সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর উপজেলাবাসীর স্বপ্নের সেতুটি কুয়িয়ারা নদীর উপর দিয়ে রাণীগঞ্জ সেতুটি উদ্বোধনের অপেক্ষায় প্রহর গুনছে। এটিকে সিলেট বিভাগের সবচেয়ে বড় সেতু বলা হচ্ছে। সেতুটির কাজ ইতোমধ্যে শেষ হলেও এখন লাইটিং ও সৌন্দর্য্য বর্ধনের কাজ চলছে। সেতুটি যখন উদ্বোধনের দিনক্ষন ঘনিয়ে আসছে ঠিক তখনই সেতুটির উত্তর পাড়ের বিভিন্ন স্থানে অ্যাপ্রোচ সড়কটি ধ্বসে গেছে। আবার কোন কোন স্থানে দেবে গেছে।
এতে করে জগন্নাথপুর উপজেলা ও পার্শ্ববর্তী উপজেলার জনসাধারণের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে। প্রশ্ন উঠেছে কাজের মান নিয়েও।
বিভিন্ন এলাকা থেকে প্রতিদিন সেতুটি দেখতে আসা অনেকেই জানান, কাজের সঠিক তদারকি না থাকায় অ্যাপ্রোচ সড়কের ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান নিম্ন মানের কাজ করেছে। যার ফলে যানবাহন চলাচল ছাড়াই সেতুটি উদ্বোধনের আগেই অ্যাপ্রোচ সড়কটি ধ্বসে গেছে।
জানা যায়, ২০১৮ সালে প্রায় দেড়শ কোটি টাকা ব্যয়ে কুশিয়ারা নদীর উপর রাণীগঞ্জ সেতুর নির্মাণ কাজ শুরু হয়। কাজ পায় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স এমএম বিল্ডার্স এন্ড ইঞ্জিনিয়ার্স লিমিটেড। সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, সেতুটি দৃষ্টি নন্দন সেতুতে রূপ নিয়েছে। এখন শুধু উদ্বোধনের অপেক্ষায়। তবে সেতুটির লাইটিং ও সৌন্দর্য্য বর্ধনের কাজ চলছে।
সূত্র জানায়, সেতুটির অ্যাপ্রোচ সড়কের কাজ পায় তমা কন্সট্রাকশন নামের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। সেতুটির অ্যাপ্রোচ সড়ক ধ্বসে গেলেও ইতোমধ্যে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ফাইনাল বিলটি উত্তোলন করে নিয়েছে বলে জানা গেছে। সেতুটি উদ্বোধনের পূর্বেই অ্যাপ্রোচ সড়কটির বিভিন্ন স্থানে ধ্বসে পড়ে। তবে ধ্বসে পড়া অ্যাপ্রোচ সড়কে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের কাউকে কাজ করতে দেখা যায়নি।
রানীগঞ্জ ইউনিয়নের বাসিন্দারা জানান, সেতুটি ছিল তাদের অনেক দিনে স্বপ্ন। কিন্তু স্বপ্নের সেতুতে নিম্নমানের কাজ হয়েছে। তাই অ্যাপ্রোচ ধ্বসে গেছে। এই সেতুটি চালু হলে ঢাকা যেতে তাদের তিন ঘন্টা সময় কম লাগবে।
রানীগঞ্জ ইউনিয়নের বাসিন্দা দোলন মিয়া বলেন, ‘ব্রিজের কাজ যেমন তেমন, সড়কের অ্যাপ্রোচের কাজ ভালো হয়নি।’
ব্রিজ দেখতে আসা ফুলেছা বেগম বলেন, ‘ব্রিজটি দেখতে অনেক সুন্দর, কিন্তু সড়ক ধ্বসে পড়ছে।’
কাজের তদারকিতে থাকা এসও মাসুম আহমদ জানান, ধ্বসে যাওয়া অ্যাপ্রোচ সড়কটি মেরামতের জন্য গত ৬ সেপ্টেম্বর তমা কনস্ট্রাকশনকে ই-মেইল পাঠানো হয়েছে। উদ্বোধনের আগেই রাস্তাটি মেরামত করা হবে। তবে নিম্নমানের কাজের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি এ বিষয়টি এড়িয়ে যান।
অ্যাপ্রোচ ধ্বসে যাওয়ার বিষয়ে সড়ক ও জনপথ, সুনামগঞ্জের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আশরাফুল ইসলাম জানান, ব্রিজের দুইপাশে ১৫০ কিলোমিটার করে আলাদা ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে কাজ দেয়া হয়েছিল। তারা প্রায় ২ বছর আগেই কাজ শেষ করে চলে যায়। আর করোনা ও বন্যাসহ বিভিন্ন কারণে ব্রিজের কাজ শেষ হতে দেরী হয়। এর মাঝেই দুই পাশের অ্যাপ্রোচ সড়কে কিছু জায়গায় ধ্বসে যায়। বিষয়টি সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে জানানো হয়েছে। সপ্তাহের মধ্যেই এটা ঠিক হয়ে যাবে।