সিলেটের গোলাপগঞ্জে মাঠ জুড়ে শোভা পাচ্ছে সরিষা ফুলের সমারোহ। চির সবুজের বুকে যেন কাঁচা হলুদের আলপনা। সরিষা ফুলের হলুদ রাজ্যে এখন মৌমাছির গুঞ্জনে মুখরিত। যেখানে সরিষার বাম্পার ফলন আশা করছেন উপজেলার কৃষকেরা। প্রচন্ড শীতের মধ্যে কৃষকেরা দিন-রাত ক্ষেতের মধ্যে অবিরাম কাজ করে যাচ্ছেন। মাত্র কয়েকদিন পরেই যে তাদের স্বপ্ন পূরণ হতে চলেছে।
সরেজমিনে উপজেলার শরীফগঞ্জ ইউনিয়নের হাকালুকি হাওর পাড়ে গেলে দেখা যায়, বিস্তির্ণ মাঠ জুড়ে উঁকি দিচ্ছে হলুদ সরিষা। যেদিকে চোখ যায় হলুদের সমারোহ। যেন প্রকৃতি সেজেছে হলুদ রঙে। উপজেলার মাঠে ক্ষেতের পর ক্ষেত সরিষার আবাদ দেখা গেছে। মাঠের পর মাঠজুড়ে সরিষা ফুলের নয়নাভিরাম দৃশ্য।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, ‘চলতি বছর উপজেলায় ৬৫১ হেক্টর জমিতে সরিষার চাষ হয়েছে। এরমধ্যে সবচেয়ে বেশি উপজেলার শরীফগঞ্জ ইউনিয়নের হাকালুকি হাওরের পাশে ৩৭০ হেক্টর জমিতে সরিষার চাষ হয়েছে।’
আরও জানা যায়, ‘উপজেলা প্রশাসনের অর্থায়নে (এডিপি) উপজেলার এক হাজার কৃষকদের মাঝে দুই হাজার কেজি সরিষার বীজ বিতরণ করা হয়েছে। এছাড়া কৃষকদের মাঝে প্রণোদনা দেওয়া হয়। সার-বীজ বিতরণ করা হয়।’
উপজেলার শরীফগঞ্জ ইউনিয়নের ধলিয়ার হাওর এলাকার কৃষক ইসমাইল হোসেন সিরাজি। তিনি বলেন, এ বছর ৬৫ কিয়ার জমিতে তিনি সরিষার চাষ করেছেন। এখন পর্যন্ত তার খরচ হয়েছে প্রায় দেড় লাখ টাকা। সবশেষে তিনি ৪-৫ লাখ টাকা লাভ করবেন বলে জানান।
তিনি বলেন, গত বছর ১০ কিয়ার জমিতে সরিষার চাষ করেছিলেন। চলতি বছর উপজেলা থেকে ১০ কেজি সরিষার বীজ পেলেও সেটিতে ফলন হয়নি। তবে উপজেলা কৃষি অফিস থেকে সব ধরণের পরামর্শ পাচ্ছেন।
শরীফগঞ্জ ইউনিয়নের মেহেরপুর গ্রামের কৃষক মাহমুদুল হাসান বেলাল বলেন, চলতি বছর তিনি প্রায় ১৫ একর জমিতে সরিষার চাষ করেছেন। বর্তমানে খরচ হয়েছে প্রায় ২০ হাজার টাকার মতো। সবশেষে তিনি ৬০ হাজার টাকার মতো লাভ করতে পারবেন বলে জানান। উপজেলা কৃষি অফিস থেকে বীজ-সার পেয়েছেন। এছাড়া সকল ধরণের পরামর্শ তিনি পাচ্ছেন বলে জানান।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. মাশরেফুল আলম বলেন, চলতি বছর উপজেলায় ৬৫১ হেক্টর জমিতে সরিষার চাষ হয়েছে। এবার উপজেলায় সরিষার বাম্পার ফলন হয়েছে। কৃষকদের সবধরণের সহযোগিতা ও পরামর্শ উপজেলা কৃষি অফিস থেকে প্রদান করা হচ্ছে।