদ্দিন জানান, কুলাউড়া-বড়লেখার ৫৪ কিলোমিটারের মধ্যে ৪২ কিলোমিটার অধিকাংশ জায়গায় সড়কের ওপরের দু’টি স্তর হলে এই সড়ক মেরামতে কমপক্ষে ৫০ কোটি টাকা। যদি রাস্তার তিন স্তরই নষ্ট হয় তবে প্রায় ৮০ কোটি টাকা ব্যয় হবে।
তিনি আরও জানান- সওজ’র চিফ ইঞ্জিনিয়ার সিলেটে আসায় ছবি তুলে মৌলভীবাজার-বড়লেখা সড়কের বেহাল অবস্থা দেখানো হয়েছে। পানি কমার পরে রাস্তা মেরামতে প্রকল্প গ্রহণ করা হবে। বিকল্প কোন সুযোগ না থাকায় জলমগ্ন সড়ক ব্যবহার করে দুরপাল্লার বাস, ট্রাক, লোকাল বড় যানবাহন চলাচল করায় রাস্তার মারাত্মক ক্ষতি হচ্ছে বলে তিনি জানান।