বাংলাদেশের বিভিন্ন প্রান্তে সড়ক ও জনপদ অধিদপ্তরের আওতায় নির্মিত ১৫০টি সেতু ও বিভিন্ন মহাসড়কের ১৪টি ওভারপাস আজ উদ্বোধন করতে যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
এই সেতু ও ওভারপাস দেশের ৮টি বিভাগে মোট ৩৯টি জেলায় তৈরি করা হয়েছে। এর মধ্যে ময়মনসিংহ বিভাগে রয়েছে ৪০টি সেতু, ঢাকা বিভাগে ৩২টি, চট্টগ্রাম বিভাগে ২৭টি ও রাজশাহী বিভাগে ২২টি সেতু। এ ছাড়াও খুলনা বিভাগে রয়েছে ১২টি সেতু, বরিশাল ও রংপুর বিভাগে রয়েছে ৮টি করে সেতু এবং সিলেট বিভাগে রয়েছে ১টি সেতু। এ ১৫০টি সেতুর মোট দৈর্ঘ্য ৯৪৫৩ দশমিক ৫৩ মিটার। এই সেতুগুলো নির্মাণ ব্যয় হয়েছে ৩ হাজার ২৮৭ কোটি ৫০ লাখ টাকা।
এ ছাড়া উত্তরবঙ্গের যানজট নিরসনে ঢাকা-রংপুর জাতীয় মহাসড়ক (এন-৫)সহ বেশ কয়েকটি মহাসড়কে নির্মাণ করা হয়েছে ১৪টি ওভারপাস। এর মধ্যে ৮টি অবস্থিত রাজশাহী বিভাগে আর ৬টির অবস্থান রংপুর বিভাগে। এ ১৪টি ওভারপাসের মোট দৈর্ঘ্য ৬৮৯ মিটার। এগুলো নির্মাণে ব্যয় হয়েছে ২০৮ কোটি ৮০ লাখ টাকা। এ সকল সেতু ও ওভারপাসসমূহ দেশের সড়ক নেটওয়ার্ক উন্নয়নে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। সরকারের নিজস্ব অর্থায়নে নির্মিত ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার ৫৫৮ দশমিক ২১ মিটার দীর্ঘ তিতাস সেতু, ৪০২ দশমিক ৬১ মিটার দৈর্ঘ্যের সুনামগঞ্জ জেলার ছাতক সুরমা সেতু, বগুড়ার ২৯৮ দশমিক ৮০ মিটার দীর্ঘ আড়িয়ারঘাট সেতু, ১৯৩ দশমিক ৩০ মিটার দীর্ঘ ঢাকা জেলার নয়ারহাট সেতু নির্মাণ করা হয়েছে।
এ ছাড়া দেশজুড়ে বিভিন্ন মহাসড়কে অবস্থিত জরাজীর্ণ, অপ্রশস্ত ও গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে বিদ্যমান বেইলি সেতুসমূহ প্রতিস্থাপন করে নির্মিত আরসিসি সেতুসমূহের মধ্যে মোট ১৫টি সেতু উদ্বোধন করা হবে। এই সেতুগুলো চালু হলে গতিশীল হবে জাতীয় মহাসড়ক। এ সকল সেতুর মধ্যে গাজীপুরের ১৮৭ দশমিক ১৮ মিটার দীর্ঘ চাপাইর সেতু ও নারায়ণগঞ্জের ১৪৯ দশমিক ৮৭ মিটার দৈর্ঘ্যের রামচন্দ্রী সেতু উল্লেখযোগ্য। ময়মনসিংহ জেলার ৬৩ দশমিক ০৫ মিটার দীর্ঘ পশ্চিম নয়াপাড়া সেতু, নেত্রকোনার ৯২ দশমিক ৮০ মিটার দীর্ঘ মহিশখলা সেতুসহ সীমান্ত সড়কের মোট ১৯টি সেতু নির্মাণ করা হয়েছে। যা বৃহস্পতিবার উদ্বোধন করা হবে।
উদ্বোধনের জন্য প্রস্তুত সেতুসমূহের মধ্যে রয়েছে জামালপুরে রৌমারী স্থলবন্দর জামালপুর-ধানুয়া কামালপুর-কদমতলা (রৌমারী) জেলা মহাসড়কে নির্মিত পাঁচটি সেতু। এগুলো হলো- ৭৬ দশমিক ০১ মিটার ধানুয়া সেতু, ৫৬ দশমিক ৯৬ মিটার কদমতলা সেতু, ৫০ দশমিক ১২ মিটার ফুলকারচর সেতুসমূহ পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতের সঙ্গে বিভিন্ন পণ্য আমদানি ও রপ্তানিতে ভূমিকা রাখবে এবং দুই দেশের সেতুবন্ধনকে আরও দৃঢ় করবে বলে সওজ’র কর্মকর্তারা জানান।
নেটওয়ার্ক ইমপ্রুমেন্ট প্রজেক্ট (বাংলাদেশ) এর আওতায় নির্মিত ১৬টি সেতুর মধ্যে কক্সবাজার জেলার ৩২১ দশমিক ৪৫ মিটার দীর্ঘ মাতামুহুরী সেতু, চট্টগ্রামের ২০৮ দশমিক ০৫ মিটার দীর্ঘ সাধু সেতু, যশোরের ১২০ দশমিক ২০ মিটার দীর্ঘ ঝিকরগাছা সেতু, নড়াইল জেলার ১০৭ দশমিক ২০ মিটার দীর্ঘ তুলারামপুর সেতু, গোপালগঞ্জের ১০৫ দশমিক ২০ মিটার দীর্ঘ গ্যারাকোলা সেতু উল্লেখযোগ্য। এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি) এর আর্থিক সহযোগিতায় চলমান সালেক সড়ক সংযোগ প্রকল্প-২ : এলেঙ্গা-হাটিকুমরুল-রংপুর মহাসড়ক চারলেনে উন্নীতকরণের মাধ্যমে নির্মিত ১৪টি সেতু উদ্বোধন করা হবে। এর মধ্যে ২৯০ মিটার দৈর্ঘ্যের সিরাজগঞ্জের নলকা সেতু এবং ১২২ দশমিক ২৩ মিটার দীর্ঘ জোড়া সেতু চালু হলে উত্তরাঞ্চলের যানবাহন চলাচল আরও সহজ হবে।
এছাড়া এই প্রকল্পের অধীনে নির্মিত সিরাজগঞ্জ, বগুড়া, গাইবান্ধা ও রংপুর জেলায় অবস্থিত মোট ১৪টি ওভারপাস চালু হলে নির্বিঘ্নে যানবাহন চলাচল করতে পারবে। ওভারপাসসমূহের মধ্যে ঢাকা-রংপুর-বাংলাবান্ধা জাতীয় মহাসড়কে নির্মিত বগুড়া জেলার ১৭৮ মিটার দীর্ঘ চারমাথা ওভারপাস ও ১০৮ মিটার দীর্ঘ মহাস্থান ওভারপাস রাজধানীর সঙ্গে যোগাযোগকে আরও সহজ ও দ্রুততর করবে বলে সংশ্লিষ্টরা জানান।
সিলেট ভয়েস/এএইচএম