সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুরে অব্যাহত বৃষ্টিপাত ও উজানের ঢলে বন্যা পরিস্থিতি ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। গত রোববার থেকে ধীরে ধীরে পানি কমলেও পানিবন্দি মানুষ চরম দুর্ভোগে আছেন। জগন্নাথপুর পৌরসভাসহ উপজেলা জুড়ে বন্যার ভয়াবহ রূপ নেয়। বন্যায় বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে যোগাযোগব্যবস্থা ও বিদ্যুৎ সংযোগ। সিলেটের বিভাগীয় শহরের সঙ্গে যোগাযোগের প্রধান সড়ক জগন্নাথপুর-সিলেট সড়ক, জগন্নাথপুর-সুনামগঞ্জসহ জগন্নাথপুর উপজেলা সদরের সঙ্গে যাতায়াতের সড়কগুলো পানিতে তলিয়ে গেছে।
পৌরশহরের প্রধান ব্যবসাকেন্দ্র, জগন্নাথপুর বাজার, উপজেলা পরিষদ, উপজেলা সহকারী কমিশনারের (এসিল্যান্ড) কার্যালয় বিদ্যুৎ অফিস সহ গুরুত্বপূর্ণ সেবাকেন্দ্রগুলোতেও পানি উঠেছে। এ ছাড়া গ্রামীণ রাস্তাঘাট তো ডুবেছেই জগন্নাথপুরের প্রায় চার লাখ মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন।
সরেজমিনে কয়েকটি আশ্রয়কেন্দ্র ঘুরে দেখা যায়, আশ্রয় কেন্দ্রগুলোতে উপচেপড়া ভিড়। এসব কেন্দ্র গত তিনদিন ধরে সরকারি কোনো ত্রাণ সহায়তা পৌঁছেনি।
এবিষয়ে নলুয়া হাওর বেষ্টিত চিলাউড়া হলদিপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শহিদুল ইসলাম বকুল বলেন, ‘আমাদের পুরো ইউনিয়নের মানুষ বন্যায় বিপর্যস্ত। আশ্রয় কেন্দ্রগুলোতে ত্রাণের জন্য আহাজারি চলছে। মানুষ কাঁদছে। যোগাযোগ ব্যবস্থা ও মোবাইল নেটওয়ার্ক ও ইন্টারনেট না থাকায় অচল হয়ে আছি আমরা। কে কোথায় আছে তাও নিশ্চিত করা যাচ্ছে না।’
শহিদুল ইসলাম বকুল বলেন, ‘এর মধ্যে ডাকাত আতঙ্কে চোখে ঘুম নেই মানুষের। অন্যদিকে, গত বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ৯টা থেকে জগন্নাথপুরের বিদ্যুৎ সরবরাহ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। ফলে মোবাইল নেটওয়ার্ক ও ইন্টারনেট কাজ করছে না।’
আশ্রয় কেন্দ্র থাকা হারুন মিয়া বলেন, ‘জগন্নাথপুরে ইউএনও সাহেব কে দেখিনি এখন পর্যন্ত।’ আশ্রয় কেন্দ্র থাকা জুলেকা খাতুন বলেন, ‘আমরা কয়েক দিন ধরে না খেয়ে আছি, সরকারি কোনো লোক পাইনি।’
জগন্নাথপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সাজেদুল ইসলাম বলেন, পানিবন্দি মানুষের জন্য আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে। এছাড়া বন্যার্তদের মাঝে ত্রাণ সহায়তা পৌঁছে দিতে আমরা তৎপর রয়েছি।