দশ বছরে পদার্পণ করলো ‘বাঁধন’ সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় ইউনিট। ‘একের রক্ত অন্যের জীবন, রক্তই হোক আত্মার বাঁধন’ এই স্লোগানকে সামনে রেখে ১৯৯৭ সালের ২৪ অক্টোবর যাত্রা শুরু করে স্বেচ্ছায় রক্তদাতাদের সংগঠন ‘বাঁধন’। প্রতিষ্ঠাতা শহিদুল ইসলাম রিপনের হাত ধরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদুল্লাহ হল থেকে যাত্রা শুরু করলেও পরবর্তীতে মানবতার তাগিদে দ্রুততম সময়ের মধ্যে ‘বাঁধন’ ছড়িয়ে পড়ে পুরো বাংলাদেশে।
২০১৩ সালের আজকের দিনে (১৫ নভেম্বর) ‘বাঁধন’র সাথে সংযুক্ত হয় সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়। ২০১২ সালে কয়েক দফা ব্লাড গ্রুপিং শেষে সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের আগ্রহ-উদ্দীপনার উপহারস্বরূপ ২০১৩ সালের ১৫ নভেম্বর সর্বপ্রথম পরিবার হিসেবে সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে কার্যক্রম শুরু করে ‘বাঁধন’।
পরবর্তীতে উল্লেখযোগ্য সময়ের ব্যবধানে ২০১৫ সালের ১০ এপ্রিল পরিবার থেকে ইউনিটে উন্নতি লাভ করে ‘বাঁধন’ সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় ইউনিট এবং বর্তমান সময় পর্যন্ত ইউনিট হিসেবে কার্যক্রম চালিয়ে আসছে।
সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাতটি আবাসিক হলের উপ-কমিটির কার্যক্রম পরিচালনার মাধ্যমে ‘বাঁধন’ সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় ইউনিট তাদের কার্যক্রমকে গতিশীল রেখেছে।
শুধু ‘বাঁধন’ কর্মীদের কাছ থেকে নয়, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে জানা যায়- রক্তদান ও রক্তের গ্রুপ নির্ধারণ কর্মসূচিতেই ‘বাঁধন’ সীমাবদ্ধ থাকেনি। বিভিন্ন প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও মানবসৃষ্ট দুর্যোগে এ ইউনিট অগ্রণী ভূমিকা পালন করে এসেছে।
২০১৬ সালে সিলেটের আতিয়া মহলের জঙ্গি হামলা থেকে শুরু করে ২০২০ সালের বৈশ্বিক করোনা মহামারি এবং চলতি বছরের মাঝামাঝিতে ভয়াবহ বন্যা পরিস্থিতিতে সকল জায়গাতেই ‘বাঁধন’ সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় ইউনিট কাজ করে গেছে মানুষের জন্য। এছাড়া প্রতি ঈদে উপহারসামগ্রী বিতরণ, শীতকালে শীতবস্ত্র বিতরণসহ আরও বিভিন্ন কার্যক্রমে ‘বাঁধন’ সম্পৃক্ত ছিল সবসময়।
বিগত ন৯ বছরে ‘বাঁধন’ সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় ইউনিট মোট ৫৩১৩ ব্যাগ রক্তের চাহিদা পূরণ করতে সক্ষম হয়েছে। এছাড়া মোট ১১ হাজার ৬১৯ জন মানুষের বিনামূল্যে রক্তের গ্রুপ নির্ণয় করে দিতে সক্ষম হয়েছে ‘বাঁধন’।
বর্তমানে দেশের ৫৩টি জেলায় ৭৬টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ১৪৪টি ইউনিটে ‘বাঁধন’র কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে।