সিলেট মহানগর বিএনপির সম্মেলন শুরু হয়েছে। নগরীর রেজিস্ট্রারি মাঠে সম্মেলনে উপস্থিত হয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্য দিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
শুক্রবার (১০ মার্চ) সকাল ১০টায় সম্মেলন শুরু হয়ে চলে জুমার নামাজের আগ পর্যন্ত। বাদ জুমা শুরু হবে কাউন্সিল। তিনটি পদেই একাধিক প্রার্থী থাকায় গোপন ভোটে নেতা নির্বাচিত হবেন। ভোটগ্রহণ চলবে বিকেল ৫টা পর্যন্ত।
সিটি সম্প্রসারিত হওয়ায় মহানগর বিস্তৃত হয়েছে ৪২টি ওয়ার্ডে। তবে সম্মেলনে কাউন্সিলর থাকছেন পুরোনো ২৭টি ওয়ার্ডের। এই ইউনিটের সর্বশেষ সম্মেলন হয় ২০১৬ সালের ৭ জানুয়ারিতে। অর্থাৎ দীর্ঘ সাত বছর পর এই ইউনিটের সম্মেলন হতে যাচ্ছে।
মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব শিফতাহ সিদ্দিকী জানান, প্রতিটি ওয়ার্ডে ৭১ জন কাউন্সিলর থাকবেন। সব মিলিয়ে মিলে ১ হাজার ৯১৭ জন কাউন্সিলর মহানগর বিএনপির আগামী নেতৃত্ব নির্বাচিত করবেন। নির্বাচন সম্পন্নের জন্য সিলেট জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি এটিএম ফয়েজ উদ্দিনকে প্রধান নির্বাচন কমিশনার করে ৪ সদস্যের নির্বাচন কমিশন গঠন করা হয়েছে। নির্বাচন কমিশন বুধবার বিকেলে কাউন্সিলর তালিকা চূড়ান্ত করেছে।
মহানগর বিএনপির নেতাকর্মীরা জানান, এবার সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদে দ্বিমুখী লড়াই হবে। সাংগঠনিক সম্পাদক পদে ৪ জন প্রার্থী থাকলেও মূল লড়াইয়ে আছেন দুজন। সব মিলিয়ে মহানগর বিএনপির আজকের সম্মেলনে শীর্ষ তিনটি পদেই হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হবে। যদিও সম্মেলনের তারিখ ঘোষণার পর এ তিনটি পদে প্রার্থিতা ঘোষণার হিড়িক পড়েছিল। সভাপতি পদে ৪, সাধারণ সম্পাদক পদে ৭ ও সাংগঠনিক সম্পাদক পদে ৭ জন প্রার্থী হওয়ার দৌড়ে ছিলেন।
মহানগর বিএনপির সভাপতি পদে আছেন সাবেক সভাপতি নাসিম হোসাইন, আহ্বায়ক কমিটির সদস্য সচিব মিফতাহ সিদ্দিকী, সাধারণ সম্পাদক পদে লড়ছেন আহ্বায়ক কমিটির দুই যুগ্ম-আহ্বায়ক এমদাদ হোসেন চৌধুরী ও সিটি কাউন্সিলর ফরহাদ চৌধুরী শামীম। সাংগঠনিক সম্পাদক পদে প্রার্থী রেজাউল করিম নাচন, সৈয়দ সাফেক মাহবুব, আবদুল্লাহ শফি সায়ীদ সাহেদ ও মোস্তফা কামাল ফরহাদ। তবে প্রথম দুজনের মধ্যেই লড়াই হবে বলে জানা গেছে।
পক্ষকালব্যাপী প্রচারে প্রার্থীরা নিজের পক্ষে সমর্থন আদায়ে ছোটেন কাউন্সিলরদের দ্বারে দ্বারে। নগরজুড়ে ঝুলছে তাদের পোস্টার, ব্যানার ও ফেস্টুন। কদর বেড়েছে তৃণমূল নেতাকর্মীদের।
আর কয়েক মাস পরেই সিলেট সিটি করপোরেশনের নির্বাচন। এই নির্বাচনে বিএনপি অংশ নেবে কি না তা নিশ্চিত নয়। তারপরও মহানগর বিএনপির সম্মেলনের প্রচারে বিষয়টি থাকছে আলোচনায়। ফলে কাউন্সিলররা ভেবে-চিন্তেই নির্বাচন করবেন আগামী নেতৃত্ব।
এদিকে মহানগর বিএনপির সম্মেলন উপলক্ষে বৃহস্পতিবার (৯ মার্চ) নগরীর দরগাহ গেটস্থ কেন্দ্রীয় মুসলিম সাহিত্য সংসদের শহিদ সুলেমান হলে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। এ সময় জানানো হয়, তিন পদে লড়ছেন ৮ প্রার্থী।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য উপস্থাপন করেন সিলেট মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক আবদুল কাইয়ুম জালালী পংকী। উপস্থিত ছিলেন বিএনপির কেন্দ্রীয় ভাইস চেয়ারম্যান ডা. এজেডএমএ জাহিদ হোসেন, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা খন্দকার আবদুল মুক্তাদির, এনামুল হক চৌধুরী, সিলেট সিটি করপোরেশনের মেয়র বিএনপির কেন্দ্রীয় সদস্য আরিফুল হক চৌধুরী, কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ডা. সাখাওয়াত হাসান জীবন, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক কলিম উদ্দিন আহমদ মিলন, কেন্দ্রীয় সদস্য মিজানুর রহমান চৌধুরী, সিলেট জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এমরান আহমদ চৌধুরী, মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব মিফতাহ সিদ্দিকী, মহানগর বিএনপির যুগ্ম-আহ্বায়ক সালেহ আহমদ খসরু, রেজাউল হাসান কয়েস লোদী নজিবুর রহমান নজিব, মঈনউদ্দিন সুহেল, মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য মাহবুবুল কাদির শাহী ও মহবুব চৌধুরী।
লিখিত বক্তব্যে আবদুল কাইয়ুম জালালী পংকী বলেন, বিএনপি সবসময়ই গণতন্ত্রের চর্চায় বিশ্বাসী। তাই দায়িত্ব পেয়ে নগরীর প্রতিটি ওয়ার্ডে তৃণমূলের প্রত্যক্ষ ভোটে কমিটি উপহার দিয়েছি। আমরা কখনোই কমিটি চাপিয়ে দিইনি। এরই ধারাবাহিকতায় সিলেট মহানগর বিএনপির কমিটি গঠনের লক্ষ্যে দ্বিবার্ষিক কাউন্সিলের আয়োজন করা হয়েছে।