স্বাধীনতা পরবর্তী পঞ্চাশ বছরে ক্রীড়াক্ষেত্রে সবচাইতে লক্ষণীয় যে পরিবর্তনটি পরিলক্ষিত হয়েছে তা হচ্ছে খেলাধুলাকে কেন্দ্র করে সাধারণ মানুষের আগ্রহ, যুবসমাজের খেলাধুলাকে পেশা হিসেবে গ্রহণ করার মানসিকতা এবং সর্বোপরি আন্তর্জাতিক ক্রীড়াক্ষেত্রে সফলতার তীব্র আকাঙ্ক্ষা। দেশের মানুষ এখন কেবল আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করাকে কিংবা জাতীয় দলের তুলনামূলক ভালো খেলার সক্ষমতাকে যথেষ্ট মনে করে না। এখন সবাই সফলতা চায়, চায় আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে জাতীয় পতাকার সগৌরব উপস্থিতি। আর তাই আমরা দেখতে পাই বাবা-মায়ের হাত ধরে শিশু, কিশোর বা কিশোরীদের খেলার মাঠে সরব উপস্থিতি, ডাক্তার কিংবা ইঞ্জিনিয়ার হওয়ার পাশপাশি সন্তান খেলাকে পেশা হিসেবে গ্রহণ করতে চাইলে তাতেও অভিভাবকের সস্নেহ সম্মতি।
আমাদের অগোচরেই ধীরে ধীরে খেলাধুলা আমাদের দৈনন্দিন জীবনের অংশে পরিণত হয়েছে, দৈনিক পত্রিকার দুই পাতা জুড়ে থাকছে এর খবর। এমনকি শুধু খেলাধুলাকে কেন্দ্র করে দাড়িয়ে যাচ্ছে স্পোর্টস চ্যনেল। সামগ্রিক দৃষ্টিভঙ্গির এই পরিবর্তনের কারণে বর্তমান সময়ের একজন সফল ক্রীড়াবিদের গ্রহণযোগ্যতা আগের তুলনায় অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে এবং তাদের সামাজিক অবস্থানও এখন অন্য যেকোনো পেশায় সফল মানুষদের সমতুল্য বা ক্ষেত্র বিশেষে বেশিও। আর তাই একজন সাকিব আল হাসান, একজন সাবিনা খাতুন, একজন রোমান সানা কিংবা একজন সিদ্দিকুর রহমান আজ সমাজে এতটা সমাদৃত, সম্মানিত।
একথা সত্যি যে ছেলেদের ক্ষেত্রে ব্যাপারটি যতটা সহজ ছিল মেয়েদের ক্ষেত্রে ততটা নয়। কিন্তু দিন শেষে মেয়েরাও পিছিয়ে থাকেনি। ক্রিকেটে আমাদের মেয়েদের এশিয়া কাপ জয় কিংবা নারী ফুটবলে নিজেদের যোগ্যতার চূড়ান্ত প্রমাণ দিয়ে সাফ ফুটবলে চ্যাম্পিয়ন হওয়া এবং এই সফলতাকে ঘিরে সাধারণ মানুষের উচ্ছ্বাস-উন্মাদনা এ কথাই প্রমাণ করে। ভারোত্তোলনে মাবিয়া আক্তারের এস এ গেমসে অশ্রুসজল চোখে স্বর্ণপদক গ্রহণের সেই দৃশ্য আমরা নিশ্চয়ই ভুলে যাইনি কিংবা অতিসম্প্রতি আরচারিতে দিয়া সিদ্দিকীর বিশ্ব অলিম্পিকে অত্যন্ত সম্মানজনক অংশগ্রহণ আন্তর্জাতিক ক্রীড়াক্ষেত্রে আমাদের আরও সুন্দর ভবিষ্যতেরই ইঙ্গিত বহন করে।
