মৌলভীবাজারের কুলাউড়ায় সংরক্ষিত বনে গাছের চারা রোপনে খাসিয়াদের বাঁধা। এতে ব্যাহত হচ্ছে সরকারের সামজিক বনায়ন কার্যক্রম। খাসিয়াদের বাঁধার কারণে সামাজিক বনায়নে বনবিভাগ ও উপকাভোগীদের প্রায় ১০ কোটি টাকার ক্ষতির শঙ্কা দেখা দিয়েছে। এমনকি উপজেলার ভাটেরা ইউনিয়নে সংরক্ষিত ১০ হেক্টর বনে সৃজিত ২৫ হাজার চারা বিনষ্ঠের আশঙ্কাও রয়েছে। যার ফলে খাসিয়া ও বনবিভাগের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছে।
বন বিভাগ সুত্রে জানা যায়, ভাটেরা সংরক্ষিত বনাঞ্চলের কালিয়ারআগায় পতিত ১০ হেক্টর বনভুমিতে স্থানীয় এলাকাবাসীর অংশগ্রহণে ২০২১-২২ অর্থ সনে সামাজিক বনায়ন সৃষ্টির লক্ষ্যে গত নভেম্বর মাসে ২৫ হাজার চারা রোপন করা হয়। এবং গত কয়েক মাসে বনায়নের নির্ধারিত স্থানে চারা রোপনের লক্ষ্যে জঙ্গল পরিষ্কারসহ আনুষাঙ্গিক কার্যক্রম শেষে সম্প্রতি চারা রোপন শুরু করে বনবিভাগ। গত ১২ জুলাই বনায়নে দিনব্যাপী চারা রোপন করে বনবিভাগ। পরদিন ১৩ জুলাই ইছলাছড়া পুঞ্জির বাসিন্দা ইয়ট ও হ্যাভেন খাসিয়া বনবিভাগের বনায়ন কার্যক্রমে বাঁধা প্রদান করে। খাসিয়াদের বাঁধার কারণে বনবিভাগও উপকারভোগীরা পড়েছেন চরম অনিশ্চয়তায়।
বনায়নের উপকারভোগীরা জানান, কালিয়ারআগা এলাকায় পতিত ২৫ একর বনভুমিতে কখনও খাসিয়াদের দখলে ছিল না। কোন ধরনের পান গাছ, লেবু গাছ ছিল না। স্থানীয় বাসিন্দা খয়রুল আমিন চৌধুরী টিপুর দখলে ছিলো জায়গাটি। তিনি জায়গাটি বনবিভাগের কাছে হস্তান্তর করলে সেখানে সামাজিক বনায়নের উদ্যোগ নেয় বনবিভাগ। সামজিক বনায়নের জন্য নির্ধারিত এই জায়গা থেকে খাসিয়াদের বসবাসস্থল অর্থাৎ বছিলাছড়া পানপুঞ্জির দূরত্ব ৩ কিলোমিটার। অথচ খাসিয়ারা ইচ্ছাকৃতভাবে জবরদখলের উদ্দেশ্যে বনবিভাগের সামজিক বনায়নে বাঁধা প্রদান করছে।।
বনায়ন বাঁধাগ্রস্থ হওয়ায় সরকারের কমপক্ষে ১০ কোটি টাকার ক্ষতির আশঙ্কা করছে বনবিভাগ। ২৫ হাজার চারা রোপন করা হলে এবং সামাজিক বনায়ন বাস্তবায়ন হলে সরকার এবং উপকারভোগীদের ১০ কোটি টাকা আয় হত। অথচ খাসিয়াদের জমির কোন মালিকানা না থাকার পরও সরকারের বনায়ন তথা বাগান সৃষ্টিতে বাঁধা হয়ে দাঁড়ানোয় একদিকে ২৫ হাজার চারা নষ্ট হচ্ছে, অন্যদিকে বনায়নের জায়গা পরিষ্কার করাতে শ্রমিকের ব্যয় এবং বীজতলায় ২৫ হাজার চারা রোপনে বনবিভাগের ৫ লক্ষাধিক টাকা ক্ষতি হয়েছে ইতিমধ্যে।
এ ব্যাপারে কুলাউড়া রেঞ্জ কর্মকর্তা রিয়াজ উদ্দিন আহমদ জানান, আমরা ২১-২২ সনে সামাজিক বনায়নে কার্যক্রম জুন মাসে অতিবৃষ্টির কারণে শেষ করা যায়নি। ঈদের পরপরই ১২ জুলাই থেকে চারা রোপন কার্যক্রম শুরু হয়। ১৩ জুলাই খাসিয়ারা চারা রোপনে বাঁধা দেয়। উপজেলা চেয়ারম্যান মহোদয়ের অনুরোধে আপাতত কাজ বন্ধ। ২-১ দিনের মধ্যে সমাধান দেবেন বলে জানান।