দোয়ারায় সুদের ফাঁদে ফেলে সংখ্যালঘুর সম্পত্তি দখলের পাঁয়তারা

দোয়ারাবাজারে সুদের ফাঁদে ফেলে কৌশলে সংখ্যালঘু পরিবারের জমি-জমা হাতিয়ে নেবার জন্য উঠেপড়ে লেগেছে একটি চক্র। এমন অভিযোগ তুলেছেন ভুক্তভোগী বিমল কুমার দাস (৪৫)।

জানা যায়, উপজেলার বাংলাবাজার ইউনিয়নের রাজারগাঁও গ্রামের মৃত মারফত আলীর পুত্র শাহ আলম, সুদের ব্যবসার জন্যই এলাকায় ব্যাপক পরিচিত। তার সুদের ফাঁদে পড়ে এলাকার অনেকে নিঃস্ব হয়েছেন। এবার একই গ্রামের বিমল চন্দ্র দাস নামের এক অসহায় কৃষক তার সুদের ফাঁদে পড়ে পথে বসতে চলেছেন।

অভাবের তাড়নায় শাহ আলমের কাছ থেকে দুই বছর আগে তিন হাজার টাকা মাসিক সুদে মাত্র ২০ হাজার টাকা নিয়েছিলেন বিমল। এক বছরের মধ্যে সুদে আসলে ৬০ হাজার টাকা হলে শাহ আলম কৌশলে স্ট্যাম্প করে বিমল কুমার দাসের কাছে ১৫ শতক জমি বন্ধক বলে লিখে নেন। এতে প্রত্যক্ষ সহযোগিতা করেন এবং স্ট্যাম্পে সাক্ষী হন ছনুগাঁও সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক আজহারুল ইসলাম এবং দলিল লেখক নজরুল ইসলাম নামের আরও দুই ব্যক্তি।

বিমল কুমার দাস বলেছেন, মাস্টার আজহারের প্ররোচনায় সুদ কারবারি শাহ আলম এক বছর পর ২০ হাজার টাকার মাসিক সুদ ৫ হাজার লিখিয়ে নেন। নিজের টাকা আদায় করতে শাহ আলম জমিজমার কাগজপত্র চান এবং মাস্টার আজহার কে দিয়ে নামজারি করিয়ে সরকারি ব্যাংক থেকে মোটা অংকের লোন পাইয়ে দেওয়ার আশ্বাস দেন। লোন পেয়ে তার টাকাও নিয়ে যাবে বলে এক পর্যায়ে জমিজমার কাগজপত্র নিজের কাছে কুক্ষিগত করে রাখেন এবং নামজারি করে দেওয়ার কথা বলে ২৪ হাজার টাকা নেন। পরবর্তীতে নামজারি করতে না পেরে আজহার ও শাহ আলম, দলিল লেখক নজরুল তিনজন মিলে সাড়ে তিন লাখ টাকা পাওনা দেখিয়ে ভুয়া টিপসই নিয়ে একটা বায়নাপত্র স্ট্যাম্প করেন।

এতেই তারা ক্ষান্ত হননি টাকা আদায়ে কৌশল হিসেবে বিমল কুমার দাসের বিরুদ্ধে আদালতে মামলাও দায়ের করেন। জমি রেজিস্ট্রিরি করে না দিলে তাকে মামলা দিয়ে হয়রানি করারও হুমকি ধমকি দিতে থাকেন। বিষয়টি একপর্যায়ে থানা পুলিশ পর্যন্ত গড়ালে ঘটনার আসল কারণ বেরিয়ে আসে।

গ্রাম পঞ্চায়েতের অনেকেই বলেছেন, শাহ আলম একজন চিহ্নিত সুদ কারবারি। তার কাছ থেকে সুদে টাকা নিয়ে অনেকেই পথে বসেছেন। সে বিভিন্ন এনজিও, বেসরকারি ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে এলাকাজুড়ে সুদের ব্যবসা করে আসছেন।

তবে শাহ আলম এসব অস্বীকার করে বলেছেন, বিমল কুমার দাসকে সুদে ২০ হাজার টাকা দিয়েছিলেন, পরবর্তীতে তিনি জমি বিক্রি করার কথা বলে ২ লাখ ৮০ হাজার টাকা নির্ধারণ করে বায়নাপত্রও করেছেন। আমি ব্যাংক থেকে ঋণ তুলে টাকা দিয়েছি।