ক্রীড়াক্ষেত্রে আমাদের যত অর্জন তার পেছনে ক্রীড়াবিদ, সংগঠক বা সমর্থকদের অবদান অনস্বীকার্য। এর পাশাপাশি বিভিন্ন ব্যক্তি মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠানও স্পন্সর হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখে চলেছে। কিন্তু তারপরও এর অন্যতম চালিকাশক্তি হিসেবে আমরা সরকারকেই দেখতে পাই। কয়েকটি খেলা বাদ দিলে বাকি প্রায় সব খেলাই সরকারি পৃষ্ঠপোষকতায় পরিচালিত হয়ে থাকে। বিভিন্ন ফেডারেশন এবং সংগঠনের মাধ্যমে আয়োজিত প্রতিযোগিতা, খেলোয়াড় বাছাই, প্রশিক্ষণ ক্যাম্প পরিচালনাসহ আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ সংক্রান্ত সকল ব্যয়ভার সরকারই বহন করে থাকে।
এছাড়া ক্রীড়া স্থাপনা নির্মাণের ক্ষেত্রেও সরকার গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখে চলেছে। বর্তমান অর্থবছরেও বরাদ্দকৃত বাজেটের একটি বড় অংশ ব্যয় হবে বিভাগীয় পর্যায়ে আধুনিক স্টেডিয়াম, জিমনেশিয়াম, সুইমিংপুল এবং উপজেলা পর্যায়ে শেখ রাসেল মিনি স্টেডিয়াম নির্মাণ বাবদ। ক্রীড়া মন্ত্রণালয় অধীনস্থ ‘জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ’ এই স্থাপনাসমূহ নির্মাণের ক্ষেত্রে এবং ‘ক্রীড়া পরিদপ্তর’ তৃণমূল পর্যায় থেকে বিভিন্ন খেলা আয়োজনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে চলেছে।
সরকারের একটি স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান হিসেবে বাংলাদেশ ক্রীড়া শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানও ইতোমধ্যে একটি ক্রীড়া প্রশিক্ষণ কেন্দ্র হিসেবে দেশে-বিদেশে প্রচুর সুনাম অর্জন করেছে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ইতোমধ্যেই প্রতিষ্ঠানটির কর্মকাণ্ডে সন্তুষ্টি প্রকাশ করে এটিকে ক্রীড়াক্ষেত্রে একটি মডেল হিসেবে বিবেচনায় নিয়ে অনুরূপ আরও প্রশিক্ষণ কেন্দ্র নির্মাণ করে দেশব্যাপী ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকা মেধাবী খেলোয়াড়দের জন্য আধুনিক ক্রীড়া প্রশিক্ষণের সুযোগ তৈরির নির্দেশনা প্রদান করেছেন। বর্তমানে প্রধান কেন্দ্র ঢাকাসহ সারা দেশব্যাপী ছয়টি কেন্দ্র রয়েছে এবং ময়মনসিংহ ও রাজশাহীতে আরও দুটি নতুন কেন্দ্র স্থাপনের কাজ চলছে। বলাই বাহুল্য, বিকেএসপি পরিচালনার সার্বিক ব্যয়ভারও সরকারই বহন করে।
তবে সরকারের ক্রীড়া কর্মকাণ্ড কেবলমাত্র বাজেট প্রণয়ন, ক্রীড়া স্থাপনা নির্মাণ বা বিভিন্ন সংগঠনকে আর্থিক সহযোগিতা প্রদানের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকেনি। আমরা বারবার দেশের ক্রীড়াবান্ধব প্রধানমন্ত্রী, ক্রীড়ামন্ত্রীসহ অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিবর্গকে