প্রশাসনের আশ্বাসের পর সুনামগঞ্জে অনির্দিষ্টকালের জন্য ডাকা বাস ধর্মঘট প্রত্যাহার করা হয়েছে। সড়কে রাখা বাস আটকের প্রতিবাদে এই বাস ধর্মঘটের ডাক দেন পরিবহন শ্রমিক ও মালিকরা। ২৪ ঘণ্টা পর প্রশাসনের আশ্বাসে ধর্মঘট প্রত্যাহার করেন তারা।
শুক্রবার (২৩ নভেম্বর) বিকেলে পরিবহন শ্রমিক নেতাদের নিয়ে আলোচনায় বসে সুনামগঞ্জ জেলা প্রশাসন। আলোচনায় তাদের দাবি মেনে নিয়ে ধর্মঘট প্রত্যাহারের আহ্বান জানান জেলা প্রশাসক মো. জাহাঙ্গীর হোসেন ও পুলিশ সুপার মোহাম্মদ এহ্সান শাহ্।
ধর্মঘট প্রত্যাহারের বিষয়টি নিশ্চিত করে সুনামগঞ্জ জেলা পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি সেজাউল করিম বলেন, গতকাল (বৃহস্পতিবার) সন্ধ্যায় ওয়েজখালী এলাকার সড়ক থেকে শ্যামলী, মামুন ও সাকিল পরিবহনের তিনটি বাস পুলিশ লাইন্সে নিয়ে আটকে রাখা হয়। এ জন্য বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা থেকে অনির্দিষ্টকালের পরিবহন ধর্মঘটের ঘোষণা দেওয়া হয়।
তিনি বলেন, ‘শুক্রবার বিকেলে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে মিটিংয়ে বসেছিলাম। সেখানে জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপার উপস্থিত ছিলেন। আমরা জানিয়েছি বাস টার্মিনালে লোকাল বাসই রাখার জায়গা হয় না। এর মধ্যে আন্তজেলা বাস রয়েছে ৮০টির বেশি। এই বাসগুলো টার্মিনালে রাখার কোনো ব্যবস্থা নেই। আমরা বাস টার্মিনালের পুকুর ভরাট করে টার্মিনাল বড় করার দাবি জানিয়েছি। সেই দাবি তারা মেনেছেন। বাস টার্মিনাল বড় না করা পর্যন্ত আমরা সড়কের ওপর গাড়ি রাখতে পারব সেটিও মেনেছেন। তাই পরিবহন ধর্মঘট প্রত্যাহার করেছি।’
সুনামগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস) রিপন কুমার মোদক বলেন, সুনামগঞ্জের জেলা প্রশাসক এবং পুলিশ সুপারের সঙ্গে পরিবহন শ্রমিক নেতাদের আলোচনা সভা হয়। সেখানে পরিবহন শ্রমিক নেতৃবৃন্দ তাদের ডাকা ধর্মঘট প্রত্যাহার করে নেন। বর্তমানে যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে।
জেলা প্রশাসক মো. জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, ‘বাস ধর্মঘট নিয়ে আজ বিকেলে পরিবহন শ্রমিক নেতাদের সঙ্গে বসেছিলাম। তারা কিছু দাবি জানিয়েছেন। সড়কের শৃঙ্খলা রক্ষা করতে আমরা সেগুলো বাস্তবায়ন করব।’
এর আগে বাস মালিক ও শ্রমিকদের ডাকা এ ধর্মঘটে কার্যত অচল হয়ে পড়ে পুরো জেলার যোগাযোগ ব্যবস্থা। বৃহস্পতিবার (২৪ নভেম্বর) সন্ধ্যা থেকে আন্তঃজেলা ও দূরপাল্লার কোনো বাস চলাচল করেনি। শুক্রবার (২৫ নভেম্বর) সকাল থেকে পরিবহন ধর্মঘটের কারণে সুনামগঞ্জ থেকে ঢাকা, কুমিল্লা, ময়মনসিংহ, নেত্রকোনা, চট্টগ্রাম, গাজীপুর, সিলেট ছাড়াও আন্তঃজেলা ছাতক, জগন্নাথপুর ও দিরাই রুটে কোনো ধরনের বাস, ট্রাক বা মাইক্রোবাস চলাচল করতে দেখা যায়নি। এতে চরম জনভোগান্তি তৈরি হয়। এ অবস্থায় যাত্রীদের অনেকে ক্ষোভ প্রকাশও করেছেন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বৃহস্পতিবার বিকেলে সুনামগঞ্জ পৌর শহরের ওয়েজখালী এলাকার সড়ক থেকে শ্যামলী, মামুন ও সাকিল পরিবহনের তিনটি দূরপাল্লার বাস অবৈধ পার্কিংয়ের দায়ে জব্দ করে পুলিশ লাইন্সে এনে রাখা হয়। এরই প্রতিবাদে অনির্দিষ্টকালের ধর্মঘটের ডাক দেয় বাসচালক ও শ্রমিকরা। এরপর বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা থেকে শুরু হয় পরিবহন ধর্মঘট।