বিশাল চমক দেখিয়েই বিয়ানীবাজার পৌরসভার মেয়র নির্বাচিত হয়েছেন বহিষ্কৃত আওয়ামী লীগ নেতা ফারুকুল হক। তাঁর কাছে শুধু ধরাশায়ীই নয়, তৃতীয় অবস্থান লাভ করেন স্থানীয় এমপি-ঘনিষ্ঠ ও আওয়ামী লীগ মনোনীত মেয়র প্রার্থী আবদুস শুকুর।
জিএস ফারুকুল হক প্রায় দেড় হাজার বেশি ভোট পেয়ে বেসরকারিভাবে মেয়র নির্বাচিত হন।
ফারুকুল হক নিউইয়র্ক মহানগর আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন। দেশে থাকাকালীন তিনি ছিলেন উপজেলা ছাত্রলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক। ছিলেন বিয়ানীবাজার সরকারি কলেজ ছাত্রসংসদের জিএস।
এছাড়া ১৯৯৫ সালে বিয়ানীবাজার সরকারি কলেজ ক্যাম্পাসে জামায়াত-শিবিরের হামলার শিকার হয়েছিলেন। সেই হামলার ঘটনা স্মরণ করিয়ে দিয়ে ভোটারদের কাছে ভোট চেয়েছেন তিনি।
মাস তিনেক আগে সুদূর আমেরিকা থেকে দেশে এসে দলের কাছে নৌকা প্রতীক চেয়েছিলেন, কিন্তু পাননি। পরে নির্বাচনী মাঠে অনড় থাকায় দল থেকে বহিষ্কার হন ফারুক। তবুও হাল ছাড়েননি। সফলও হয়েছেন।
আরও পড়ুন : গোলাপগঞ্জে ৩৩ হাজার ভোট বেশি পেয়ে নৌকার জয়
এদিকে নির্বাচনী ফলাফল অনুসারে ১০টি কেন্দ্রে ৪১০০ ভোট পেয়েছেন ফারুকুল হক (চামচ প্রতীক)। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী মোবাইল প্রতিকের স্বতন্ত্র প্রার্থী আব্দুস সবুর ২৩১৮ ভোট।
এরপরেই তৃতীয় অবস্থানে আছেন আওয়ামী লীগের প্রার্থী নৌকা প্রতীকের আব্দুস শুকুর ২২৭০ ভোট। এছাড়া জগ প্রতীকের তফজ্জুল হোসেন ১৪৯৯ ভোট, কম্পিউটার প্রতীকের আহবাব হোসেন সাজু ১৪৬৩ ভোট, হ্যাঙার প্রতীকের আব্দুস সামাদ আজাদ ১১৬৪ ভোট, হেলমেট প্রতীকের আব্দুল কুদ্দুছ টিটু ৬৭১ ভোট, নারিকেল গাছ প্রতীকের অজি উদ্দিন ২১৫ ভোট, লাঙল প্রতীকের সুনাম উদ্দিন ১৩৮ ভোট ও কাস্তে প্রতিকের আবুল কাশেম ১৭৩ ভোট পেয়েছেন।
অপরদিকে প্রতিদ্বন্দ্বী থেকে প্রায় তিনগুন বেশি ভোট পেয়ে গোলাপগঞ্জ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী মঞ্জুর কাদির শাফি চৌধুরী এলিম।
নৌকা প্রতিক নিয়ে এলিম পেয়েছেন ৪৯ হাজার ৯২০ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী ভিপি শফিক উদ্দিন পেয়েছেন ১৬ হাজার ৭০৭ ভোট।
আরও পড়ুন : বিয়ানীবাজারে চমক দেখিয়ে মেয়র হলেন বহিষ্কৃত আ.লীগ নেতা ফারুক
ফলাফল অনুযায়ী প্রতিদ্বন্দ্বী থেকে ৩৩ হাজার ২১৩ ভোট বেশি পেয়ে বেসরকারিভাবে বিজয়ী হয়েছেন সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য মঞ্জুর কাদির শাফি চৌধুরী এলিম।
বুধবার রাত সাড়ে ৮টায় বেসরকারিভাবে ফলাফল ঘোষণা করেন সিনিয়র জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ও গোলাপগঞ্জ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান পদে উপ নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা মোহাম্মদ শুকুর মাহমুদ মিঞা।
এর আগে বুধবার সকাল ৯টা থেকে শুরু হয়ে বিকাল ৫টা পর্যন্ত চলে টানা ভোটগ্রহণ। বৃষ্টি এবং ছোটখাটো কিছু বিশৃঙ্খলা ঘটনা ছাড়া শান্তিপূর্ণভাবে ভোটগ্রহণ কার্যক্রম অনুষ্ঠিত হয়। তবে বৃষ্টির কারণে ভোটার উপস্থিতি কম।
নির্বাচনে মোট ভোট পড়েছে ৬৭ হাজার ৫৫১টি। বৈধ ভোট ৬৬হাজার ৬২৭। এছাড়া ৯০২ ভোট বাতিল হয়েছে।