দেখেছি অধীর আগ্রহ নিয়ে দর্শকদের সারিতে অবস্থান নিতে, ক্রীড়াবিদদের সফলতা বা ব্যর্থতায় তাদের পাশে দাঁড়াতে। দেখেছি সহানুভূতিশীল প্রধানমন্ত্রীকে দুস্থ অথবা অসুস্থ ক্রীড়াবিদদের প্রতি সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিতে কিংবা যেকোনো ইতিবাচক অর্জনকে স্বীকৃতি দিতে, দুই হাত ভরে পুরস্কৃত করতে। এ বছর থেকে ‘জাতীয় ক্রীড়া পুরস্কার’ এর পাশাপাশি ‘শেখ কামাল ক্রীড়া পরিষদ পুরস্কার’ এর সংজোযন সরকারের ক্রীড়াপ্রীতিরই পরিচায়ক। খেলাধুলার প্রতি রাষ্ট্রের এই দৃষ্টিভঙ্গি ও গুরুত্ব প্রদান সামগ্রিকভাবে একটি ইতিবাচক ক্রীড়া আবহ তৈরিতে এবং সমাজে ক্রীড়া ও ক্রীড়া সংশ্লিষ্ট সকলকে আরও মর্যাদার আসনে অধিষ্ঠিত করার ক্ষেত্রে বিশেষ ভূমিকা পালন করছে।
স্বাস্থ্য, শিক্ষা, অর্থনীতি এসবের পাশাপাশি ক্রীড়াক্ষেত্রে অর্জিত সফলতাকেও বর্তমান যুগে একটি আধুনিক ও সফল রাষ্ট্রের উন্নয়নের গুরুত্বপূর্ণ মাপকাঠি হিসেবে বিবেচনা করা হয়। অর্থনৈতিক উন্নয়নের ফলশ্রুতিতে উন্নয়নশীল রাষ্ট্র হিসেবে বাংলাদেশ আজ যেমন সমাদৃত, ঠিক তার পাশাপাশি আমাদের রাষ্ট্রীয় ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করার ক্ষেত্রে ক্রিকেটের ভূমিকাও অনুরূপ। পৃথিবীর অনেক দেশকেই আমরা চিনি বা জানি কেবল ক্রীড়া ক্ষেত্রে সফলতার জন্য, সেই দেশ উন্নত কিংবা অনুন্নত কি না সেই বিবেচনায় নয়। শুধু তা-ই নয়, ক্রীড়াক্ষেত্রে আমাদের নারী ক্রীড়াবিদদের এই যে সফলতা, তা কেবলমাত্র খেলাধুলায় আমাদের মেয়েদের উন্নতির কথাই বলে না, পাশাপাশি আমাদের সমাজে মেয়েরা যে প্রত্যেক ক্ষেত্রেই এমনকি খেলাধুলার মতো একটি জটিল বিষয়েও পুরুষদের পাশাপাশি সমান তালে এগিয়ে চলেছে এবং সব বিষয়ে তারা যে সমান অংশীদার, সেই বার্তাও দেয়। এটি অত্যন্ত সম্মানজনক এবং অনুকরণীয়।
শুধু দেশের ভাবমূর্তি নয়, দু’টি দেশের মধ্যে বিরাজমান রাজনৈতিক সমস্যা নিরসনে অথবা চলমান বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ককে আরও দৃঢ় করার ক্ষেত্রেও আন্তর্জাতিক ক্রীড়াঙ্গনকে ব্যবহারের নজির রয়েছে। তবে কেবলমাত্র আন্তর্জাতিক ক্রীড়া ক্ষেত্রে সফলতাই খেলাধুলায় অংশগ্রহণের বা খেলাধুলাকে পৃষ্ঠপোষকতার একমাত্র উদ্দেশ্য নয়। এর পাশাপাশি শারীরিক এবং মানসিক সুস্থতাসম্পন্ন জনগোষ্ঠী তৈরি করার ক্ষেত্রেও ক্রীড়ার ভূমিকা অপরিসীম। কিশোর এবং যুবসমাজকে মাদক বা সন্ত্রাসমুক্ত রাখা, তাদের নৈতিক স্খলনের হাত থেকে রক্ষা করে সামাজিক এবং মানবিক গুনসম্পন্ন