২০১৯ সালের শেষের দিক থেকে উচ্চশিক্ষা গ্রহণের বুকভরা স্বপ্ন নিয়ে বাংলাদেশ থেকে যুক্তরাজ্যে পাড়ি জমাচ্ছেন শিক্ষার্থীরা। এই শিক্ষার্থীদের ৫ শতাংশ তাদের উচ্চশিক্ষা গ্রহণ সম্পন্ন করছে। ৫০ শতাংশ শিক্ষার্থী চলে যাচ্ছে পাশ্ববর্তী ইউরোপের দেশ ফ্রান্স, ইতালি বা স্পেনে। আর ৪৫ শতাংশ শিক্ষার্থী স্থায়ী বসবাসের জন্য থেকে যাচ্ছে যুক্তরাজ্যে।
বাংলাদেশ থেকে মানুষ ইউরোপে প্রবেশ করছে- এটা অবশ্য আমাদের দেশের ভালো একটি দিক। তবে হুমড়ি খেয়ে আসা মঙ্গলজনক নয়! কারণ বর্তমানে ইংল্যান্ডে একটিমাত্র বাড়ির অভাবে অসংখ্য শিক্ষার্থী খোলা আকাশের নিচে রাতযাপন করছে। ইংল্যান্ডের লন্ডন শহরে বর্তমানে ঘর পাওয়া খুবই কষ্টসাধ্য। এখানে কাজের পর্যাপ্ত সুযোগ রয়েছে, তবে সেই কাজের অর্থ দিয়ে সবকিছু চালিয়ে নেয়া বেশ কঠিন।
ঢাকার মিরপুরের বাসিন্দা সুমিলা জানান, সাড়ে ১১ লাখ টাকা খরচ করে লন্ডনে এসেছেন তিনি। ঢাকার মতিঝিল এলাকার নাহার মার্কেটে (চতুর্থ তলা) ইউকে ভিসা রিফিউজড সেন্টার তার ভিসা প্রসেসিং করেছে। পূর্ব লন্ডনের ওয়েস্টহামে বাঙালি মালিকানাধীন ব্রিট কলেজে ভর্তি হয়েছেন তিনি। নামমাত্র একটি কলেজ। ছোট ছোট কয়েকটি কক্ষ। সেখানে কিছু ডেস্ক-বেঞ্চ ছাড়া আর কিছুই নেই। অথচ কলেজের অফার লেটার ও ভিসা প্রসেসিং সেন্টারে কত না আকাশকুসুম সুযোগ-সুবিধার কথা বলা হয়েছিল! বলা হয়েছিল হোস্টেল আছে। এয়ারপোর্ট থেকে গিয়েই হোস্টেলে উঠতে পারবেন। কিন্তু হিথ্রো এয়ারপোর্টে পা রাখতেই বাস্তবতা বুঝতে শুরু করেন সুমিলা। যত দিন যাচ্ছে ততই বুঝতে পারছেন বাস্তবতা কাকে বলে। লেখাপড়া আর কলেজ বলতে এখানে কিছুই নেই। অথচ ভিসা প্রসেসিং সেন্টার থেকে বলা হয়েছিল লন্ডনে থাকা-খাওয়া ও অর্থের কোনো অভাব হবে না।
বাংলাদেশ থেকে যারা উচ্চশিক্ষা গ্রহণে ইংল্যান্ডে আসার প্রস্তুতি নিচ্ছেন তারা আসুন, আপনাদেরকে স্বাগতম। আমার অনুরোধ, আসার পূর্বে অন্তত বসবাসের ঘর ও কাজ কনফার্ম করে আসবেন। এখানে শুধু ঘরের অভাবে শত শত শিক্ষার্থী খোলা আকাশের নিচে এবং টাকা দিয়ে হোটেলে রাতযাপন করছেন। তবে আপনার যদি যেকোনো একটি কাজ কনফার্ম করা থাকে, তাহলে ইংল্যান্ডে জীবনযাত্রা কিছুটা হলেও সহজ হয়ে যাবে।
লেখক : যুক্তরাজ্য প্রবাসী সাংবাদিক