মহান জাতীয় সংসদে আগামী ২০২৩-২৪ অর্থ বছরের প্রস্তাবিত বাজেট ঘোষণা করা হয়েছে। প্রস্তাবিত বাজেটকে স্বাগত ও অভিনন্দন জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছেন সিলেট মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মাসুক উদ্দিন আহমদ ও মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক মো. জাকির হোসেন।
নেতৃবৃন্দ প্রস্তাবিত বাজেটকে অভিনন্দন জানিয়ে বলেন, বৃহস্পতিবার (১ জুন) মহান জাতীয় সংসদে আগামী ২০২৩-২৪ অর্থ বছরের জন্য দেশের ইতিহাসের সবচেয়ে বড় অংকের ৭ লাখ ৬১ হাজার ৭৮৫ কোটি টাকার বাজেট উপস্থাপন করা হয়েছে। এটি বর্তমান সরকারের ২৪তম, বাংলাদেশের ৫২তম এবং বর্তমান অর্থমন্ত্রীর পঞ্চম বাজেট।
মূল্যস্ফীতির চাপসহ নানা চ্যালেঞ্জের মধ্যে ৭ লাখ ৬১ হাজার ৭৮৫ কোটি টাকা ব্যয়ের বাজেট প্রস্তাব ঘোষণা করেছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদে ২০২৩-২৪ অর্থবছরের জন্য তিনি এ বাজেট উপস্থাপন করেন। এবারের বাজেট বক্তব্যের শিরোনাম নির্ধারণ করা হয়েছে “উন্নয়ন অগ্রযাত্রায় দেড় দশক পেরিয়ে স্মার্ট বাংলাদেশের অভিমুখে।”
প্রস্তাবিত বাজেটে আগামী অর্থবছরে প্রবৃদ্ধি সাড়ে ৭ শতাংশ ধরে মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) প্রাক্কলন করা হয়েছে ৫০ লাখ ৬ হাজার ৭৮২ কোটি টাকা। সে হিসেবে বাজেটের আকার দাঁড়াচ্ছে জিডিপির ১৫ দশমিক ২ শতাংশ। চলতি ২০২২-২৩ অর্থবছরেও জিডিপির ১৫ দশমিক ২ শতাংশ ধরে ৬ লাখ ৭৮ হাজার ৬৪ কোটি টাকার বাজেট দেওয়া হয়। চলতি বাজেটের তুলনায় আসন্ন বাজেটের আকার বাড়ছে ৮৩ হাজার ৭২১ কোটি টাকা।
ব্যয়ের বিপরীতে সরকার মোট রাজস্ব প্রাপ্তির লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে ৫ লাখ কোটি টাকা, যা প্রাক্কলিত জিডিপির ১০ শতাংশ। এর মধ্যে রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) নিয়ন্ত্রিত কর থেকে ৪ লাখ ৩০ হাজার কোটি টাকা আসবে। এনবিআর বহির্ভূত কর থেকে ২০ হাজার কোটি টাকা এবং কর ব্যতীত রাজস্বের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৫০ হাজার কোটি টাকা। এ ছাড়া বৈদেশিক অনুদান হিসেবে আসবে ৩ হাজার ৯০০ কোটি টাকা। চলতি বাজেটে মোট রাজস্বের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৪ লাখ ৩৩ হাজার কোটি টাকা।
অন্যদিকে বাজেটে অনুদান ব্যতীত মোট ঘাটতি নির্ধারণ করা হয়েছে ২ লাখ ৬১ হাজার ৭৮৫ কোটি টাকা, যা মোট বাজেটের ৩৪ দশমিক ৩৬ শতাংশ এবং জিডিপি ৫ দশমিক ২ শতাংশ। ঘাটতি পূরণে অভ্যন্তরীণ উৎস থেকে মোট ১ লাখ ৫৫ হাজার ৩৯৫ কোটি টাকা ঋণ নেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা ঠিক করা হয়েছে। এর মধ্যে দেশের ব্যাংকিং ব্যবস্থা থেকে ঋণ নেওয়া হবে ১ লাখ ৩২ হাজার ৩২ কোটি, আর সঞ্চয়পত্র থেকে ১৮ হাজার এবং অন্যান্য খাত থেকে নেওয়া হবে ৫ হাজার কোটি টাকা। বৈদেশিক ঋণ নেওয়া হবে ১ লাখ ২ হাজার ৪৯০ কোটি টাকার।
আগামী অর্থবছরের জন্য সরকার পরিচালন ব্যয়ের প্রাক্কলন করেছে ৪ লাখ ৭৫ হাজার ২৮১ কোটি টাকা। এ ছাড়া উন্নয়ন ব্যয়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ২ লাখ ৭৭ হাজার ৫৮২ কোটি টাকা।
এদিকে সম্প্রতি মূল্যস্ফীতি বাড়তে থাকলেও আগামী অর্থবছর গড় মূল্যস্ফীতির হার নির্ধারণ করা হয়েছে ৬ শতাংশ। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর হিসাব অনুযায়ী গত এপ্রিলে মূল্যস্ফীতির হার ৯ দশমিক ২৪ শতাংশ। আর ১২ মাসের গড় মূল্যস্ফীতির হার ৮ দশিমক ৬৪ শতাংশ।
আগামী অর্থবছরে বাজেট প্রণয়নের ক্ষেত্রে আটটি প্রধান চ্যালেঞ্জ নির্ধারণ করেছে অর্থ মন্ত্রণালয়। এর মধ্যে আমদানিজনিত মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ, তেল, গ্যাস ও সারের বিপুল ভর্তুকি প্রদান, রাজস্ব আহরণ বাড়ানো, সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনীর আওতা বাড়ানোর মতো বিষয়গুলোকে মূল চ্যালেঞ্জ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়।
সার্বিক দিক বিবেচনায় সিলেট জেলা আওয়ামী লীগ মনে করে “বাহুল্য ব্যয় পরিহার করে অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করা”-ই ২০২৩-২৪ অর্থ বছরের প্রস্তাবিত বাজেটের মূল লক্ষ্য। প্রস্তাবিত বাজেট বাংলাদেশের চলমান উন্নয়ন অগ্রযাত্রা অব্যাহত রেখে স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণের অভিমুখে এক ধাপ এগিয়ে যাওয়ার সুস্পষ্ট দিকনির্দেশনা।
নেতৃবৃন্দ বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার সূদুর প্রসারী নেতৃত্বে বাংলাদেশ যে অভাবনীয় সাফল্য অর্জন করেছে তা অব্যাহত থাকবে, ইনশাআল্লাহ। আগামীতে বাংলাদেশের শক্তিশালী অর্থনীতির ভিত গড়তে এই বাজেটের সফল বাস্তবায়নের মাধ্যমে তা সম্ভব হবে বলে আমরা মনেপ্রাণে বিশ্বাস করি।’