দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বান প্রসঙ্গে নির্বাচন কমিশনার (ইসি) আনিসুর রহমান বলেছেন, বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে এর চেয়ে ভালো জাতীয় নির্বাচন দেওয়া সম্ভব না। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন মানেন, আর নাই মানেন, নির্বাচন সুষ্ঠু হয়েছে। আপনারা আমার জায়গায় আসুন, তাহলে বুঝবেন, অন্য জায়গায় থেকে তো অনেক কথা বলা যায়। পরিস্থিতিটা তো বুঝতে হবে।
বৃহস্পতিবার (২৯ ফেব্রুয়ারি) কুমিল্লা সার্কিট হাউসে কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের মেয়র পদে উপনির্বাচনে আইনশৃঙ্খলা সংক্রান্ত সভা শেষে সাংবাদিকদের তিনি এসব কথা বলেন।
ইসি আনিসুর রহমান বলেন, কুমিল্লা সিটি নির্বাচনে সিসি ক্যামেরা থাকবে না, তবে যেসব প্রতিষ্ঠানে সিসি ক্যামেরা রয়েছে, সেগুলো বেসরকারিভাবে রাখা হবে। কুমিল্লা সিটি কপোরেশন নির্বাচন এবারো সুষ্ঠু সুন্দরভাবে হবে। কোনো অপশক্তিকে ভোটকেন্দ্রে প্রবেশ করার সুযোগ দেওয়া হবে না।
তিনি বলেন, ইভিএম নিয়ে একটি রাজনৈতিক দল মিথ্যাচার করছে, সত্য বলতে ইভিএমে ভোট চুরির কোনো সুযোগ নেই। যারা এসব কথা বলে, তারাই মিথ্যাচার করছেন।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এটা স্থানীয় সংসদ সদস্যের নিজ এলাকা। এখানে তিনি থাকবেন, এখানকার ভোটার তিনি, এটাই তো স্বাভাবিক, তবে নির্বাচনে আচরণবিধি লঙ্ঘন করলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন- কুমিল্লা জেলা প্রশাসক খন্দকার মু. মুশফিকুর রহমান, কুমিল্লা আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা ও রিটার্নিং কর্মকর্তা মো. ফরহাদ হোসেন, পুলিশ সুপার আবদুল মান্নান, জেলা সিনিয়র নির্বাচন কর্মকর্তা মো. মুনীর হোসাইন, র্যাব-১১ এর কোম্পানি অধিনায়ক মাহমুদুল ইসলাম।
কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের উপনির্বাচনে মেয়র পদে চারজন প্রার্থী ও তাদের প্রধান এজেন্টদের মতামত ও অভিযোগ শোনেন নির্বাচন কমিশনার আনিসুর রহমান।
টেবিল ঘড়ি প্রতীকের প্রার্থী মনিরুল হক সাক্কু বলেন, ভোটারদের একটাই শঙ্কা, তারা নির্বাচনে কেন্দ্রে গিয়ে ভোট দিতে পারবে না। আপনারা পর্যাপ্ত পুলিশ দেন কেন্দ্রগুলোতে, তাহলে ভোটাররা আসতে পারবে।
ঘোড়া প্রতীকের প্রার্থী নিজাম উদ্দিন কায়সার বলেন, নির্বাচন পরিচালনার জন্য একজন নির্বাচন কমিশনারকে আমরা এখানে চাই। এছাড়া বর্তমান সংসদ সদস্য যদি নির্বাচন আচরণবিধির আওতায় পড়েন, তাহলে উনাকেও এর আওতায় আনতে হবে।
হাতি প্রতীকের প্রার্থী নূর-উর-রহমান তানিম বলেন, আমার পোস্টার ছেঁড়া হচ্ছে প্রকাশ্যে, এগুলো বন্ধ করতে হবে। কেন্দ্রগুলো যদি সিসি ক্যামেরার আওতায় আনা যায়, তাহলে নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হবে।
বাস প্রতীকের ডা. তাহসিন বাহার বলেন, নির্বাচন সবাই মিলে সুন্দরভাবে সম্পন্ন করতে হবে। কুমিল্লা শান্তির শহর, কেউ অভিযোগ করলে তার প্রমাণ রাখতে হবে। ভুল ও মিথ্যা অভিযোগ করে অন্য প্রার্থীকে হয়রানি করা হচ্ছে।
উল্লেখ্য, ২০২২ সালে কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের তৃতীয় নির্বাচনে মেয়র নির্বাচিত হন আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকা প্রতীকের আরফানুল হক রিফাত। ২০২৩ সালের ১৩ ডিসেম্বর চিকিৎসা চলাকালে তার মৃত্যু হয়। এরপর কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের মেয়র পদটি শূন্য ঘোষণা করে নির্বাচন কমিশন উপনির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করে। আগামী ৯ মার্চ ১০৫টি ভোট কেন্দ্রের ৬৪০টি কক্ষে ভোট নেওয়া হবে। নির্বাচন ইভিএমে অনুষ্ঠিত হবে। এবার ২ লাখ ৪২ হাজার ৪৫৮ জন ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন।