‘মরণ ফাঁদ’ চুনারুঘাটের রেমা-কালেঙ্গা ওয়াচ টাওয়ার

হবিগঞ্জ জেলার চুনারুঘাট উপজেলায় অবস্থিত রেমা কালেঙ্গা অরণের ওয়াচ টাওয়ার যেন মরণ ফাঁদে পরিণত হয়েছে। এতে আতঙ্কিত বোধ করছেন আগত পর্যটকরা।

উপজেলা শহর থেকে ১৩ কিলোমিটার দূরে ১০ নম্বর মিরাশি ইউনিয়ন এবং ৯ নম্বর রানীগাঁও ইউনিয়ন পরিষদের এলাকা ও পার্শ্ববর্তী শ্রীমঙ্গল উপজেলাসহ ভারতের ত্রিপুড়া ঘেঁষে বাংলাদেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম অভয়ারণ্য রেমা-কালেঙ্গা। যা শকুনের একমাত্র আবাস্থল হিসেবেও পরিচিত। যার ফলে দেশ-বিদেশের অসংখ্য পর্যটক পরিদর্শনসহ নানা গবেষণার জন্য এখানে ছুটে আসেন।

কিন্তু রেমা-কালেঙ্গা পর্যবেক্ষণের দীর্ঘদিনের পুরনো একমাত্র ওয়াচ টাওয়ারে ফাটল ধরে এ যেন এক মরণ ফাঁদে পরিণত হয়ে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে আছে। যেকোনো মুহূর্তে ঘটতে পারে মৃত্যুর মতো দুর্ঘটনা।

রেমা-কালেঙ্গা বনের রেঞ্জ কর্মকর্তার কার্যালয়ের তথ্য মতে, ১ হাজার ৭৯৫ হেক্টর আয়তনের এই বনকে ১৯৮২ সালে স্বীকৃতি দেওয়া হয়। ১৯৯০ সালে বন বিভাগের তত্ত্বাবধানে একটি ওয়াচ টাওয়ার নির্মাণ করা হয় রেমা-কালেঙ্গা অভয়ারণ্য পর্যবেক্ষণের জন্য। কালেঙ্গা বিজিবি ক্যাম্প সংলগ্ন পাহাড়ি টিলার উপর নির্মিত এই টাওয়ারের উচ্চতা প্রায় ৭০ মিটার। বিভাগীয় বন কর্মকর্তার কার্যালয় থেকে দরপত্র আহ্বান করে এটি নির্মাণ করা হয়েছিল।

স্থানীয় বাসিন্দাদের কাছ থেকে জানা যায়, অধিক পরিমাণে পর্যটক টাওয়ারের উপরে উঠলে নড়বড় করে। টাওয়ারের একাধিক স্থানে রেলিং নেই। একাধিক স্থানে দেখা দিয়েছে ফাটল। রেমা-কালেঙ্গা প্রাকৃতিক অভয়ারণ্য ভালোভাবে দেখতে টাওয়ারের উপরে উঠতেই ভয়ে পর্যটকদের বুক ধড়ফড় করে। ঝুঁকিপূর্ণ টাওয়ারটি এখন পর্যটকদের কাছে আতঙ্কের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

এ বিষয়ে রেমা-কালেঙ্গার রেঞ্জ কর্মকর্তা সৈয়দ খলিলুর রহমানের সাথে কথা হলে তিনি বলেন, ইতোমধ্যে আমরা টাওয়ারের উপরে ওঠার ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে দিয়েছি। তবে টাওয়ারটি অফিস থেকে দূরবর্তী স্থানে হওয়ায় সবসময় আমাদের নজর রাখা সম্ভব হচ্ছে না।

স্থানীয় উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আবদুল কাদির লস্কর বলেন, স্থানীয় বাসিন্দাসহ গণমাধ্যমকর্মীদের মাধ্যমে টাওয়ারের দুরবস্থা সম্পর্কে অবগত হয়েছি। এ নিয়ে আমি কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলেছি। আশা করি শিগগির এ সমস্যা সমাধান করার উদ্যোগ নেওয়া হবে।

উল্লেখ্য, রেমা-কালেঙ্গা তিনটি বিট নিয়ে গঠিত। এতে বিরল প্রজাতির প্রাণীসহ ১৮ প্রজাতির সরীসৃপ, ৬৩৮ প্রজাতির গাছপালা ও ১৮ প্রজাতির সাপের অবস্থান নিশ্চিত হওয়া গেছে।