আফগানদের স্বপ্ন ভেঙে দীর্ঘদিন পর বিশ্ব আসরের ফাইনালে উঠে এল দক্ষিণ আফ্রিকা ।এই শতাব্দীতে আইসিসি ইভেন্টে মোট ১০বার সেমিফাইনাল খেললেও কখনোই ফাইনালে পা রাখতে পারেনি দক্ষিণ আফ্রিকা। প্রতিবারই মাথা নিচু করে টুর্নামেন্ট থেকে বিদায় নিতে হয়েছে। প্রোটিয়াদের নামের সঙ্গে লেপ্টে গেছে ‘চোকার্স’ তকমা। যা নিয়ে স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন তৈরি হয়েছিল এবার কি পারবে প্রোটিয়ারা। নাকি লেখা হবে আফগান রূপকথা। ম্যাচের আগে অবশ্য প্রোটিয়া কোচ রব ওয়াল্টার, আগের প্রোটিয়াদের সঙ্গে এই প্রোটিয়া দলকে মেলাতে বারণ করেছিলেন। তবে সে সময় বিশ্বাস হয়নি তার সেই কথা। কিন্তু দারুন ছন্দে থাকা প্রোটিয়াদের জয়ে কোচের কথাটিই সত্য হল।
জয়ের পর সাবেক কিংবদন্তি গ্রেইম স্মিথ তো টুইটও করে বসেছেন। সেখানে দ্বিধা নিয়ে জানতে চেয়েছেন ফাইনাল দেখতে বিমানের টিকিট কাটবেন কিনা তিনি। এখন অবশ্য সেই টিকিটটা কাটতে পারেন স্মিথ। কেননা, ওয়াল্টারের এই দল হতাশ করেনি এবার। ঘুচিয়ে দিয়েছে চোকার্স তকমা। ৬৭ বল ও ৯ উইকেট হাতে রেখে আফগানদের ৫৬ রানে অলআউট করে সতর্ক হয়ে জয় তুলে নেয় দক্ষিণ আফ্রিকা।
প্রোটিয়াদের জয়ের রাস্তাটা অবশ্য সহজ করে দিয়েছেন আফগান ব্যাটাররা। পুরো আসরজুড়ে দারুণ ক্রিকেট খেলা আফগানরা সেমিতে উঠেই দেখল ভয়াবহ ব্যাটিং বিপর্যয়। কৃতিত্বটা অবশ্য কম নয় প্রোটিয়া বোলারদের। তাদের ক্ষুরধার বোলিংয়েই যে নাস্তানাবুদ হতে হয়েছে আফগান ব্যাটারদের। ২০ রানে ৪ উইকেট হারানোর পর ২৮ রানে ৬ উইকেট। পাওয়ারপ্লেতেই পাওয়ার শেষ আফগানদের। এরপর সেই ইনিংসটা কতদূর যাবে তা অনুমেয়ই ছিল। তবে সে পর্যন্তও সেই অনুমান করা সংগ্রহটাও দাঁড় করাতে পারেনি আফগনারা। মাত্র ১১.৫ ওভারে ৫৬ রানেই অলআউট আফগানিস্তান।
আফগানদের বোলিং আক্রমণ নিঃসন্দেহে অন্যতম সেরা। তাছাড়া লড়াই করার মানসিকতা আছে তাদের। তবে সেটার জন্যও স্কোরবোর্ডে একটা চ্যালেঞ্জিং পুঁজি থাকা চায় অন্তত। আজ সেই পুঁজিটাও দাঁড় করাতে পারেনি আফগানরা। তাই ম্যাচটা তারা হেরে গিয়েছিল প্রথম ইনিংসেই। এরপর কেবল দেখার ছিল কয় ওভার পর্যন্ত ম্যাচটা টেনে নিয়ে যেতে পারে আফগানরা। কিংবা কয়টি উইকেট তুলতে পারে তারা।
ম্যাচের শুরুটা নেহায়েত মন্দ করেনি রশিদ খানের দল। ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারে আগ্রাসী ওপেনার কুইন্টন ডি ককের স্টাম্প ভেঙে দেন আসরের অন্যতম সফল বোলার ফজলহক ফারুকী। এরপর পরের ওভারে নাভিন-উল-হকও পেতে পারতেন উইকেটের দেখা। তাতে বড় বিপদে পড়তে পারত প্রোটিয়ারা। তবে স্টাম্পের পেছনে রহমানুল্লাহ গুরবাজ বুঝতে পারেননি ব্যাটে লেগেছিল বলটা। যার কারণে রিভিউও নেয়নি তারা। পরে অবশ্য ব্যাটের স্পাইক দেখে আফসোসই করতে হয়েছে তাদের। ওখানেই ম্যাচটা হাতছাড়া হয়ে যায়।