মানুষ হিসেবে গড়ে তোলার ক্ষেত্রে খেলাধুলার কোনো বিকাল্প নেই। আর তাই আমাদের তরুণ সমাজকে ক্রীড়ামুখি করার ব্যপারে উদ্যোগ গ্রহণের জন্য আমরা আমাদের সরকারপ্রধানকে বারবার বলতে শুনি। যে উদ্যোগের অংশ হিসেবে খেলাধুলাকে বিকেন্দ্রীকরণের লক্ষ্যে বর্তমানে ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের অধীনে দেশব্যাপী ক্রীড়া সুবিধাদি নির্মাণসহ বিভিন্ন ক্রীড়া কার্যক্রম চলমান।
বর্তমান প্রেক্ষাপটকে বিবেচনা করলে অদূর ভবিষ্যতে বাংলাদেশ ক্রীড়াক্ষেত্রে আরও সুনাম অর্জনের স্বপ্ন দেখতেই পারে। তবে এজন্য যেটি প্রয়োজন তা হচ্ছে দীর্ঘ পরিকল্পনা। এক্ষেত্রে প্রথমেই সম্ভাবনাময় খেলাগুলিকে চিহ্নিত করা অত্যন্ত জরুরি। দুই-একটি খেলা বাদ দিলে নিকট ভবিষ্যতে দলীয় খেলায় সফলতার সম্ভাবনা খুব একটা নেই বললেই চলে। আর সে কারণেই সম্ভাবনাময় ব্যক্তিকেন্দ্রিক কয়েকটি খেলাকে ঘিরে পরিকল্পনা সাজানো প্রয়োজন। আন্তর্জাতিক মানের খেলোয়াড় প্রস্তুত প্রক্রিয়াটি অত্যন্ত ব্যয়সাপেক্ষ। আর তাই নির্দিষ্ট কয়েকটি খেলায় মনোযোগী হওয়াই যুক্তিসঙ্গত এবং সে অনুযায়ী বিনিয়োগ হওয়া জরুরি। এই বিনিয়োগ অত্যন্ত নিয়মতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত খেলাসমূহের ক্রীড়া স্থাপনা নির্মাণ থেকে শুরু করে মানসম্পন্ন অভ্যন্তরীণ প্রতিযোগিতা ও প্রশিক্ষণের আয়োজনসহ আন্তর্জাতিক পরিবেশে খাপ খাওয়ানো, সব ব্যাপারেই হওয়া বাঞ্ছনীয়।
ক্রীড়াসামগ্রীর সহজলভ্যতা শিশু-কিশোরদের খেলাধুলায় অংশগ্রহণে আগ্রহী করে তোলার একটি অন্যতম পূর্বশর্ত। দুঃখজনক হলেও সত্য যে আমদানিনির্ভর হওয়ায় আমাদের দেশে ক্রীড়াসামগ্রীর মূল্য আশপাশের দেশের তুলনায় অনেক বেশি। জনপ্রিয় খেলাগুলির ক্ষেত্রে এটি আরও বেশি প্রযোজ্য। এর ফলে ইচ্ছা থাকলেও আর্থিক কারণে খেলাধুলা থেকে বঞ্চিত হওয়া আথবা তুলনামূলক স্বল্প মূল্যের এবং নিম্নমানের ক্রীড়াসামগ্রীর ব্যবহার, এটিই হচ্ছে আমাদের খেলার মাঠের দৈনন্দিন চিত্র। এর ফলে ‘বেইস ক্রিয়েশন কনসেপ্ট’ দারুণভাবে বিঘ্নিত হয়। এর থেকে পরিত্রাণ পেতে চাইলে প্রথমত আমদানিকৃত ক্রীড়াসামগ্রীর ওপর থেকে ট্যাক্স কমানোর ব্যপারটিভেবে দেখা যেতে পারে এবং তার পাশাপাশি সাধারণ মানের ক্রীড়া উপকরণ আমরা দেশীয়ভাবে প্রস্তুত করতে পারি কি না তাও ভেবে দেখা প্রয়োজন।
