দোয়ারায় মানবপাচার চক্রের ৩ সদস্য গ্রেপ্তার

দোয়ারাবাজারে মানবপাচারকারী চক্রের খপ্পরে ইতালী যাওয়ার পথে লিবিয়ায় মাফিয়া চক্রের হাতে বন্দী ৩ যুবক নির্যাতনের ঘটনায় মানবপাচার চক্রের ৩ সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। শুক্রবার রাতে তাদের আটক করা হয়।

দেশে ও বিদেশে মানবপাচার চক্রের সাথে জড়িত আটক তিনজন হলেন, উপজেলার বড়খাল গ্রামের লিবিয়া প্রবাসী আব্দুল বারেকের স্ত্রী রাজিয়া খাতুন, একই ইউনিয়নের ভাওয়ালীপাড়া গ্রামের মৃত চানমিয়ার পুত্র আবুল কাশেম (৫২) ও উরুরগাঁও গ্রামের আব্দুল মালেকের পুত্র শাহজাহান মিয়া (৬৫)।

পুলিশ সূত্র জানায়, এজাহারভুক্ত আসামি আব্দুল বারেক দীর্ঘদিন যাবৎ লিবিয়ায় থাকেন। তার মাধ্যমে আটককৃত আসামিরা মানবপাচারে সক্রিয় হয়ে উঠে। এরই সুবাদে ওই চক্র উপজেলার বাংলাবাজার ইউনিয়নের ছনুগাঁও গ্রামের কোরবান আলীর পুত্র সৌরভ আহমেদ (২২), ভিখারগাঁও গ্রামের আব্দুস ছাত্তারের পুত্র সুমন মিয়া (১৯) এবং কুশিউড়া গ্রামের ইউসুফ আলীর পুত্র নোমান মিয়া (২২) প্রত্যেকের কাছ থেকে ৪ লাখ টাকা চুক্তিতে বিভিন্ন সময়ে লিবিয়া পাঠায়। লিবিয়ায় তারা বেকার অবস্থায় অত্যান্ত দুর্বিসহ জীবনযাপন করতে থাকলে আসামি মো. আব্দুল বারেক বাদী ও সাক্ষীদের সাথে যোগাযোগ করে ৩ যুবককে লিবিয়া থেকে ইতালিতে পাঠানোর জন্য প্রস্তাব করে। এতে তাদের জনপ্রতি লিবিয়া হতে ইতালি পাঠানোর জন্য সাত লক্ষ পঞ্চাশ হাজার টাকা খরচ পড়বে বলে জানায়।

আরও পড়ুন : লিবিয়ায় মাফিয়া চক্রের হাতে বন্দী সুনামগঞ্জের তিন যুবক

বাদী ও সাক্ষীগণ আব্দুল বারেকের স্ত্রী গ্রেপ্তারকৃত মোছা. রাজিয়া খাতুন, আব্দুল বারেকের ছেলে আসামি রেজাউল করিমের হাতে সাক্ষীদের উপস্থিতিতে ৩০০ টাকার নন জুডিসিয়াল স্ট্যাম্পে লিখিতভাবে প্রত্যেকে মোট দশ লক্ষ টাকা করে এবং ২নং সাক্ষী ইউসুফ আলী দশ লক্ষ পঞ্চাশ হাজার টাকাসহ সর্বমোট ত্রিশ লক্ষ চল্লিশ হাজার টাকা নগদ বুঝিয়ে দেন। চুক্তিমত সম্পূর্ন টাকা হস্তান্তরের পর আসামি আব্দুল বারেক ৩ যুবককে লিবিয়ায় অজ্ঞাত স্থানে বন্দী করে রাখে। আসামীরা ৩ যুবককে ইতালি না পাঠিয়ে লিবিয়ায় মানবপাচারকারীর কাছে বিক্রি করে দেয়।

আসামি আব্দুল বারেকের সহযোগী অজ্ঞাতনামা মানবপাচারকারী চক্র ৩ যুবককে লিবিয়ায় অজ্ঞাত স্থানে আটক রেখে নির্মমভাবে নির্যাতন করে। এ ঘটনা সম্প্রতি বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হলে শুক্রবার রাতে মানবপাচার চক্রের তিন সদস্যকে আটক করা হয়।

দোয়ারাবাজার থানার ওসি দেবদুলাল ধর বলেন, ‘এ ব্যাপারে একটি মামলা হয়েছে। অভিযোগ খতিয়ে দেখে মানবপাচারে সক্রিয় তিন সদস্যকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। লিবিয়ায় মাফিয়াদের আটক হওয়া তিন যুবককে উদ্ধারে প্রয়োজনীয় ব্যাবস্থা নেয়া হবে।’