কানাইঘাট উপজেলার লক্ষীপ্রসাদ পূর্ব ইউনিয়ন পরিষদের ৫নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মিছবাউর রহমানের বিরুদ্ধে এবার ২ লক্ষ টাকা চাঁদা দাবীর ঘটনায় আদালতে দরখাস্ত মামলা দায়ের করেছেন এক সৌদি প্রবাসি।
মঙ্গলবার (০৫ ডিসেম্বর) লক্ষীপ্রসাদ পূর্ব ইউপির উজানবারাপৈত গ্রামের মুসলিম উদ্দিনের পুত্র সৌদিআরব প্রবাসী রুহুল আমিন বাদী হয়ে সিলেটের কানাইঘাট আমলী আদালতে মামলাটি দায়ের করেন।
মামলায় প্রবাসি রুহুল আমিন উল্লেখ করেছেন, পাকা ঘর নির্মাণ করার জন্য রড, সিমেন্ট, বালু, পাথর ইত্যাদি বিভিন্ন ধরনের আসবাবপত্র তার পিতা মুসলিম উদ্দিন বসত বাড়িতে মজুদ করতে থাকেন। ২০২২ সালের ১০ মার্চ সন্ধ্যা ৭টার দিকে মিছবাউর রহমানসহ এজাহারনামীয় আসামিগণ প্রবাসি রুহুল আমিনের বাড়িতে এসে হুমকি দেয় পাকা ঘর নির্মাণ করতে হলে তাকে ২ লক্ষ টাকা চাঁদা দিতে হবে অন্যথায় ঘর নির্মাণ করতে দিবে না। বাদীর পিতা মুসলিম উদ্দিন এতে প্রতিবাদ করলে ইউপি সদস্য মিছবাউর রহমান ও তার সাথে থাকা বিবাদীগণ ভয়ভীতি প্রদর্শন করে। এতে দরখাস্ত মামলার সাক্ষীদের উপস্থিতিতে মিছবাউর রহমানকে চাঁদা দাবীর ২ লক্ষ টাকার মধ্যে মুসলিম উদ্দিন ৫০ হাজার টাকা প্রদান করেন।
এর কিছুদিন যাওয়ার পর আবারো মিছবাউর রহমান আরো ৫০ হাজার টাকা চাঁদা দাবী করেন। রুহুল আমিন সৌদিআরব থেকে দেশে ফিরে আসলে গত ১৮ নভেম্বর রাত ১১টার দিকে ইউপি সদস্য মিছবাউর রহমান দলবল নিয়ে দেশীয় অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত হয়ে প্রবাসির বাড়িতে এসে তাদের দাবীকৃত ২ লক্ষ টাকা দেয়ার জন্য বলে। টাকা না দিলে শান্তিতে থাকতে দিবে না বলে প্রবাসির পরিবারের সদস্যদের ভয়ভীতি প্রদর্শন করে। এতে প্রবাসি রুহুল আমিন এলাকায় বিচারপ্রার্থী হলে মিছবাউর রহমান ক্ষিপ্ত হন।
সর্বশেষ ২৪ নভেম্বর রাত ১১টার দিকে আসামিরা প্রবাসির বসত বাড়িতে এসে ফের ২ লক্ষ টাকা দাবী করে। প্রবাসি ও তার পরিবার দাবীকৃত চাঁদার টাকা না দেয়ায় মিছবাউর রহমানসহ মামলার আসামিগণ বাদীর বসত ঘরে ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করতে থাকে। এ সময় প্রবাসির পরিবারের সদস্যদের চিৎকারে আশপাশ থেকে লোকজন এগিয়ে আসলে ইউপি সদস্য মিছবাউর রহমান তার লোকদের নিয়ে চলে যায়।
এ ঘটনায় প্রবাসি রুহুল আমিন বাদী হয়ে ইউপি সদস্য মিছবাউর রহমান ও স্থানীয় কান্দলা গ্রামের নুর আহমদের পুত্র জাহির উদ্দিন, একই গ্রামের মৃত ফয়জুল হকের পুত্র মিনহাজ উদ্দিনের নাম উল্লেখ করে আরো অজ্ঞাতনামা ৩/৪ জনকে আসামি করে বিজ্ঞ আদালতে দরখাস্ত মামলা দায়ের করেন।
তিনি আরো বলেন, ইউপি সদস্য মিছবাউর রহমানের অব্যাহত হুমকি ও ভয়ভীতির কারণে তারা নিরাপত্তাহীনতায় নিজ বাড়িতে বসবাস করছেন। এমনকি তাদেরকে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানীসহ প্রকাশ্যে খুন জখমের হুমকি দিচ্ছে মিছবাউর রহমান ও তার সহযোগীরা।
এ ব্যাপারে ইউপি সদস্য মিছবাউর রহমানের মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে, বিষয়টি তার জানা নেই বলে ফোন রেখে দেন।
উল্লেখ্য, এরপূর্বে এক মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের উত্তরাধিকারী সনদের আবেদন ফরমে স্বাক্ষর দিতে ২০ হাজার টাকা দাবী করেন ইউপি সদস্য মিছবাউর রহমান। এ ব্যাপারে গত সোমবার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবরে ইউপি সদস্য মিছাউর রহমানের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করা হয়।