৭ দফা দাবিতে উত্তাল সিকৃবি, ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন

ব্যানার ছেঁড়াকে কেন্দ্র করে সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের বিবৃতিতে ‘রাষ্ট্রদ্রোহী’ কার্যকলাপ উল্লেখ করার প্রতিবাদে আন্দোলন করেছে সাধারণ শিক্ষার্থীরা। রোববার (২৭ অক্টোবর) সকাল থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল বডির পদত্যাগসহ ৭ দফা দাবিতে প্রশাসনিক ও একাডেমিক ভবনে তালা দেয় আন্দোলনকারীরা।

এরপর ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ করেন শিক্ষার্থীরা। তাদের অভিযোগ, বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রদলের ব্যানার ছেঁড়ায় শিক্ষার্থীদের ‘রাষ্ট্রদ্রোহী’ হিসেবে আখ্যা দিয়ে গণমাধ্যমে দেওয়া প্রশাসনের বিবৃতি অপমানজনক। এ ঘটনায় প্রক্টর ও রেজিস্ট্রার অবিলম্বে ক্ষমা চেয়ে পদত্যাগ না করা পর্যন্ত তারা ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন করেছেন বলে জানিয়েছেন শিক্ষার্থীরা।

এর আগে, ছাত্রদলের একটি ব্যানার ছেঁড়াকে কেন্দ্র করে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সংঘর্ষের ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে তদন্ত কমিটি গঠন করে শনিবার গণমাধ্যমে বিজ্ঞপ্তি পাঠায় সিকৃবি প্রশাসন। বিজ্ঞপ্তিতে ব্যানার ছেঁড়াকে ‘রাষ্ট্রবিরোধী কাজ’ হিসেবে উল্লেখ করা হয়।

বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (অতিরিক্ত দায়িত্ব) মোহাম্মদ আতাউর রহমান স্বাক্ষরিত ওই বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বিষয়টি রাষ্ট্রবিরোধী, ঘৃণ্য ও নিন্দনীয় কর্মকাণ্ড। এ ধরনের অনৈতিক কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিরা বিশ্ববিদ্যালয় তথা বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উন্নয়ন কর্মকাণ্ডকে বাধাগ্রস্ত করতে চায়।

বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে এমন বিবৃতি দেয়ায় ক্ষুব্ধ হয়ে শিক্ষার্থীরা রোববার আন্দোলনে নামে। বিক্ষোভকালে শিক্ষার্থীরা জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ থাকার পরেও একটি ছাত্র সংগঠনের ব্যানার ক্যাম্পাসে লাগানো হয়েছে। এ বিষয়ে প্রশাসনকে অবহিত করা হলেও কোন পদক্ষেপ নেননি তারা। যার প্রেক্ষিতে ব্যানার ছেঁড়াকে কেন্দ্র করে সাধারণ শিক্ষার্থীদের উপর হামলা করা হয়।

২৪ অক্টোবর সংঘর্ষের ঘটনায় শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ হয়েছে প্রশাসন, অভিযোগ বিক্ষোভকারী শিক্ষার্থীদের। এছাড়া প্রশাসন কর্তৃক বিভিন্ন গণমাধ্যমে শিক্ষার্থীদের আওয়ামী লীগের পৃষ্ঠপোষক ও রাষ্ট্রদ্রোহী হিসেবে আখ্যা দেওয়াকে অপমানজনক বলেও জানায় আন্দোলনকারীরা।

শিক্ষার্থীরা জানান, অবিলম্বে প্রক্টর ও রেজিস্ট্রার অবিলম্বে ক্ষমা চেয়ে পদত্যাগ না করা পর্যন্ত সব ধরনের অ্যাকাডেমিক কার্যক্রম বর্জন করবেন তারা।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের মাইক্রোবায়োলজি বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক সুলতানা আহমেদ বলেন, ‘আমরা শিক্ষার্থীদের সাথে কথা বলছি। সমস্যা সমাধানে শিক্ষার্থীদের প্রতিনিধি দল ভাইস চ্যান্সেলর সাথে কথা বলবেন। আশা করি দ্রুত সমস্যার সমাধান হবে।’

শিক্ষার্থীদের রাষ্ট্রদ্রোহী আখ্যা দিয়ে দেওয়া বিবৃতি ভুল করে দেওয়া হয়েছে এবং এ নিয়ে তদন্ত চলছে বলে জানান তিনি।