উদ্বোধনের দুইদিনের মাথায় অন্ধকারে রানীগঞ্জ সেতু!

সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুরে কুশিয়ারা নদীর ওপর নির্মিত সিলেট বিভাগের দীর্ঘতম রানীগঞ্জ সেতু উদ্বোধনের মাত্র দুইদিনের মাথায় নিভে গেল সেতু ও এপ্রোচের উপরে থাকা প্রায় পনেরটি লাইট। ফলে আলোচিত এ সেতুটি অন্ধকারে নিমজ্জিত।

এদিকে রাতে বেলা সেতু উপভোগ করতে আসা লোকজন এমন অন্ধকারের কবলে পড়ে ক্ষোভ ও নিন্দা জানিয়েছেন।

সূত্র জানায়, ২০১৭ সালে সড়ক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এবং তৎকালীন অর্থ ও পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী বর্তমান পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান সেতুর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। ৭০২ মিটার দৈর্ঘ্য ও ১০ দশমিক ২৫ মিটার বক্স গার্ডার সেতুটি দেড়শ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত হয়েছে। মূল সেতু নির্মাণ ও লাইটিং এর কাজ করে এমএম বিল্ডার্স ইঞ্জিনিয়ারিং লিমিটেড।

গেল বুধবার দিবাগত রাতে সেতুর উপরে গিয়ে দেখা যায়, সেতুর উত্তর পাড়ের এপ্রোচের লাইট বসানো শুরুর স্থান থেকে প্রায় পনেরটি লাইট নিভে আছে। মাঝে মধ্যে একটি লাইট জ্বলছে-নিভছে।

ভাটি অঞ্চলের এই বহুল প্রতীক্ষিত সেতু উদ্বোধনের পর সাফল্য দেখার জন্য হবিগঞ্জ জেলা ও সুনামগঞ্জ জেলার বিভিন্ন স্থান থেকে প্রাইভেটকার, মোটরসাইকেল, মাইক্রোসহ বিভিন্ন যানবাহনে চড়ে শত শত লোক সন্ধ্যার পর ছুটে আসছেন কুশিয়ারার পাড়ে। দর্শনার্থীরা সেতুর লাইট নিভানো দেখে সেলফী না তুলে সময় কাটিয়ে আবার যার যার গন্তব্যস্থলে ফিরে যাচ্ছেন।

উদ্বোধনের দিন থেকে দর্শনার্থীদের আসতে দেখা যায় এবং তাদের আনন্দ-উল্লাস করতে দেখা যায়। রাতের দৃশ্য দেখার জন্য আসা জনসাধারণ হতাশ হয়ে ফিরে গেছেন। সেতু নিমার্ণকারী প্রতিষ্ঠানের এ কাজের নিন্দা জানান।

সেতু দেখতে আসা আলীনুর রহমান, শাহেদ মিয়া, হাবিব উদ্দিনসহ আরো অনেকেই জানান, কুশিয়ারা নদীর উপর দাঁড়িয়ে অস্তমিত সূর্যের আলোর রূপ দেখতে ও বিশুদ্ধ বাতাসে শ্বাস নিতে পরিবার-পরিজন নিয়ে অনেকে ছুটে আসছেন এখানে। সারা দিনের কাজ শেষে জনসাধারণ সন্ধ্যার পর জড়ো হন সেতুর উপর রাতে লাইটে সৌন্দর্য বৃদ্ধির কারণেও বেড়েছে পর্যটকরা কিন্তু লাইটিং সমস্যার জন্য সে আনন্দ উপভোগ করা হয় না। উত্তর পাড়ের লাইট গুলো অপ থাকায় হতাশ হয়ে ফিরে যাচ্ছি। আমাদের দাবী দ্রুত সময়ে ভিতরে লাইট গুলো আবার চালু করা হোক।

এ বিষয়ে এমএম বিল্ডার্স ইঞ্জিনিয়ারিং লিমিটেড এর রানীগঞ্জ সেতুর প্রজেক্ট ম্যানেজার হারুনুর রশিদ জানান, সেতু উত্তর পাশের লাইটগুলো কিছু টেকনিক্যাল সমস্যার জন্য জ্বলছে না। ঢাকা থেকে কিছু মালামাল এনে কাজ করলে আবার লাইটগুলো চালু হবে। আর প্রায় সপ্তাহ খানের সময় লেগে যাবে।

প্রসঙ্গত, গেল সোমবার (৬ নভেম্বর) সারাদেশের শত সেতুর সাথে রানীগঞ্জ সেতুর ভার্চ্যুয়ালি উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সিলেট বিভাগের সবচেয়ে বড় এ সেতু উদ্বোধনের মাধ্যমে হাওড়বাসীর সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থায় এক যুগান্তকারী ইতিহাস সৃষ্টি হয়।