সারাদেশে আদিবাসী নারী ও শিশু নির্যাতন প্রতিনিয়ত বাড়ছে। বাংলাদেশ আদিবাসী নারী নেটওয়ার্ক ও কাপেং ফাউন্ডেশনের তথ্য অনুযায়ী, সারাদেশে আদিবাসী নারী ও শিশুরা বিভিন্ন ভাবে নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। এই নির্যাতনের মধ্যে রয়েছে ধর্ষণ, অপহরণ, শারীরিক নির্যাতন, পাচারসহ নানা সহিংসতামূলক কার্যক্রম। জাতিসংঘ ঘোষিত সারা বিশ্বে নারী নির্যাতন প্রতিরোধে ১৬ দিনের কর্মসূচির অংশ হিসেবে বাংলাদেশ আদিবাসী নারী নেটওয়ার্কের মৌলভীবাজার জেলার আঞ্চলিক পর্যায়ে সভায় আদিবাসী নারী ও শিশুদের উপর সহিংসতা প্রতিরোধ করনীয় শীর্ষক আলোচনায় এ বিষয়গুলো ওঠে এসেছে।
বুধবার (২৭ নভেম্বর) সকাল ১১টায় বাংলাদেশ আদিবাসী নারী নেটওয়ার্ক ও কাপেং ফাউন্ডেশনের আয়োজনে মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলের একটি রেঁস্তোরার হলরুমে সভাটি অনুষ্ঠিত হয়। কাপেং ফাউন্ডেশনের সমন্বয়কারী ত্রিজিনাদ চাকমার পরিচালনায় সভার সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ আদিবাসী নারী নেটওয়ার্কের সহসভাপতি ফ্লোরা বাবলী তালাং। সভার শুরুতেই শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন বাংলাদেশ আদিবাসী নারী নেটওয়ার্কের অর্থ বিষয়ক সম্পাদক সুজয়া ঘাগড়া।
সভায় অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কাপেং ফাউন্ডেশনের ব্যবস্থাপক হিরন মিত্র চাকমা, বাংলাদেশ আদিবাসী ফোরামের শিক্ষা সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক বিষয়ক সম্পাদক উজ্জল আজিম।
এ সময় আরোও উপস্থিত ছিলেন কালিঘাট ইউপি নারী সদস্য মিতু রায়, সাতছড়ি ত্রিপুরা পল্লীর হেডম্যান চিত্তরঞ্জন দেববর্মা, বৃহত্তর সিলেট ত্রিপুরা উন্নয়ন পরিষদের সভাপতি জনক দেববর্মা, বৃহত্তর সিলেট ত্রিপুরা উন্নয়ন পরিষদের সহসভাপতি নারী নেত্রী মায়া রানী দেববর্মা, পাত্রকলা চা বাগানের পঞ্চায়েত কমিটির সভাপতি স্বপন কুর্মী, খাসি সোশ্যাল কাউন্সিলের প্রচার সম্পাদক সাজু মারছিয়াং।
সভায় বক্তারা বলেন, ৫৪ এর অধিক জাতির আদিবাসী আছে বাংলাদেশে। দেশের মোট জনসংখ্যার ২% আদিবাসী।
আদিবাসী নারীদের জীবনযাপন নিয়ে বক্তারা বলেন, আদিবাসী নারীদের রঙিন জীবন সবাই দেখে কিন্তু কষ্ট কেউ দেখে না। সভার উন্মুক্ত আলোচনায় নারীরা বলেন, আদিবাসী নারীরা প্রান্তিক অঞ্চলে বাস করে। গর্ভকাল থেকে শুরু করে দৈনন্দিন সব কাজেই তাদের বিভিন্ন সম্যসার সম্মুখীন হতে হয়। আদিবাসী নারীরা জাতিগত, লিঙ্গগত, ভাষাগত, ধর্মীয়গত এবং শ্রেণীগত কারণে দৈনন্দিন প্রতিনিয়ত শোষন নির্যাতন, ইভটিজিং ও বৈষম্যের শিকার হচ্ছে। একজন আদিবাসী নারী বাইরে সবসময় নিজের নিরাপদ থাকা ও চলাফেরা নিয়ে সবসময় আতঙ্কে থাকেন, ফলে আদিবাসী নারী ও শিশুরা প্রতিনিয়ত মানবাধিকার লঙ্ঘনের মতো ঘটনাও বাড়ছে।