সিলেটের গোলাপগঞ্জ পৌরসভা এলাকায় ৮টি পরিবারের দীর্ঘদিনের চলাচলের রাস্তায় দেওয়াল নির্মাণ করে প্রতিবন্ধকতা তৈরির অভিযোগ পাওয়া গেছে।
বুধবার (২৫ জানুয়ারি) বেলা ২টায় সিলেট জেলা প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে এ অভিযোগ করেন গোলাপগঞ্জ পৌরসভার ৩ নম্বর ওয়ার্ডের ফুলবাড়ী পূর্বপাড়ার মৃত আব্দুর রাজ্জাকের ছেলে মো. আলাউদ্দিন।
লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, গোলাপগঞ্জ পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-১ এর কতিপয় অসাধু কর্মকর্তা ও ঢাকা দক্ষিণ ইউনিয়নের ৮ ওয়ার্ড সদস্য শিপার আহমদ ৮টি পরিবারের চলাচলের একমাত্র রাস্তা বন্ধ করে দিয়েছেন। এ অবস্থায় এই ৮ পরিবারের লোকজন অনেকটা অবরুদ্ধ হয়ে পড়েছেন।
আলাউদ্দিন জানান, গোলাপগঞ্জ পৌরসভার ৩ নম্বর ওয়ার্ডে অবস্থিত পল্লী বিদুৎ জোনাল অফিসের পূর্ব পাশে ফুলবাড়ী মৌজার ৩১৬৪, ৩১৬৫, ৩১৬৬, ৩১৯৫, ৩২৭৬, ৩১৮৩ এবং ৩১৮২ নম্বর দাগের ভূমিতে তাদের ৮ পরিবারের বাস। এ অফিস সংলগ্ন দক্ষিণ দিকে ৮ ফুট প্রশস্ত সরকারি রাস্তাটি ৩৫ বছরেরও বেশি সময় ধরে তারা ব্যবহার করছেন। তাদের এই ৮ পরিবারের যাতায়াতের একমাত্র রাস্তা এটি। এত বছর কেউ কোনো বাধা-বিপত্তি না দিলেও হঠাৎ করে ২০২১ সালে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির কতিপয় অসাধু কর্মকর্তার যোগসাজশে এ রাস্তায় পাকা সীমানা দেয়াল নির্মাণ করেন ইউপি সদস্য শিপার আহমদ। ফলে আলাউদ্দিনসহ ৮ পরিবারের চলাচলের একমাত্র রাস্তাটি বন্ধ হয়ে যায়। দেয়ালের মাঝখানের একটি ছিদ্রপথ দিয়ে বর্তমানে তারা অনেক কষ্টে যাতায়াত করছেন। তবে সেই ছিদ্রপথটিও বন্ধ করে দেওয়ার তোড়জোড় চলছে। এ অবস্থায় আলাউদ্দিনরা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির বিভিন্ন দপ্তরে এ ব্যাপারে যোগাযোগ করলে নির্মাণকৃত সীমানা দেওয়ালের বাইরে অবস্থিত খাল দিয়ে যাতায়াত করার পরামর্শ দেওয়া হয়। পরে আলাউদ্দিন বাদী হয়ে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-১ এর ডেপুটি ম্যানেজার গোপাল চন্দ্র শিব, ইঞ্জিনিয়ার এন্ড মিটার ইন্সপেক্টর হাসান আহমদ, প্রহরী মোতালিব মিয়া ও শিপার আহমদ মেম্বারকে অভিযুক্ত করে সিলেট নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আদালত-২ এ একটি অভিযোগ দায়ের করেন।
সংবাদ সম্মেলনে আলাউদ্দিন আরও জানান, বিজ্ঞ আদালত তাঁর অভিযোগটি আমলে নিয়ে গোলাপগঞ্জ সহকারী কমিশনারকে (ভূমি) তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেন। এর প্রেক্ষিতে গোলাপগঞ্জের সহকারী কমিশনার (ভূমি) আবিদা সুলতানা তদন্ত শেষে গত বছরের ২১ মার্চ আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করেন। তাঁর প্রতিবেদনে সেখানে সরকারি রাস্তা থাকার এবং চলাচলের প্রমাণ উঠে আসে।
এদিকে, বিষয়টি নিয়ে গোলাপগঞ্জ পৌর মেয়র ও উপজেলা চেয়ারম্যানের দ্বারস্থ হন আলাউদ্দিন। তবে কোনো সুরাহা হয়নি। উপরন্তু মেম্বার শিপার আহমদ রাস্তাটি ব্যবহার করতে দেওয়ার বিনিময়ে ২০ লক্ষ টাকা চাঁদা দাবি করেন আলাউদ্দিনের কাছে। এছাড়া রাস্তা নিয়ে মামলা করায় হুমকি-ধমকিও প্রদান করেন অভিযুক্ত ইউপি মেম্বার।
এ অবস্থায় মানবিক দিক বিবেচনা করে ওই রাস্তায় নির্মাণকৃত সীমানা দেয়াল ভেঙে ৮ পরিবারের একমাত্র চলাচলের রাস্তাটি খুলে দেওয়ার জোর দাবি জানান আলাউদ্দিন। এছাড়া শিপার মেম্বারের হুমকি-ধমকি ও হয়রানি থেকে বাঁচতে সংবাদ সম্মেলনে তিনি প্রশাসনসহ সংশ্লিষ্ট সকল মহলের সহযোগিতা ও সুদৃষ্টি কামনা করেন।