সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর উপজেলায় ভোটার তালিকায় ছবি তুলতে গিয়ে এক প্রতিবন্ধী নারী বিড়ম্বনার শিকার হয়েছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। সকাল থেকে লাইনে দাঁড়িয়ে ছয় ঘণ্টা অপেক্ষা করেও ছবি তুলতে পারেননি ওই প্রতিবন্ধী নারী।
নিরুপায় হয়ে ওই প্রতিবন্ধী নারীকে নিয়ে তার মা বাড়ি ফেরার উদ্দেশে রওয়ানা হলে বিষয়টি স্থানীয় এক গণমাধ্যমকর্মীর নজরে আসে। বিষয়টি নির্বাচন কর্মকর্তাকে মুঠোফোনে জানানো হলে তিনি ওই নারীর ছবি তোলার জন্য সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দেন। পরে বিকেল ৫টায় ছবি তুলে তিনি বাড়ি যান।
ঘটনাটি ঘটেছে গতকাল সোমবার (১৪ নভেম্বর) উপজেলার মীরপুর ইউনিয়ন পরিষদে।
প্রত্যক্ষদর্শী ও এলাকাবাসী সূত্র জানায়, ভোটার তালিকা হালনাগাদ কার্যক্রমের অংশ হিসেবে মীরপুর ইউনিয়ন পরিষদের হলরুমে ছবি তোলার জন্য যান মীরপুর ইউনিয়নের কচুরকান্দি গ্রামের নইম উল্যার মেয়ে সুমা বেগম (২৪) ও তার মা আয়শা বেগম। সকাল ১০টায় ইউনিয়ন পরিষদে গেলে ছবি তোলার দায়িত্বে থাকা লোকজন প্রতিবন্ধী সুমার ছবি পরে তোলা হবে বলে তাদের কক্ষ থেকে বের করে দেন।
পরে একাধিকবার লাইনে দাঁড়িয়ে থেকে ছবি তোলার চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়ে বিকেল ৪টায় মাকে নিয়ে চলে যেতে চাইলে বিষয়টি স্থানীয় গণমাধ্যমকর্মী জুয়েল মিয়ার নজরে আসে। জুয়েল তখন ছবি তোলার দায়িত্বে থাকা অপারেটর সুমন মিয়াকে অনুরোধ করেন ছবি তুলে দিতে। কিন্তু সুমন প্রতিবন্ধী নারীর ছবি তুলতে বিলম্ব হবে বলে জানান।
এ প্রসঙ্গে সাংবাদিক জুয়েল মিয়া বলেন, প্রতিবন্ধী নারীকে নিয়ে বৃদ্ধা মায়ের অসহায়ত্ব দেখে আমি বিষয়টি উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তাকে জানালে তিনি মুঠোফোনে দ্রুত ওই নারীর ছবির তুলতে নির্দেশ দেন। পরে বিকেল ৫টায় ওই নারীর ছবি তোলা হয়।
সুমা বেগম মুঠোফোনে বলেন, প্রতিবন্ধী বলে অবহেলার শিকার হয়ে সাত ঘণ্টা পর ছবি তুলেছি। রোদের মধ্য বাইরে অপেক্ষা করতে গিয়ে অনেক কষ্ট হয়েছে।
সুমার মা আয়েশা বেগম বলেন, জাতীয় পরিচয়পত্রের জন্য মেয়ের ছবি তুলতে এসে বিড়ম্বনার শিকার হয়ে কষ্ট পেয়েছি। সারাদিন অপেক্ষার পরও ছবি তোলার দায়িত্বে থাকা লোকজন ও লাইনে দাঁড়ানো লোকজনের সহযোগিতা পাইনি। পরে যাদের সহযোগিতায় মেয়ের ছবি তুলতে পেরেছি তাদের কাছে কৃতজ্ঞ।
জগন্নাথপুর উপজেলার নির্বাচন কর্মকর্তা মুজিবুর রহমান বলেন, বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন বা প্রতিবন্ধীদেরকে এসব কাজে অগ্রাধিকার দেওয়ার কথা। বিষয়টি জানার পর আমি তাৎক্ষণিক ছবি তোলার পদক্ষেপ নিয়েছি।