তাদের মতে, ‘করোনার পূর্বে সাংস্কৃতিক জোটের নেতাদের সাথে বিভিন্ন সংকট, সমস্যা নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন আলোচনা করতেন। তাদের মতামতের গুরুত্ব দিতেন। কিন্তু বর্তমানে উপাচার্য বিরোধী আন্দোলনের পর থেকে তাদের সাথে আলোচনায় বসতে গাফিলতি করছেন প্রশাসনের নেতারা। সাংস্কৃতিক সংগঠনগুলোর বিভিন্ন সমস্যা সম্পর্কে প্রশাসনকে একাধিকবার অবগত করা হলেও তা সমাধানে গুরুত্ব দিচ্ছেন না কর্তৃপক্ষ। ফলে সাংস্কৃতিক সংগঠনগুলোর সাথে প্রশাসনের সমন্বয়হীনতা রয়েছে বলে মনে করছেন তারা।
এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ে সাংস্কৃতিক কার্যক্রম বাড়ানোর জন্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন থেকে কোনো ধরণের সহযোগিতা পাচ্ছে না অভিযোগ করেছেন জোটের নেতারা। সাংস্কৃতিক চর্চা প্র্যাকটিসের জন্য পর্যাপ্ত কক্ষ নেই। বিশ্ববিদ্যালয়ের ইউনিভার্সিটি সেন্টারের শৌচাগারগুলোর অবস্থা নাজুক। ক্যাম্পাসের একাডেমিক ভবনের পাশাপাশি শিক্ষার্থীরা যেখানে সবসময় বিচরণ করে থাকেন সেখানে নিরাপদ পানির ব্যবস্থা নেই। এসব সংকট সমাধানে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর, ছাত্র উপদেশ ও নির্দেশনা পরিচালককে একাধিকবার জানানো হলেও দৃশ্যমান কোনো সমাধান মেলে নি।’
রবিবার দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয় প্রেসক্লাব কার্যলয়ে সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময়কালে এসকল কথা বলেন জোটের নেতারা।
জোটের নেতৃবৃন্দ বলেন, ‘ইউনিভার্সিটি সেন্টারের ৩টি কক্ষের মধ্যে সাংস্কৃতিক কার্যক্রম চালাতেন তারা। বর্তমানে দুটি কক্ষ দিয়েই চলেছে সাংস্কৃতিক কার্যক্রম। বড় কক্ষটি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অফিসের কনফারেন্স রুম বানানো হয়েছে। যদিও সেখানে খুব একটা মিটিং হয় না বলে জানা গেছে। কক্ষ সংকটের বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ইসরাত ইবনে ইসমাঈলকে বারবার জানানো হলেও তিনি আগের প্রক্টরের সিদ্ধান্ততে অটুট রয়েছেন বলে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন সাংস্কৃতিক জোটের নেতারা। এ যেনো পদের ব্যক্তি পরিবর্তন হলেও সিদ্ধান্ত অপরিবর্তনীয় বলে মন্তব্য করেছেন নেতারা।’
এদিকে দীর্ঘ দুই বছর ধরে সাংগঠনিক সপ্তাহ অনুষ্ঠিত না হওয়ায় নতুন সদস্য পাচ্ছে না সংগঠনগুলো। ফলে সাংস্কৃতিক অঙ্গন থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীরা দূরে সরে যাচ্ছে বলে অভিমত তাদের। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনের অনুমতি না পাওয়ায় নতুন সদস্যও নিতে পারছে না সংগঠনগুলো। ফলে সদস্য ছাড়াই চলছে তাদের কার্যক্রম।
এছাড়া বিভিন্ন অনুষ্ঠানের জন্য প্রশাসন থেকে মিনি অডিটরিয়াম, কেন্দ্রীয় মিলানায়ন অথবা বিভিন্ন বিভাগের গ্যালারি রুমগুলো বরাদ্দ চাইলে তাতেও গরিমসি করা হয় বলে জানিয়েছেন তারা। ফলে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন পরোক্ষভাবে ক্যাম্পাসের সাংস্কৃতিক কার্যক্রম বন্ধ করে দিতে চাচ্ছে বলে অভিমত ব্যক্ত করেন তারা।
মতবিনিময়কালে উপস্থিত ছিলেন, সাংস্কৃতিক জোটের সমন্বয়ক ও কিনের সভাপতি ইফরাতুল হাসান রাহিম, স্পোর্টস সাস্ট এর সাধারণ সম্পাদক সাফায়েত, দিক থিয়েটারের সভাপতি আব্দুল বাছিত সাদাফ, নোঙরের সাধারণ সম্পাদক হাসিবুল আলাম চৌধুরী (শান্ত), রিমের সভাপতি আশিক হোসেন (মারুফ), আজ মুক্তমঞ্চের সভাপতি সাদনান রহমান (শিখন), স্বপ্নোত্থানের সভাপতি ধীমান দাস দিব্য, গ্রীন এক্সপ্লোর সোসাইটির সভাপতি মো. মাকসুদুল হোসেন (শাওন), চোখফিল্মের সাধারণ সম্পাদক মো. ইমরুল হাসান, ট্যুরিস্ট ক্লাবের সভাপতি আশরাফ ইবনে হেলাল মিনহাজ, সাস্ট সায়েন্স এ্যারেনার সভাপতি মো. আবু কাউছার, কার্টুন ফ্যাক্টরির সভাপতি ¯্নহোশিস পাল, শাহজালাল ইউনিভার্সিটি ফোটোগ্রাফার্স এসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. মশিউর রহমান ও মাভৈঃ আবৃতি সংসদের সাধারণ সম্পাদক দীপংকর দাস বৃন্ত।
এতে আরো উপস্থিত ছিলেন, শাবি প্রেসক্লাবের সভাপতি নাজমুল হুদা, সহ-সভাপতি রাশেদুল হাসান, সাধারণ সম্পাদক আবদুল্লা আল মাসুদ, যুগ্ম সম্পাদক নুরুল ইসলাম রুদ্র, কোষাধ্যক্ষ হাসান নাঈম, দপ্তর সম্পাদক জুবায়েদুল হক রবিন, কার্যকরী সদস্য তানভীর হাসান, শাদমান শাবাবসহ অন্য সদস্যরা।
এসময় প্রেসক্লাবের সভাপতি নাজমুল হুদা বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন সংকট, সম্ভাবনা তুলে ধরার পাশাপাশি সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডগুলোও তুলে ধরতে সাংবাদিকরা কাজ করে যাচ্ছে। এসময় বিগত দিনগুলোর ন্যায় আগামীতেও এ ধারা অব্যাহত থাকবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।