শিশু, কিশোর এমনকি যুবকদেরও একটি বড় অংশ এই মানের ক্রীড়াসামগ্রী ব্যবহারে অভ্যস্তু। আমরা যদি আপাতত সাধারণ থেকে মধ্যম মানের ক্রীড়া উপকরণ প্রস্তুতিতেও সক্ষম হই, তাহলে নিশ্চিতভাবেই আমাদের খেলার মাঠের চিত্র বদলে যাওয়ার ক্ষেত্রে তা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। তার পাশাপাশি বৈদেশিক মুদ্রার সাশ্রয় হওয়া এবং নতুন কাজের ক্ষেত্র তৈরি হওয়ার ব্যপারটি তো আছেই।
তবে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ যে বিষয়টি তা হচ্ছে প্রান্তিক পর্যায় থেকে নিয়মিত খেলাধুলার আয়োজন নিশ্চিত করা। উপজেলা ও জেলা পর্যায়ে ক্রীড়া কার্যক্রম আয়োজন বাধ্যতামূলক করা প্রয়োজন। সত্যিকার মেধাবীরা যেন রাষ্ট্রের এই বিনিয়গের সুফল পেতে পারে তা নিশ্চিত করতে হবে। এখানে সততা ও সচ্ছতার বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। রাষ্ট্র যেন তার সবচেয়ে মেধাবী সন্তানদের সেবা থেকে বঞ্চিত না হয় তা নিশ্চিত করা অত্যন্ত জরুরি।
খেলাধুলা একটি বিজ্ঞানভিত্তিক বিষয়। তাই এ সংক্রান্ত সব প্রশ্নের উত্তর বা সমাধান যৌক্তিক হওয়া বাঞ্ছনীয় এবং স্বভাবতই এখানে আবেগপ্রসূত সিদ্ধান্ত নেওয়ার সুযোগ নেই। আর তাই একটি উপযুক্ত পরিবেশ সৃষ্টির লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় মানবসম্পদ অর্থাৎ নীতিনির্ধারক থেকে শুরু করে সংগঠক, কোচ, ফিটনেস ট্রেইনার, ফিজিও, আম্পায়ার, রেফারি, মাঠকর্মী আথবা ক্রীড়াবিজ্ঞানী প্রত্যেকেই যেন নিজ নিজ ক্ষেত্রে যোগ্য থেকে যোগ্যতর হিসেবে নিজেদের গড়ে তুলতে পারে সেটিও নিশ্চিত করা প্রয়োজন। বাংলাদেশ অলিম্পিক অ্যাসোসিয়েশন একটি অ্যাডুকেশন প্যনেলের মাধ্যমে এই কাজের তদারকি করতে পারে। এর পাশাপাশি আমাদের সার্বিক ক্রীড়া কার্যক্রম পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে বিশ্লেষণের জন্য কেন্দ্রীয়ভাবে একটি রিসার্চ সেল গঠন করাও জরুরি। এর মাধ্যমে আমাদের ক্রীড়া সংক্রান্ত সকল কার্যক্রমের বিশ্লেষণ, মূল্যায়ন এবং ভবিষ্যতে করণীয় সম্পর্কে সুস্পষ্ট দিকনির্দেশনার সুযোগ তৈরি হবে।
খেলাধুলাকে ঘিরে সাধারণ মানুষের আকাঙ্খা এবং সরকারের পৃষ্ঠপোষকতাকে পুঁজি করে ক্রীড়া সংশ্লিষ্ট সবাই যদি সততা এবং সচ্ছতার সাথে সার্বিক ক্রীড়া কার্যক্রম পরিচালনায় এগিয়ে আসে, তাহলে অনেক সীমাবদ্ধতা সত্ত্বেও ভবিষ্যতে কোনো একদিন বিশ্বকাপ কিংবা অলিম্পিক পদক জয় নিশ্চিতভাবেই সম্ভব। বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে যে লাখো শহিদের ত্যাগের বিনিময়ে আমাদের আত্মপরিচয়ের সুযোগ পেলাম এবং পেলাম একটি স্বাধীন রাষ্ট্র, তাদের এইটুকু প্রতিদান তো আমরা দিতেই পারি।
লেখক : ক্রীড়াবিদ