একইসাথে তিন ফরম্যাটের নেতৃত্ব থেকেই সরে গেলেন সাকিব আল হাসান। তার জায়গায় তিন ফরম্যাটেই অধিনায়ক হিসেবে জায়গা করে নিলেন নাজমুল হাসান শান্ত।
সোমবার (১২ ফেব্রুয়ারি) মিরপুরের শের-ই-বাংলা স্টেডিয়ামে বিসিবির বোর্ড সভা শেষে আনুষ্ঠানিকভাবে নাজমুল হোসেন শান্তকে অধিনায়ক ঘোষণা করেন বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন। অন্তত আগামী এক বছরের জন্য তিন ফরম্যাটেই বাংলাদেশকে নেতৃত্ব দেবেন শান্ত।
সংবাদ সম্মেলনে পাপন বলেন, ‘সাকিবের সঙ্গে কথা হয়েছে। কালকে পর্যন্ত যেটা কথা হয়েছে; ওর চোখের সমস্যা এখনও যায়নি। কাজেই আমাদের সামনে শ্রীলঙ্কা সিরিজ আছে, তারপর আরেকটা সিরিজ আছে; বিশ্বকাপ আছে। আসলে তাকে পাবো কিনা আমরা নিশ্চিত না। অবশ্যই ও আমাদের প্রথম পছন্দ অধিনায়ক হিসেবে সবসময়ই ছিল, এখনও আছে। দুর্ভাগ্যবশত যেহেতু একটা অনিশ্চয়তা রয়ে গেছে, এটার মধ্যে আমরা থাকতে চাচ্ছি না। কাজেই আমরা সিদ্ধান্ত আর দেরি করতে চাইনি। এখন থেকে বিশ্বকাপের খুব বেশি দেরি নেই, এই সময়ে যেন ভালোভাবে দলটা চলতে পারে; সেজন্য এই নামটা (শান্ত) আমরা ঘোষণা করে দিয়েছি।’
এর আগে ২০১৭ সালের এপ্রিলে সাকিব আল হাসানকে টি-টোয়েন্টির দায়িত্ব দিয়ে তিন ফরম্যাটে তিন অধিনায়কের যুগে প্রবেশ করেছিল বাংলাদেশ। এর প্রায় ৬ বছর পর গত আগস্টে সেই সাকিবের হাত ধরেই তিন ফরম্যাটে এক অধিনায়ক তত্ত্বে ফিরে যায় টাইগাররা। এবার এক সঙ্গে তিন ফরম্যাট থেকে দায়িত্ব ছাড়ায় সাকিবের নেতৃত্ব অধ্যায়ের ইতি ঘটলো।
মাশরাফি বিন মর্তুজার অধিনায়কত্বে ২০০৯ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে সহ-অধিনায়ক ছিলেন সাকিব। প্রথম টেস্টে মাশরাফি ইনজুরিতে পড়ায় সাকিবকে ভারপ্রাপ্ত অধিনায়ক করা হয়। সেটাই ছিল সাকিবের প্রথম অধিনায়কত্ব। সেই সিরিজে ভালো ফল করায় পরের সিরিজেই তাকে অধিনায়ক করে আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেয় বিসিবি। এর দুবছর পর ২০১১ সালে জিম্বাবুয়ে সফরের পর অধিনায়কত্ব থেকে সাকিবকে সরিয়ে মুশফিকুর রহিমকে আনা হয় নেতৃত্বে। তবে ২০১৪ সালে ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টিতে মাশরাফিকে অধিনায়কত্ব দেয়া হয়।
এর ৬ বছর পর ২০১৭ সালে মাশরাফি টি-টোয়েন্টি থেকে অবসরে গেলে এই ফরম্যাট দিয়ে আবারও নেতৃত্বে ফেরেন সাকিব। একই বছরে মুশফিকুর রহিমের কাছ থেকে দ্বিতীয়বারের মতো সাদা পোশাকের অধিনায়কের দায়িত্বও পান তিনি। কিন্তু ২০১৯ সালে আইসিসি কর্তৃক এক বছরের নিষেধাজ্ঞায় পড়ে দ্বিতীয় দফায় নেতৃত্ব হারান।
এরপর ২০২২ সালের জুনে টেস্ট ক্রিকেট দিয়ে আবারও দলের নেতৃত্বে ফেরেন সাকিব। মাস কয়কে পরেই টি-টোয়েন্টির নেতৃত্বও পান তিনি। আর গত বছরের ১১ আগস্ট তিন ফরম্যাটে অধিনায়ক করা হয় সাকিবকে। ৭ মাস পর এবার অধিনায়কত্ব অধ্যায়ের ইতি টানলেন সাকিব।
এবার সাকিবের স্থলাভিষিক্ত হয়েছেন নাজমুল হাসান শান্ত। তবে এর আগেও বাংলাদেশকে নেতৃত্ব দেওয়ার অভিজ্ঞতা আছে এই টপ অর্ডার ব্যাটারের। নিয়মিত অধিনায়কের অনুপস্থিতিতে বাংলাদেশকে ১১ ম্যাচে নেতৃত্ব দিয়েছেন শান্ত। সাদা পোশাকে তার অধিনায়কত্বে মোট ২টি ম্যাচ খেলেছে বাংলাদেশ। যেখানে এক টেস্টে হারের বিপরীতে একটি ম্যাচ জিতেছে বাংলাদেশ। ওয়ানডেতে শান্তর নেতৃত্বে ৬ ম্যাচ খেলে ৫ ম্যাচেই হেরেছে বাংলাদেশ। বিপরীতে একটি ম্যাচে জয় পেয়েছে টাইগাররা। আর টি-টোয়েন্টিতে ৩ ম্যাচে ১ জয় ও ১ হার অধিনায়ক শান্তর। অপর একটি ম্যাচ পরিত্যক্ত হয়েছে।
