আওয়ামী লীগ নেতা মিসবাহ সিরাজকে অপহরণ করে মারধরের অভিযোগ

বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাবেক কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট মিসবাহ উদ্দিন সিরাজকে অপহরণ করে মারধর ও মুক্তিপন আদায় করে রক্তাক্ত অবস্থায় ছেড়ে দেয়ার অভিযোগ উঠেছে।

বৃহস্পতিবার মধ্যরাত ১২টার দিকে সিলেট নগরীর সুবিদবাজার ফাজিলচিস্ত এলাকা থেকে তাকে অপহরণ করে অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে যাওয়া হয় এবং পরে পরিবারর কাছ থেকে মুক্তিপণ আদায় করে গুরুতর আহত অবস্থায় রাত ৩টার দিকে সাগরদিঘীর পাড় এলাকায় ফেলে যায় অপহরণকারীরা।

সেখান থেকে তাকে উদ্ধার করে ভোররাত ৪টার দিকে নগরীর সোবহানীঘাটে আল-হারামাইন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে তার পায়ের অপারেশন হয় এবং ভোরেই হাসপাতাল ছেড়ে চলে যান মিসবাহ উদ্দিন সিরাজ।
সিলেট জেলা আদালতের সাবেক এ সরকারি কৌঁসুলি বর্তমানে গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় ঢাকার একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন বলে তার স্বজনেরা জানিয়েছেন।

তিন মেয়াদে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করা মিসবাহ উদ্দিন সিরাজ আওয়ামী লীগের বর্তমান কমিটির কোন পদে নেই। গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর থেকে তিনি অন্তত ৭টি মামলার আসামী হিসেবে পলাতক আছেন।

জানা যায়, বৃহস্পতিবার মধ্যরাত ১২টার দিকে অটোরিক্সায় করে ফাজিলচিস্তে একটি বাসায় যাওয়ার পথে তার গতিরোধ করে তাকে মারধর করে অপর একটি অটোরিক্সায় তুলে নিয়ে অজ্ঞাত স্থানে চলে যায় অপহরণকারীরা। পরে তার পরিবারের সাথে যোগাযোগ করে মুক্তিপণ দাবি করা হয়। রাতেই পরিবার মুক্তিপণ প্রদান করলে রাত ৩টার দিকে তাকে সাগরদিঘীরপাড় এলাকায় ফেলে যায়। সেখান থেকে তাকে উদ্ধার করে একটি অ্যাম্বুলেন্সযোগে হাসপাতালে নেয়া হয়।

আল হারামাইন হাসপাতালের পরিচালক ডা. নাহিয়ান আহমেদ চৌধুরী বলেন, ‘রাত ৪টার দিকে হাসপাতালে জরুরি বিভাগে তাকে ভর্তি করেন তার পরিবারের সদস্যরা। তারা জানান তিনি মোটরসাইকেল অ্যাক্সিডেন্ট করেছে। তার বাম পায়ের হাটুর নিচে সামনের দিকের কাটা ক্ষত অপারেশন করে ৪/৫টি স্টিচ দেয়া হয়। ভোররাতেই তিনি ছাড়পত্র নিয়ে চলে যান। যেহেতু সাধারণ অক্সিডেন্টের বিষয় জানানো হয়েছিলো আর অবস্থা ভর্তি করার মতো গুরুতর ছিল না তাই পুলিশকে অবহিত করা হয়নি।’

মিসবাহ উদ্দিন সিরাজের মেয়ে মুনতাহা মিসবাহ সিলেটের স্থানীয় একটি গণমাধ্যমকে জানান যে তার বাবা গুরুতর আহত অবস্থায় রাজধানীর একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন।

সিলেট মেট্রোপলিন পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (মিডিয়া) মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘পুলিশ বিষয়টি অবগত হয়েছে এবং হাসপাতালে যোগাযোগ করে বিস্তারিত জেনেছে। তবে আনুষ্ঠানিক কোন অভিযোগ পাওয়া যায়নি, তবুও পুলিশ বিষয়টি তদন্ত করে দেখছে।’